E-Paper

অনুব্রতের চক্রান্তে বিকাশ জেলে, দাবি সিদ্দিকুল্লার

পুলিশের নিরাপত্তায় পাঁচ বছর দু’মাস পরে বাড়িতে পা রাখেন বছর উনসত্তরের বিকাশ। স্নান সেরে স্ত্রীর ছবিতে মালা দেন। ততক্ষণে মাজিগ্রামের রায়পাড়ার চৌধুরীদের বাড়ির সামনে ভিড় জমে যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৩ ০৭:০১
An image of Bikash Narayan Chowdhury

বিকাশ চৌধুরীর সঙ্গে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। —নিজস্ব চিত্র।

দলীয় কর্মীকে খুনের ঘটনায় দীর্ঘ দিন জেল-হেফাজতে রয়েছেন মঙ্গলকোটের এক সময়ের দাপুটে তৃণমূল নেতা বিকাশনারায়ণ চৌধুরী। সদ্য প্রয়াত স্ত্রীর পারলৌকিক কাজে যোগ দিতে সোমবার প্যারোলে ঘণ্টা সাতেকের জন্য ছাড়া পান তিনি। তার সঙ্গে দেখা করতে মাজিগ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। বিকাশের জেলে যাওয়ার পিছনে দলের আর এক নেতা অনুব্রত মণ্ডলের ‘চক্রান্ত’ রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

পুলিশের নিরাপত্তায় পাঁচ বছর দু’মাস পরে এ দিন বাড়িতে পা রাখেন বছর উনসত্তরের বিকাশ। স্নান সেরে স্ত্রীর ছবিতে মালা দেন। ততক্ষণে মাজিগ্রামের রায়পাড়ার চৌধুরীদের বাড়ির সামনে ভিড় জমে যায়। দেখা করতে আসেন ওই গ্রামেরই বাসিন্দা, কংগ্রেসের কাটোয়া মহকুমাসভাপতি জগদীশ দত্ত। বিকালে আসেন সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। বেশ কিছুক্ষণ বিকাশের সঙ্গে একান্তেকথা বলেন তিনি। পরে সিদ্দিকুল্লা দাবি করেন, ‘‘খুনের ঘটনায় বিকাশবাবুকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো পাকা মাথা এখন তিহার জেলে বন্দি।’’ মন্ত্রীর মন্তব্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। মঙ্গলকোটের বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরীর না আসা নিয়েও কটাক্ষ করেন তিনি। অপূর্ব বলেন, ‘‘বিকাশদার আসারকথা আমি জানতাম না। শোকার্ত বাড়িতে দেখা করতে এসে রাজনীতি করা ব্যক্তি সম্পর্কে কিছু না বলাই ভাল। বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমেবিকাশদা দ্রুত মুক্তি পান, এইকামনা করি।’’

এ দিন বিকাশ নিজেও চক্রান্তের অভিযোগ করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শ মাথায় নিয়ে মঙ্গলকোটে তৃণমূলকে শক্তিশালী করার পরেও কর্মী খুনে চক্রান্ত করে তাঁকে জেলে ঢোকানো হয়েছেবলে দাবি করেন। বিকাশের অভিযোগ, ‘‘বাম জমানায় দলীয় কর্মী খুনের প্রতিবাদ চাইতে গিয়ে মঙ্গলকোট থানার সামনে পুলিশ মেরে আমার হাত ভেঙে দিয়েছিল। ভাবতে কষ্ট লাগে নিজের হাতে তৈরি করা কর্মী খুনে আমাকে চক্রান্ত করেজেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হল।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘দীর্ঘ দিন বিনা কারণে জেলে থাকায় আমার স্ত্রী মানসিক ও শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে মারা যান। মৃত্যুর দু’দিন পরে কাটোয়া আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে ঘটনার কথা জানতে পারি। আমার পাঁচ বছর কেউ ফিরিয়ে দিতে পারবে?’’

২০১৭ সালে শিমুলিয়া অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি ডালিম শেখকে দুষ্কৃতীরা গুলি করে খুন করে। তাতে নাম জড়ায় তৎকালীন জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা জেলা পরিষদের সদস্য বিকাশনারায়ণ চৌধুরী, সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর ভাই রহমতুল্লা চৌধুরী-সহ ২৫ জনের। ঘটনার এক বছর পর বিকাশ গ্রেফতার হন। তবে রহমতুল্লা-সহ অভিযুক্ত তিন জন গ্রেফতার হয়নি।

এ দিন সিদ্দিকুল্লা বলেন, “মঙ্গলকোটে দলের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন বিকাশবাবু। আমি মন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও জেলা তাঁর সঙ্গে পাঁচ বার দেখা করতে গিয়েছি। তাঁর স্ত্রী মারা যাওয়ায় সমবেদনা জানাতে এসেছি। আমি ক্যাবিনেটেও মুখ্যমন্ত্রীকেবলেছি দলের ভাল সম্পদকে খুব তাড়াতাড়ি ছাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে। উনি খুন করতে পারে না। আমার ভাইকেও ফাঁসানো হয়েছে। চক্রান্তকারী বড় মাথা অনুব্রত মণ্ডল পুলিশের উপর মহলকে কাজে লাগিয়ে জেলে ঢুকিয়েছে।’’ বর্তমান বিধায়কের না আসাটা সৌজন্যের অভাব বলেও দাবি করেন তিনি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC Anubrata Mondal tmc leader arrested tmc leader

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy