রাজ্য বিজেপির নতুন সভাপতি হিসাবে তিনি যে তাঁর দল প্রায় তৈরি করে ফেলেছেন, তা দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়ে গেলেন শমীক ভট্টাচার্য। সাত দিনের মধ্যে ফের দিল্লি আসার কথা রয়েছে শমীকের। সূত্রের মতে, সে সময়ে আরএসএস ও দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের পরেই চূড়ান্ত রাজ্য কমিটি ঘোষণা করা হবে।
প্রায় চার মাস হয়ে গিয়েছে রাজ্য সভাপতি হয়েছেন শমীক। কিন্তু এত দিনেও নিজের কমিটি গড়ে তুলতে না পারায় দলের মধ্যেই প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে ছয় মাসের মধ্যে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তাই দ্রুত নতুন কমিটি ঘোষণা না হলে সেই কমিটি কাজ করার যথেষ্ট সময় পাবে না বলেও জল্পনা রয়েছে দলের মধ্যে। বিহারে ভোটের আবহে তিনি যে তাঁর দল মোটামুটি বেছে নিয়েছেন, সেই বার্তা দু’দিনের দিল্লি সফরে এসে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়ে গেলেন শমীক। আজ সকালে দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক তথা সাধারণ সম্পাদক সুনীল বনসলের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। সূত্রের মতে, বৈঠকে রাজ্য কমিটি গঠনের চূড়ান্ত খুঁটিনাটি নিয়ে বনসলের সঙ্গে আলোচনা হয়। যদিও সরকারি ভাবে ওই বৈঠককে সৌজন্য সাক্ষাৎকার বলেই দাবি শমীকের।
নতুন রাজ্য কমিটিতে কারা থাকছেন আর কারা বাদ যাচ্ছেন, তা নিয়ে শমীক আজ দিল্লিতে মুখ খুলতে চাননি। তিনি কেবল বলেন, ‘‘যাঁরা দলের প্রতি আন্তরিক, যাঁদের আনুগত্য প্রশ্নাতীত, তাঁরাই স্থান পেতে চলেছেন।’’ শমীক নিজে দলের আদি কর্মীদের একজন। ফলে তাঁর নেতৃত্বাধীন কমিটিতে কি মূলত আদিদের স্থান হতে চলেছে? জবাবে শমীক জানান, ‘‘কমিটিতে স্থান পাওয়ার ক্ষেত্রে একজন কর্মীর সক্রিয়তাই একমাত্র বিবেচ্য বিষয়হতে চলেছে।’’
নতুন সভাপতির নেতৃত্বাধীন দল আগের সভাপতির দলকে একেবারে ব্রাত্য করে দিক—এমনটা চান না বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সূত্রের মতে, সেই বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে শমীককে। দলের রাজ্য কমিটিতে যে প্রায় ২২০-র কাছাকাছি সদস্য স্থান পেতে চলেছেন, তার মধ্যে অন্তত ৫০-৬০% পুরনো কর্মীদের রাখার উপরে জোর দিয়েছে দল। বিজেপির এক কেন্দ্রীয় নেতার কথায়, ‘‘নতুন রাজ্য সভাপতি মানে নতুন দল, এমন নয়। যারা এত দিন ধরে সক্রিয় ছিল, তাদের অবদান এক ঝটকায় খারিজ করা কাম্য নয়। তাই পুরনো ও নতুনের মিশেলে রাজ্য কমিটি বানানোর উপরে জোর দেওয়া হয়েছে।’’
সূত্রের মতে, শমীক যে কমিটি বানিয়েছেন, তাতে সেই কারণে পূর্বসূরি সুকান্ত মজুমদার এবং দিলীপ ঘোষের সময়কার বেশ কিছু সদস্যও স্থান পেতে চলেছেন। সূত্রের দাবি, রাহুল সিন্হা বিজেপি সভাপতি থাকাকালীন যাঁরা কমিটি সদস্য ছিলেন, তাঁদেরও কয়েক জন নতুন দলে জায়গা পেতে পেয়েছেন। পুরনো কর্মীদের পাশাপাশি রাঢ়বঙ্গ, উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের প্রতিনিধিত্ব যাতে সমান ভাবে থাকে, সেই বিষয়টিও কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে মাথায় রেখেছেন শমীকেরা। বাড়ানো হচ্ছে মহিলা প্রতিনিধির সংখ্যা। এ ছাড়া কিছু পুরনো কর্মী, যারা বিভিন্ন কারণে দলের উপরে ক্ষুব্ধ হয়ে বসে গিয়েছিলেন, তাঁদের ফিরিয়ে আনায় জোর দেওয়া হয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)