Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

স্মার্ট হতে ভরসা নিউটাউনের সংস্থা

স্মার্ট সিটির দৌড়ে প্রথম দফায় দেশের ৩৩টি শহরের মধ্যে শিকে ছেঁড়েনি দুর্গাপুরের। কিন্তু সেই তালিকায় ঠাঁই করে নিয়েছে রাজ্যেরই নিউটাউন। দ্বিতীয় দফায় জায়গা করার জন্য সেই নিউটাউনের পরামর্শদাতা সংস্থার উপরেই ভরসা রাখল দুর্গাপুর। বাতিল হল পুরনো সংস্থার বরাত। বুধবার এমন সিদ্ধান্তের কথা জানালেন পুরসভার কমিশনার কস্তুরী সেনগুপ্ত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৬ ০০:৫৪
Share: Save:

স্মার্ট সিটির দৌড়ে প্রথম দফায় দেশের ৩৩টি শহরের মধ্যে শিকে ছেঁড়েনি দুর্গাপুরের। কিন্তু সেই তালিকায় ঠাঁই করে নিয়েছে রাজ্যেরই নিউটাউন। দ্বিতীয় দফায় জায়গা করার জন্য সেই নিউটাউনের পরামর্শদাতা সংস্থার উপরেই ভরসা রাখল দুর্গাপুর। বাতিল হল পুরনো সংস্থার বরাত। বুধবার এমন সিদ্ধান্তের কথা জানালেন পুরসভার কমিশনার কস্তুরী সেনগুপ্ত।

কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রক দেশের যে ১০০টি শহর ‘স্মার্ট সিটি’ হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছে, তার মধ্যে আছে দুর্গাপুরও। সে জন্য আন্তর্জাতিক মানের পরিকাঠামো, পার্কিং, জঞ্জাল সাফাই, নিকাশি, ট্রাফিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা, তথ্যপ্রযুক্তি পরিকাঠামো, ই-গভর্ন্যান্স, ই-পরিষেবা, ওয়াই-ফাই জোন গড়ে তোলার পাশাপাশি জল সরবরাহের মতো নাগরিক সমস্যার চটজলদি সমাধান, আধুনিক গণ পরিবহণ ব্যবস্থা করতে হবে। স্বাস্থ্য, শিক্ষার আধুনিক পরিকাঠামো, মহিলা ও শিশুদের সুরক্ষার জন্য নানা ব্যবস্থা, এমনকী গরিবদের জন্য সস্তায় আবাসনের ব্যবস্থাও এই প্রকল্পের অঙ্গ। পাঁচ বছরের এই প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রথম বছর ২০০ কোটি টাকা দেওয়ার কথা। পরের চার বছর বরাদ্দ ১০০ কোটি টাকা করে। রাজ্য সরকার ও পুরসভাও একই পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করবে বলে ঠিক হয়েছে। পাশাপাশি, মিলবে বেসরকারি বিনিয়োগও।

প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্ব রয়েছে পুরসভার হাতে। দায়িত্ব পুরসভার হাতে। বাসিন্দাদের আশা, শহর স্মার্ট হলে ভোলবদল হবে দুর্গাপুরের। তবে তার জন্য দরকার বর্তমান পরিকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ও পুর পরিষেবার উন্নতি। বিরোধীরাও এই বিষয়টি নিয়ে বারবার আবেদন জানিয়েছে পুরসভার তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার কাছে।

পুরসভা সূত্রে খবর, জানুয়ারি মাসে ঘোষিত প্রথম রাউন্ডে দেশের ২০টি শহরে প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। পরে ২৪ মে প্রথম রাউন্ডের অতিরিক্ত একটি তালিকা প্রকাশিত হয়। সেখানেই জায়গা করে নেয় রাজ্যের নিউটাউন-রাজারহাট। কিন্তু ঠাঁই মেলেনি দুর্গাপুরের। এরপরই পুর কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসেন বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। বাতিল করা হয় পুরনো পরামর্শদাতা সংস্থার বরাত। এখন যে সংস্থাটিকে বরাত দেওয়া হয়েছে, সেটি নিউটাউন ও প্রথম রাউন্ডে জায়গা করে নেওয়া আরও একটি শহরে কাজ করেছে বলে পুর-কর্তৃপক্ষ জানান।

তবে শহরবাসীর একাংশের প্রশ্ন, সংস্থার বরাত-বদলে কি বড্ড দেরি হয়ে গেল? দেরি হওয়ার কথা স্বীকার করেই শহরের মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তা হয়তো হল। তবে নতুন সংস্থার কাজ নিয়ে আমরা আশাবাদী।’’ সংস্থার বরাত বদলের পাশাপাশি দুর্গাপুরে ‘স্মার্ট সিটি’ প্রতিযোগিতার উপযোগী করে তুলতে বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হবে বলে দাবি পুরসভার। যেমন? পুরসভার যাবতীয় কাজ অনলাইনের মাধ্যমে করা, সবার কাছে স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিতে দ্য মিশন হাসপিটালের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে পুরসভার সমস্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টেলি মেডিসিনের ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া নিকাশি ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ, বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র চালু, ডিজিট্যাল জল সরবরাহ, ভগৎ সিংহ স্টেডিয়ামের সংস্কার ও সম্প্রসারণ-সহ বেশ কিছু উদ্যোগ করা হয়েছে বলে পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে।

প্রাথমিক ভাবে, পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের গোটা এলাকা এবং ৮, ৯, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বেশকিছু এলাকায় এই সমস্ত আধুনিকীকরণ ও পরিকাঠামোর খলনলচে বদলে ফেলার কাজ শুরু হবে। কস্তুরীদেবীর দাবি, ধাপে ধাপে বদলে ফেলা গোটা শহরটাই। পুর কর্তৃপক্ষের আশা, ৩০ জুন দ্বিতীয় দফায় প্রস্তাব পাঠানোর চূড়ান্ত দিনের আগেই দেখা যাবে নতুন চেহারার দুর্গাপুরকে।

শহরবাসীরাও পরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবয়ান চাক্ষুষ করতে চাইছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE