স্কুল নিয়ে সমস্যা মিটতে চলেছে রূপনারায়ণপুর কেবল্স কারখানা এলাকায়। পড়ুয়াদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সাতটি প্রাথমিক স্কুলকে দু’টি পৃথক হাইস্কুল ভবনে তুলে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। এই প্রস্তাব দ্রুত রূপায়ণেরও প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
কারখানার শ্রমিক-কর্মী ও আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদের জন্য সংস্থার জমিতে সাতটি প্রাথমিক স্কুল তৈরি করেছিলেন কেবল্স কর্তৃপক্ষ। প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে লোয়ার কেশিয়ায় দু’টি বাংলা ও একটি হিন্দি, নিউ কলোনিতে দু’টি বাংলা এবং ওল্ড কলোনিতে একটি হিন্দি ও একটি বাংলা স্কুল চলছে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন দেয় রাজ্য সরকার। কিন্তু এত কাল স্কুল ভবনের সংস্কার থেকে যাবতীয় পরিকাঠামোর দেখভাল করে এসেছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। ৩১ জানুয়ারি কারখানার ঝাঁপ পড়ার পরে দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছে কারখানা।
সপ্তাহখানেক আগে বিদ্যুৎ ছিন্ন করে দেওয়ায় জল-আলোর সমস্যায় ভুগছে স্কুলগুলি। কয়েকশো পড়ুয়াকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। কেবল্স কর্তৃপক্ষের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানায় স্থানীয় প্রশাসন। কারখানার স্কুলসমূহের প্রশাসক উমেশ ঝা বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, দু’টি প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়কে মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ভবনে তুলে আনা হবে। একই ভাবে, পাঁচটি প্রাথমিক বালক বিদ্যালয়কে মাধ্যমিক বালক বিদ্যালয় ভবনে স্থানান্তর করা হবে। সকালে চলবে প্রাথমিক স্কুল, দুপুরে মাধ্যমিক স্কুল।’’ চিত্তরঞ্জন শিক্ষাচক্রের স্কুল পরিদর্শক শ্রীকান্ত দোলুই বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত। এখন দ্রুত কার্যকর হলে ভাল হয়।’’
এরই মধ্যে কেবল্সের আওতায় থাকা দু’টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে মিলিয়ে একই ভবনে নিয়ে আসার ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে ভারী শিল্প মন্ত্রক। দফতরের প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় বলেন, ‘‘আমরা মাধ্যমিক স্কুল দু’টিকে পৃথক জায়গায় না রেখে তাদের মিশিয়ে একটি ভবনে আনতে চাইছি। তাতে পড়ুয়ারা উপকৃত হবে। স্কুল চালাতেও সুবিধা হবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। তবে বিষয়টি এখনও আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে।’’
কেবলসের আওতায় থাকা এই বালক ও একটি বালিকা বিদ্যালয় দু’টি পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অনুমোদন নিয়ে চলছে। এখনও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন দিচ্ছে ভারী শিল্প মন্ত্রক। কারখানা বন্ধের পাশাপাশি এই স্কুল দু’টিও বন্ধ করে দেওয়ার প্রস্তাব উঠেছিল। কিন্তু পড়ুয়াদের কথা ভেবে শেষ পর্যন্ত তা করা হয়নি।