Advertisement
E-Paper

মিলেছে মাত্র দুই কিস্তি, তবু পড়ে বড় বরাদ্দ

পঞ্চায়েতের কর্তাদের দাবি, ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রাপ্য টাকা মিটিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ডিসেম্বর পর্যন্ত দু’টি কিস্তির বরাদ্দ এসেছে। তার পর থেকে জেলায় আর কোনও টাকা আসেনি।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২১ ০৫:৪৬
প্রতীকী  ছবি।

প্রতীকী ছবি।

আর্থিক বছর শেষ হতে চললেও পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বড় অংশের বরাদ্দ এসে পৌঁছয়নি। আবার, প্রাপ্ত টাকার বড় অংশ এখনও নানা পঞ্চায়েতের কোষাগারে পড়ে রয়েছে। ফলে, উন্নয়নমূলক কাজ ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে পূর্ব বর্ধমান জেলায়।

অর্থবর্ষের শুরুতেই কোন পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতি অর্থ কমিশনের কত টাকা পাবে, তা ঠিক করে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। টাকার একটি অংশ উন্নয়নের কাজের জন্য জেলা পরিষদও পেয়ে থাকে। বছরে চারটি কিস্তিতে এই টাকা দেওয়া হয়। এ ভাবে এক-একটি অর্থ কমিশনের টাকা পাঁচ বছর ধরে পেয়ে থাকে পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ। সে টাকায় এলাকার পরিষেবা ও বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ হয়।

২০২০ সাল থেকে শুরু হয়েছে পঞ্চদশ কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশন। প্রথম বছরেই পুরো টাকা না পাওয়ার অভিযোগ তুলছে বিভিন্ন পঞ্চায়েত। উল্টো ছবিও রয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি অর্খবর্ষে কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনের দু’কিস্তির টাকা পেয়েছে পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ। পূর্ব বর্ধমান জেলা দু’টি কিস্তিতে প্রায় ১৪০ কোটি টাকা এসেছে। এর মধ্যে ২১৫টি পঞ্চায়েতের কোষাগারে ঢুকেছে প্রায় সাড়ে ৯৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে মার্চের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত খরচের খাতায় উঠেছে প্রায় ১১ কোটি টাকা। জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতিগুলি এখনও সে টাকা খরচ করা শুরুই করতে পারেনি বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।

পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি বা জেলা পরিষদের কর্তাদের দাবি, নিয়ম অনুযায়ী, ‘ই-গ্রাম স্বরাজ’ নামে একটি পোর্টাল বা মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে বরাদ্দ খরচ করতে হবে। সে জন্য ‘ই-সিগনেচার’ বা ডিজিটাল সই বাধ্যতামূলক। তার জন্য রাজ্য, জেলা ও ব্লক থেকে অনুমোদন নিতে হবে। তার পরে, টাকা খরচ করার অধিকার পাবে পঞ্চায়েতগুলি। জেলায় এখনও বেশিরভাগ পঞ্চায়েত সে অনুমোদনই জোগাড় করতে পারেনি। তাই প্রায় ৯০ শতাংশ বরাদ্দের কাজের দরপত্র ডাকা বা প্রায় ৭৬ শতাংশের বরাত দেওয়া হয়ে গেলেও, খরচের খাতায় টাকার পরিমাণ কম দেখাচ্ছে— দাবি কর্তাদের।

২৪ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসনের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্ধমান ১ ব্লকের বাঘার ১, পূর্বস্থলীর নসরৎপুর কয়েক লক্ষ টাকা পেলেও এখনও দরপত্র ডাকতে পারেনি। তেমনই আউশগ্রামের গুসকরা পঞ্চায়েত, বর্ধমান ১ ব্লকের বাঘারের দু’টি পঞ্চায়েত, বর্ধমান ২ ব্লকের বৈকুণ্ঠপুরের দু’টি, বড়শুলের দু’টি, গলসির গোহগ্রাম, কুরকুবা, আউশগ্রাম ২ ব্লকের ভেদিয়া, ভাতারের বামুনাড়া, এরুয়ার, মাহাচান্দা, গলসি ২ ব্লকের ভুরি পঞ্চায়েতের বরাদ্দ খরচ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে রিপোর্টে। কালনা ১ ব্লকের সুলতানপুর, কালনা ২ ব্লকের অকালপৌষ, আনুখাল, পূর্বস্থলী ১ ব্লকের নাদনঘাট, জাহান্নগর, পূর্বস্থলী ২ ব্লকের ঝাউডাঙা ও মেড়তলা, কাটোয়া ২ ব্লকের অগ্রদ্বীপ, সিঙ্গি, মঙ্গলকোটের ক্ষীরগ্রামেও কাজের গতি নেই বলে জানানো হয়েছে।

পঞ্চায়েতের কর্তাদের দাবি, ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রাপ্য টাকা মিটিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ডিসেম্বর পর্যন্ত দু’টি কিস্তির বরাদ্দ এসেছে। তার পর থেকে জেলায় আর কোনও টাকা আসেনি। দফতর সূত্রে জানা যায়, অর্থ কমিশনের ৫০% টাকা পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে খরচ বাধ্যতামূলক। টাকা না আসায় কাজ ব্যাহত হচ্ছে বলে বিভিন্ন পঞ্চায়েতের কর্তাদের দাবি। জেলা প্রশাসন সূত্রের আবার দাবি, ভোট ঘোষণা হওয়ার ফলে, আগামী কয়েকমাস নতুন করে কাজের বরাত দেওয়া বন্ধ থাকবে। তার পরে, বর্ষা শুরু হলে তখনও কাজ এক প্রকার করা যাবে না। ফলে, ফের কাজ শুরু হতে বেশ কয়েকটা মাস গড়িয়ে যাবে।

Planning Commission
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy