বাঁ দিকে, ঘটনার পরে রাস্তায় বসে গুলিবিদ্ধ টোটো চালক। ডান দিকে, এলাকায় ভিড়। নিজস্ব চিত্র
প্রায় ৪৭ বছর আগে থানার কাছে এক ব্যবসায়ীকে বন্দুক দেখিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা ছিনতাই হয়েছিল। শুক্রবার দুপুরে আবার সে রকম স্মৃতি ফিরে এল, দাবি বর্ধমানের প্রবীণ বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের। এ দিন থানার অদূরে এক স্বর্ণ-ঋণ সংস্থায় লুটপাট চালায় এক দল দুষ্কৃতী। পালানোর সময়ে বাধা পেয়ে গুলিও ছোড়ে বলে অভিযোগ। আহত হয়েছেন এক টোটো চালক। ঘটনার খানিক পরে এলাকার দোকানপাটে ঝাঁপ পড়ে যায়। ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন নিরাপত্তা নিয়ে।
যদিও জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ের আশ্বাস, ‘‘দুষ্কৃতীদের খুব দ্রুত ধরা হবে।’’ এ দিন খবর পেয়ে প্রথমে বর্ধমান থানার আইসি পিন্টু সাহা, তার পরে ডিএসপি (সদর) শৌভিক পাত্র ঘটনাস্থলে পৌঁছন। প্রত্যক্ষদর্শী, ব্যাঙ্কের কর্মী-আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। তারই মধ্যে পৌঁছন পুলিশ সুপার। তিনিও ওই সংস্থার কর্মীদের সবার সঙ্গে কথা বলেন।
ঘটনার প্রায় দেড় ঘণ্টা পরেও কার্যত কাঁপছিলেন ওই সংস্থা লাগোয়া একটি প্রেসের কর্মী তারক বসু। সত্তোরর্ধ্ব বৃদ্ধের দাবি, ‘‘চল্লিশ বছর ধরে এখানে আছি। এ রকম কোনও দিন দেখিনি। আতঙ্ক হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, দুষ্কৃতীরা পালানোর সময়ে তিনি কাছেই ছিলেন। এক দুষ্কৃতীকে প্রায় ধরেও ফেলেছিলেন। গুলি ছোড়ার শব্দে একটু ইতস্তত করতে ওই দুষ্কৃতী হাত ফস্কে পালিয়ে যায়। স্থানীয় একটি দোকানের কর্ণধার উত্তমকুমার রায়ের প্রশ্ন, ‘‘দিনের আলোয় এমন হলে রাতে কী হবে?’’
ঘটনাস্থলের কিছু দূরে সোনাপট্টি। সেখানকার একটি ইউনিয়নের নেতা স্বরূপ কোনারের দাবি, ‘‘গত পাঁচ বছর ধরে ক্রমাগত বর্ধমান শহরে সোনার দোকানে লুট হচ্ছে। একটি বড় সংস্থায় দিনদুপরে প্রায় ১৫ কোটি টাকার সোনা লুট হলে, আমাদের ভয় তো করবেই।’’ সাইন শেখ, সৈয়দ সাহাবুদ্দিনদের অভিযোগ, ‘‘জনা তিনেক যুবক চোখের সামনে পিস্তল উঁচিয়ে চলে গেল!’’
এলাকার কয়েকজন প্রবীণের দাবি, ১৯৭৩ সালে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ছিনতাই হয়েছিল এ দিনের ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে জেলা কংগ্রেসের সদর দফতরের কাছে। ওই ব্যবসায়ীর প্রায় পাঁচ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা খোয়া গিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু সকলেই জানাচ্ছেন, এ ভাবে একটি অফিসে ঢুকে লুট করার পরে গুলি চালিয়ে পালানোর ঘটনা আগে ঘটেনি। ওই স্বর্ণ-ঋণ সংস্থার কর্মীদের দাবি, প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে লুটপাট চালায় দুষ্কৃতীরা। এক কর্মীর দাবি, ‘‘এ ধরনের সংস্থায় ভিড় কমই থাকে। এখন দুপুরে আরও কম লোক আসছে। সেই সুযোগই দুষ্কৃতীরা কাজে লাগিয়েছে। আমাদের এক আধিকারিক পকেট থেকে ফোন বার করায় পিস্তলের বাঁট দিয়ে তাঁর মুখে মেরেছে। তাতে আমরা সবাই ভয়ে সিঁটিয়ে গিয়েছিলাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy