Advertisement
১৭ মে ২০২৪
TMC internal conflict

তৃণমূলের দফতরেই হেনস্থা ব্লক সভাপতিকে, অভিযোগের তির পঞ্চায়েত সদস্যের দিকে!

আউশগ্রাম-২ ব্লকে শাসকদলের দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই সংঘাত চলে আসছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকেই এই সংঘাত প্রকাশ্যে এসেছে।

An image of threat

হেনস্থার শিকার হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৩ ২৩:২১
Share: Save:

দলীয় কার্যালয়ের ভিতরেই হেনস্থার শিকার হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি। অভিযোগ, দলের কর্মীদের একাংশই তাঁকে ঘিরে ধরে গালিগালাজের পাশাপাশি পানীয়ের বোতল উঁচিয়ে মারতে উদ্যত হন। পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রাম-২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি রামকৃষ্ণ ঘোষকে দলীয় কার্যালয়ের ভিতর আটকে রেখে হেনস্থা করার একটি ভিডিয়ো সামাজিক মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে। যা নিয়ে জেলার রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তবে ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।

স্থানীয় সূত্রের খবর, রবিবার সন্ধ্যায় আউশগ্রাম-২ নম্বর ব্লকের কোটা পঞ্চায়েতের রঘুনাথপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। উল্লেখ্য, রঘুনাথপুর গ্রামেই বাড়ি তৃণমূল নেতা রামকৃষ্ণের। নিজের গ্রামেই নিজের দলের কর্মীদের হাতে দলীয় কার্যালয়ের ভিতরে শাসকদলের নেতার এ ভাবে হেনস্থা হওয়ার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। দলের কর্মীদের হাতেই নিগ্রহের কথা স্বীকার করেছেন রামকৃষ্ণও। তিনি বলেন, ‘‘আমাকে হেনস্তা করার কারণ কী, আমি বলতে পারব না। আমি সমস্ত ঘটনা দলের জেলা নেতৃত্বের কাছে লিখিত ভাবে জানিয়েছি। তবে যারা এমন করেছে ওরা সকলে নব্য তৃণমূল। আগে কেউ বিজেপি, কেউ সিপিএম করত।’’ সেই সঙ্গে রামকৃষ্ণ স্বীকার করেছেন দলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দের জেরেই তাকে এ ভাবে হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে।

প্রসঙ্গত, আউশগ্রাম-২ ব্লকে শাসকদলের দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই সংঘাত চলে আসছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকেই এই সংঘাত প্রকাশ্যে এসেছে। টিকিট বন্টন নিয়েও দুই গোষ্ঠীর মধ্যে প্রকাশ্যে চাপানউতোর আগেও দেখা গিয়েছিল। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার বিকেলে রঘুনাথপুর গ্রামে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ের মধ্যে দু’পক্ষের তুমুল গণ্ডগোল শুরু হয়। এক পক্ষের লোকজন রামকৃষ্ণ ঘোষকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আসেন দলীয় কার্যালয়ে। তার পর তাকে কার্যত আটকে রেখে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিভিন্ন প্রসঙ্গে অভিযোগ তুলে রামকৃষ্ণকে নিগ্রহ করা হয়। আবার হাতের কাছে থাকা জলের বোতল উঁচিয়ে কয়েক জন মারতে যান ব্লক তৃণমূল সভাপতিকে। আর কয়েক জন এই ঘটনার কিছু অংশ কেউ মোবাইল ক্যামেরায় ‘বন্দি’ করে রাখেন। তারপর রবিবার গভীর রাতেই তা সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।

যখন রামকৃষ্ণকে নিগ্রহ করা হচ্ছিল তখন দেখা যায় দলীয় কার্যালয়ের চেয়ারে এক দিকে বসে রয়েছেন পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের সদ্য নির্বাচিত প্রার্থী শেখ সাবির হোসেন। মূলত তারই নেতৃত্বে রামকৃষ্ণের কাছে দলীয় কর্মীদের একাংশ জবাবদিহি চান বলে অভিযোগ। সাবির অবশ্য বলেন, ‘‘কোনও এক দিনের বিছিন্ন ঘটনা থেকে এটা ঘটেছে তা নয়, রঘুনাথপুর গ্রামের আমাদের বেশ কিছু কর্মীর দীর্ঘদিন ধরেই রামকৃষ্ণ ঘোষের উপর বিভিন্ন কারণে ক্ষোভ ছিল। যেমন পুরানো একটি বাড়ি ভাঙচুরের মামলায় কয়েকজন কর্মীর সাজা হয়ে যেতে পারে। ওই ভাঙচুরের ঘটনায় ইন্ধন ছিল রামকৃষ্ণের। কিন্তু আদালতে মামলার সময় রামকৃষ্ণ তাঁদের সাহায্য করেননি। এ ছাড়া সরকারি খাস জমি বিলি নিয়ে একাধিক অনিয়ম করেছেন তিনি। কোটায় শিল্পতালুকে স্থানীয় ছেলেরা কাজ পায়নি। এটাও ক্ষোভের একটা কারণ। সব মিলে গ্রামের লোকজন তাঁর কাছে জবাবদিহি চাইছিলেন। তা থেকেই উত্তেজনা।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে সোমবার বিকেল পর্যন্ত এ নিয়ে থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE