Advertisement
E-Paper

দেহ রেখে বিক্ষোভ বুথে

প্রচারের শেষ দিনে মারধরে জখম হয়েছিলেন মনু হাঁসদা। রবিবার কটকের হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত্যুর পরই নিহত কোন দলের সমর্থক, তা নিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক চাপানউতোর।

বিশ্বসিন্ধু দে

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৮ ০০:৪৬
কেশিয়াড়ির বারিদা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথের সামনে বিজেপি কর্মীর মৃতদেহ রেখে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

কেশিয়াড়ির বারিদা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথের সামনে বিজেপি কর্মীর মৃতদেহ রেখে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

সকাল ৭টা। কিছুক্ষণের মধ্যে শুরু হবে ভোট। কেশিয়াড়ির বারিদা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এসে ভোটাররা দেখলেন, ভোটগ্রহণকেন্দ্রের সামনে রয়েছে মৃতদেহ। সে দেহ ঘিরে রয়েছে অনেকে। হাতে লাঠিসোটা।

প্রচারের শেষ দিনে মারধরে জখম হয়েছিলেন মনু হাঁসদা। রবিবার কটকের হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত্যুর পরই নিহত কোন দলের সমর্থক, তা নিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক চাপানউতোর। এর জের গ়ড়াল সোমবারও। এ দিন ভোটগ্রহণকেন্দ্রের সামনে মনুর দেহ রেখে বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। সঙ্গে ছিলেন নিহতের পরিবারের সদস্যেরা। বিক্ষোভের জেরে প্রথমে শুরুই হয়নি ভোট। প্রায় একঘণ্টা পর পুলিশের হস্তক্ষেপে শুরু হয় ভোটগ্রহণ। দুপুর ১২টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণকেন্দ্রের বাইরেই পড়েছিল দেহ। ওই অবস্থাতেই নিহতের পরিবারের সদস্যেরা গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করলেন। তারপর দেহ নিয়ে গেলেন অন্তেষ্টির উদ্দেশ্যে।

ভোটগ্রহণকেন্দ্রের সামনে মৃতদেহ। বিজেপির বিরুদ্ধে দেহ নিয়ে রাজনীতির অভিযোগ করেছে তৃণমূল। কেশিয়াড়ি ব্লক তৃণমূলের সভাপতি জগদীশ দাস বলেন, ‘‘মৃতদেহ না পুড়িয়ে নাটক করছে বিজেপি। ভয়ের সঞ্চার করে ভোট বন্ধ করে দেয় কিছুক্ষণ। আমরা পুলিশে জানিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছিলাম।’’ বিজেপির উত্তর মণ্ডলের সভাপতি জগন্নাথ বসু কথায়, ‘‘প্রতিহিংসার রাজনীতি আমরা করি না। দেহ নিয়ে রাজনীতিও করি না। স্থানীয় আদিবাসীরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বলি হওয়া মনুকে নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। তবে ভোট বন্ধ থাকার কোনও ঘটনা ঘটেনি।’’ বারিদা গ্রামের বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব বাণেশ্বর মাইতি অবশ্য বলেন, ‘‘এসে দেখি ভোটকেন্দ্রের সামনে দেহ। প্রায় একঘণ্টা পর ভোট দিতে পেরেছি।’’

বারিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রার্থী সুলোচনা মাহাতো এবং তাঁর স্বামী এ দিন ভোট শুরুর কিছুটা আগেই হাজির হয়েছিলেন ভোটগ্রহণকেন্দ্রে। তাঁদের অভিযোগ, তৃণমূলের কয়েকজন বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মারধর করে। অভিযোগ বসতে দেওয়া হয়নি পোলিং এজেন্টদের। গ্রামে ঘিরে এ কথা জানান সুলোচনাদেবী।

এরপরই মৃতদেহ নিয়ে বিজেপি সমর্থকেরা হাজির হন ভোটগ্রহণকেন্দ্রে। বিক্ষোভে সামিল বিজেপির মহিলা সমর্থকেরা বলেন, ‘‘অবিলম্বে মনু খুনে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে হবে। অপরাধীরা বহাল তবিয়তে ঘুরছে। তাদের ধরার দাবিতে আমাদের বিক্ষোভ।’’

নিহতের ছেলে কার্তিকও বলেন, ‘‘বাবার খুনিদের গ্রেফতারের দাবিতেই মৃতদেহ রেখে বিক্ষোভ দেখিয়েছি।’’ বিজেপির পোলিং এজেন্টকে বসতে না দেওয়া, তাদের কর্মীদের মারধরের অভিযোগ মানতে নারাজ তৃণমূল। দেহ রাজনীতি নিয়েই বারবার সরব হয়েছে তারা।

নিহতের পরিবার জানিয়েছে, রবিবার রাত ১০টা নাগাদ কটক থেকে ফেরে দেহ। রাতে বৃষ্টি হচ্ছিল। ফলে পরিবার সিদ্ধান্ত নেয় সকালে ভোট দেওয়ার পর দেহ সৎকার করা হবে। তবে সিদ্ধান্ত বদলে যায় অচিরেই। শ্মশান নয়। দেহ পৌঁছয় ভোটগ্রহণকেন্দ্রে।

West Bengal Panchayat Elections 2018 Protest Dead Body BJP TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy