Advertisement
০৫ ডিসেম্বর ২০২৩
Jamuria

Jamuria: ‘নির্জলা’ জামুড়িয়ায় নাভিশ্বাস যানজটে

এলাকার নানা প্রান্তের বাসিন্দাদের অভিযোগ, কোথাও কল থাকলেও জল পড়ে না, কোথাও আবার পাইপলাইনে জলই সরবরাহ হয় না।

জলের জন্য লাইন। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আখলপুরে। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ

জলের জন্য লাইন। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আখলপুরে। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ

নীলোৎপল রায়চৌধুরী
জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২২ ০৭:২৮
Share: Save:

আসানসোল পুরসভার, জামুড়িয়ায় ১ থেকে ১২ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে এক নম্বর বরো। নাগরিকদের একাংশের মতে, এখানে মূল সমস্যা প্রধানত তিনটি— পরিশ্রুত পানীয় জলের অনিয়মিত সরবরাহ, বেহাল স্বাস্থ্য পরিকাঠামো এবং যানজট।

এলাকার নানা প্রান্তের বাসিন্দাদের অভিযোগ, কোথাও কল থাকলেও জল পড়ে না, কোথাও আবার পাইপলাইনে জলই সরবরাহ হয় না। শ্রীপুর বাজার, বেনালি গ্রামের মতো কিছু কোথাও আবার জল সরবরাহ অত্যন্ত অনিয়মিত বলে অভিযোগ। এ দিকে, আখলপুর বাগানপাড়ার ক্রেজ়ঘর কলোনিতে জল সরবরাহের কোনও ব্যবস্থাই সে ভাবে গড়ে ওঠেনি বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে ছ’নম্বর ওয়ার্ডের গোঁসাই মাহালি, সাত নম্বর ওয়ার্ডের সোমনাথ বাউড়ি, এক নম্বর ওয়ার্ডের সুব্রত ঘোষালদের ক্ষোভ, “পুরসভা জলের ট্যাঙ্কার পাঠায়। কিন্তু এলাকার চাহিদার তুলনায় তা যথেষ্ট নয়।” জল সরবরাহের পাশাপাশি, নিকাশি, রাস্তা নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে শহরের নানা প্রান্তে।

তবে বাসিন্দাদের একাংশের মতে, জামুড়িয়া শহরের অন্যতম বড় সমস্যা, বাজার এলাকার যানজট। বিক্রেতা, ক্রেতা থেকে সাধারণ পথচারী, সকলেই জানান, এলাকায় কোনও ‘পার্কিং জ়োন’ নেই। ফলে, দিনভর এই বাজারে পণ্য তোলা-নামানো চলে রাস্তায় দাঁড়িয়েই।

‘জামুড়িয়া চেম্বার অব কমার্স’-এর উপদেষ্টা অজয় খেতান, শিক্ষক রোহন রামরজক জানিয়েছেন, একটি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং ১৮টি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে পুর-এলাকায়। তবে তাঁদের অভিযোগ, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি দুপুরে বন্ধ হয়ে যায়। ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। ফলে, স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য জামুড়িয়ার নানা প্রান্তের বাসিন্দাদের প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরের আসানসোল অথবা প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরের রানিগঞ্জের উপরে নির্ভর করতে হয়।

ঘটনাচক্রে, ২০১৫-য় নব কলেবরে আসানসোল পুরনিগম আত্মপ্রকাশ করার সময়, জামুড়িয়া তার অন্তর্ভুক্ত হয়। কিন্তু তার পরেও কেন এই নাগরিক সমস্যাগুলির সমাধান হয়নি, সে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। পুরসভার বিদায়ী বিরোধী দলনেতা, তথা এ বারেও সিপিএম প্রার্থী তাপস কবির দাবি, বাম আমলে দরবারডাঙা জলপ্রকল্প সম্প্রসারণের তোড়জোড় করা হলেও, তা বাস্তবায়িত করেনি তৃণমূল পরিচালিত সরকার। বাজারকে যানজটমুক্ত করতে সাবেক জামুড়িয়া পুরসভা বাইপাসের ধারে বেশ কিছু গুদামঘর তৈরি করে। বাইপাসের ধারে বাসস্ট্যান্ডও তৈরি করা হয়েছিল। তাপসের অভিযোগ, “কেবল রাজনৈতিক কারণে আগে তৈরি হওয়া পরিকাঠামোগুলি কাজে লাগাতে পারেনি আসানসোল পুরসভা। ফল ভুগছেন সাধারণ নাগরিকেরা।” পাশাপাশি, বিজেপি নেতা সন্তোষ সিংহের প্রশ্ন, “শুনেছিলাম, দেড় দশক আগে আখলপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে স্টেট জেনারেল হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হবে। সে কাজও বিশ বাঁও জলে। আমরা প্রচারে এ কথা বলছিও মানুষকে।”

যদিও বিরোধীদের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পুরসভার এক নম্বর বরোর বিদায়ী চেয়ারম্যান, তথা এ বারেও তৃণমূল প্রার্থী শেখ শানদার। তিনি জানান, বরো এলাকায় দৈনিক ১৬০ থেকে ১৭০ ট্যাঙ্কার জল সরবরাহ করা হয়। তাঁর দাবি, “জলপ্রকল্প সম্প্রসারণের কাজ প্রায় ৮০ শতাংশ হয়ে গিয়েছে। বাকিটা লকডাউনের জন্য করা যায়নি। তবে আবার কাজ শুরু হয়েছে। যানজটের সমস্যাটি দীর্ঘদিনের। সে সমস্যার সমাধান করতে ইতিমধ্যেই বৈঠক হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE