Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Mantweswar

‘নিঃশব্দে’ যোগ সৈকতেরও

স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের অনেকের দাবি, রাজনীতির অভিজ্ঞতা না থাকায় দলে মানিয়ে নিতে পারেননি সৈকত।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মন্তেশ্বর শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:৩৯
Share: Save:

সম্প্রতি দলের কাজকর্মে সক্রিয় ভাবে দেখা যাচ্ছিল না তাঁকে। তবে দলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কোনও ক্ষোভ জানাতেও দেখা যায়নি। কার্যত নিঃশব্দে মেদিনীপুরে গিয়েই বিজেপিতে যোগ দিলেন মন্তেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক সৈকত পাঁজা। তার পরে তাঁর দাবি, তৃণমূলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছিল। নেতৃত্বকে জানিয়েও ফল না মেলায় এই সিদ্ধান্ত।

২০১৬ সালে ভোটে জিতে মন্তেশ্বরের বিধায়ক হন সজল পাঁজা। তবে কয়েকমাস পরে, তাঁর মৃত্যুতে ওই আসনে উপ-নির্বাচন হয়। তৃণমূল প্রার্থী করে সজলবাবুর ছেলে সৈকতকে। তিনি প্রায় ১ লক্ষ ২৭ হাজার ভোটে জেতেন। তৃণমূল সূত্রের দাবি, বিধানসভা ভোটে এর আগে জেলায় এত বড় ব্যবধানে কেউ জেতেননি। বিধায়ক হওয়ার পরে, বেশ কিছু দিন দলের নানা কর্মসূচিতে সক্রিয় ভাবে দেখা গিয়েছে তাঁকে। কিন্তু তার পরে, নানা ঘটনায় দলের অন্য গোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁর মতপার্থক্য প্রকাশ্যে আসে। তৃণমূল সূত্রের দাবি, সৈকতের সঙ্গে দলের দূরত্ব তৈরি হয়। প্রশাসনিক কাজকর্মে থাকলেও দীর্ঘদিন তিনি দলীয় নানা অনুষ্ঠানে আসছিলেন না। মাস সাতেক আগে কুসুমগ্রাম এলাকায় বিধায়কের উপরে হামলার চেষ্টা হয় বলেও অভিযোগ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রাউতগ্রাম এলাকার বাড়ি থেকে সৈকত গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যান। শনিবার বিকেলে ফোনে তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘রাজ্য নেতৃত্বকে ক্ষোভের কথা জানিয়েও লাভ হচ্ছিল না। সম্প্রতি তাঁদের টনক নড়ে। কিন্তু তখন আর আমি তাঁদের সঙ্গে বসতে চাইনি। মনস্থির করে ফেলেছিলাম। তাঁদের এড়ানোর জন্যই বৃহস্পতিবার রাতে মেদিনীপুরে চলে আসি।’’ তাঁর ক্ষোভ, ‘‘দলের নানা দায়িত্বে থাকা কেউ-কেউ কোটিপতি হয়ে গিয়েছেন। আমাকে অপবাদ দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা হয়েছে। হামলার চেষ্টা হয়েছে। দলীয় কর্মসূচিতে না গেলেও কেউ খোঁজ নেয়নি।’’

স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের অনেকের পাল্টা দাবি, রাজনীতির অভিজ্ঞতা না থাকায় দলে মানিয়ে নিতে পারেননি সৈকত। এলাকায় তৃণমূলে সৈকতের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা হিসেবে পরিচিত আহমেদ হোসেন শেখের অভিযোগ, ‘‘বিধায়ক বেশিরভাগ সময় বাইরে কাটাতেন। দলের কর্মসূচিতে ডাকা হলেও আসতেন না।’’ মন্তেশ্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি আজিজুল শেখেরও দাবি, ‘‘ওঁর অভিযোগ ভিত্তিহীন। মানুষ ওঁর পাশে ছিলেন না। তাই দলের কোনও সমস্যা নেই।’’

২০১৬-র মন্তেশ্বর বিধানসভা উপ-নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী তথা দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ পোদ্দার এ দিন দাবি করেন, ‘‘সৈকতবাবু নিজেও জানেন, তিনি আদতে এক লক্ষ ২৭ হাজার ভোটে জেতেননি। তবে তিনি বুঝতে পেরেছেন, তৃণমূল এখন ডুবন্ত নৌকা। ডুবন্ত নৌকায় কেউ থাকতে চায় না। উনিও লাফ দিয়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mantweswar TMC BJP MLA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE