কমলকুমার মজুমদার।
একটি কি দুটি নয়। বেপাত্তা গোটা চল্লিশ ছবি। লেখক ও শিল্পী কমলকুমার মজুমদারের জন্ম শতবর্ষে তাই তাঁর আঁকা ওই ছবির খোঁজ পেতে এক সদস্যের কমিটি তৈরি করল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়।
সত্তরের দশকের গোড়ায় বর্ধমানের ইছলাবাজারে থাকতেন কমলকুমারের বন্ধু, কবি তথা কলেজ শিক্ষক সুব্রত চক্রবর্তী। সুব্রতবাবুকে কমলকুমার নিজের আঁকা প্রায় ৬০-৭০টি ছবি উপহার দেন। কমলকুমারকে বিশিষ্টজনের লেখা চিঠিপত্রও ছিল সুব্রতবাবুর বাড়িতে। ১৯৮০ সালে সুব্রতবাবুর মৃত্যুর পর সেগুলো কার্যত অনাদরে পড়ে ছিল। বর্ধমানের ‘আলোবাতাস’ পত্রিকার কর্মীরা সেই সংগ্রহ থেকে কমলকুমারের আঁকা ৪০টি ছবি নিয়ে ২০০৩ সালে বর্ধমানের কৃষ্ণসায়রের সৃজনী আর্ট গ্যালারিতে প্রদর্শনীর আয়োজন করেন। ২০০৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অমিত মল্লিকের প্রতিনিধি হিসেবে সুব্রতবাবুর স্ত্রী মালাদেবীর থেকে দান হিসেবে ছবিগুলি গ্রহণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স অফিসার তারককুমার সরকার।
কথা ছিল এই ছবিগুলি সংরক্ষণ করে সর্বসাধারণের জন্য প্রদর্শন করা হবে। কিন্তু কিছুদিন পরে সেই ছবিগুলির হদিশ হারিয়ে ফেলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তারা। বর্তমান উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার কমলকুমারের শতবর্ষে ওই ছবিগুলির খোঁজে অনুসন্ধান কমিটি তৈরি করেছেন। কমিটিতে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজিয়ামের কিউরেটর রঙ্গনকান্তি জানা। রঙ্গনবাবু বলেন, “ছবিগুলির খোঁজ পাওয়ার বিষয়ে আমি আশাবাদী। সম্ভবত উপাচার্যের দফতরে বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে ছবিগুলি রয়েছে।”
সাত বছর ধরে ছবিগুলি অসংরক্ষিত পড়ে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেফাজতে। তারকবাবু ও অমিতবাবুর অবসরের পরে এক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের কর্তারা বলতে শুরু করেন, ছবিগুলির ব্যাপারে তাঁদের কিছু জানা নেই। অনেকের দাবি, ছবি যে বিশ্ববিদ্যালয়কে দেওয়া হয়েছিল, তাই তাঁরা জানেন না। কিন্তু সম্প্রতি ‘আলো-বাতাস’ পত্রিকার তরফে স্মৃতিকুমারবাবুর কাছে ছবি বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদপত্রের খবর ও অন্যান্য নথিপত্র পেশ করে দাবি জানানো হয়, শতবর্ষে ওই ছবিগুলিকে খুঁজে বের করার দায়িত্ব নিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়কে। উপাচার্য বলেন, “ছবি যে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়েছিল, নথিপত্রে তার স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। দরকার হলে প্রাক্তন উপাচার্য, ফিনান্স অফিসার সহ সকলের সঙ্গে কথা বলে সেগুলি কোথায় খুঁজতে হবে।”
অনুসন্ধাকারী রঙ্গনবাবু বলেন, “প্রাক্তন উপাচার্য অমিতবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। তারকবাবু ও প্রাক্তন উপাচার্যের সচিব তপন চৌধুরী-সহ সে সময়ে কর্মরত অনেকের সঙ্গেই আমার কথা হয়েছে। তাঁরা ছবিগুলি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিল তার কথা স্বীকারও করেছেন।”
সন্ধান পেয়ে ওই ছবিগুলি কবে ফের প্রদর্শিত হবে, আগ্রহী রাজ্যের শিল্পমহল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy