সমস্যা বাড়ায় রাস্তা জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকা রিকশাও। নিজস্ব চিত্র।
যানজট বাড়ছে শহরে। তাই পুরসভা অনুমোদিত ব্যাটারি চালিত রিকশাকে বিশেষ চিহ্ন অথবা নম্বর প্লেট দিয়ে আলাদা করা হবে। তার পরে অনুমতিহীন ব্যাটারি চালিত রিকশা অর্থাৎ টোটোগুলিকে নিষিদ্ধ করবে বর্ধমান পুরসভা। একই সঙ্গে মিনিবাসগুলিকেও সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছনোর বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হবে। সম্প্রতি একটি বৈঠকে এই সিদ্ধান্তই নিয়েছে বর্ধমান পুরসভা। বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদের ভবনে হওয়া ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পুরসভা, পরিবহণ দফতর, পুলিশ ও পর্ষদের কর্তারা।
বর্ধমান পুরসভার সচিব জয়রঞ্জন সেন বলেন, “পুরসভা অনুমোদিত ৭৫টি ব্যাটারি চালিত রিকশা রয়েছে। অনুমতিপ্রাপ্ত রিকশাগুলিতে চিহ্নিত করে নম্বর প্লেট বা বিশেষ কোনও চিহ্ন দেওয়া হবে। যাতে যে কেউ বুঝতে পারেন সেগুলি পুরসভা অনুমোদিত ব্যাটারি চালিত রিকশাা। একই সঙ্গে মিনিবাসের ক্ষেত্রেও যাতায়াতের সময় নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে।”
স্থানীয় ভাবে এই রিক্সাগুলি টোটো নামে পরিচিত। মাস কয়েক আগে পুরসভা এই গাড়িগুলিকে শহরের রাস্তার চলার অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু সেগুলি ছাড়াও বেশ কিছু অনুমতিহীন টোটো বর্ধমান শহরে চলছে। পুরসভার নিষেধ অমান্য করে যদি সেই টোটোগুলি যাতাযাত করে তাহলে ১৫ ডিসেম্বর থেকে পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদের সিইও শুভেন্দু বসু জানান, তবে অনুমতিপ্রাপ্ত টোটো গাড়িগুলিকেও জিটি রোড ধরে যাতায়াত করতে দেওয়া হবে না। তারা শুধু জিটি রোড টপকাতে পারবে।
বর্ধমান শহরে যানজট কমাতে জিটিরোড দিয়ে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরেও শহরে যানজট কমার কোনও চিহ্নই নেই। বর্ধমান পুরসভা সূত্রে খবর, বর্তমানে শহরে বর্তমানে ১৩২টি মিনিবাস ও ১৫০টির বেশি অনুমতিহীন টোটোগাড়ি চলাচল করে। বর্ধমানের এসডিপিও অম্লানকুৃসুম ঘোষের দাবি, এদের গতিহীনতার জন্যই শহরে যানজট তৈরি হচ্ছে। তাই টোটোর সঙ্গেই মিনিবাসগুলিকেও সতর্ক করেছে প্রশাসন। পুরসভার এক কর্তা জানান, সারা দিনের মধ্যে সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে বর্ধমানের বীরহাটা থেকে বর্ধমান স্টেশনের মধ্যে একটি মিনিবাসকে ১৪বার যাতায়াত করতেই হবে। মিনিবাসগুলি এই নির্দেশ মানছে কি না নজর রাখতে বীরহাটা ও বর্ধমান স্টেশনে ‘টাইম কিপিং ব্যবস্থা’ রাখা হবে। এই বিষয়টিও ১৫ ডিসেম্বর থেকে চালু হবে। বর্ধমান মিনিবাস ওয়েলফেয়ার অ্যাসেসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক রাধাশ্যাম ঘোষাল বলেন, “আমাদের বলা হয়েছে বীরহাট থেকে বর্ধমান স্টেশন মাত্র ২০ মিনিটে পারাপার করতে হবে।” তাঁর দাবি, জিটি রোডের উপর যে যানজট তৈরি হচ্ছে তার জন্য দায়ী রিকশা ও টোটো গাড়ির দাপাদাপি। যদিও শহরের টোটো ও রিক্সা চালকেরা যানজটের জন্য মিনিবাসগুলিকেই পাল্টা দোষারোপ করেছেন। অন্য দিকে জিটি রোডে যানজট কমানোর জন্য বড়শূল রুটের বাসগুলির শহরে ঢোকা বন্ধ করার কথাও চিন্তাভাবনা করছে প্রশাসন। এর সঙ্গেই রিকশার দাপট কমাতেও উদ্যোগী হয়েছে পুরসভা। যদিও অতীতেও এই চেষ্টা করে ব্যর্থতা ছাড়া কিছুই মেলেনি। এ বার কী হবে সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন শহরবাসী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy