সরব: সাংবাদিক বৈঠকে বিনয় তামাঙ্গ। রবিবার। —নিজস্ব চিত্র।
তিন দিন আগে বন্ধ তোলার কথা ঘোষণা করেন তিনি। কিন্তু মোর্চা সভাপতির পাল্টা হুঁশিয়ারিতে উল্টে বন্ধ হয়েছে আধ খোলা ঝাঁপ। এই অবস্থায় রবিবার মুখ খুললেন বিনয় তামাঙ্গ। সভা করে বহু গোপন তথ্য ফাঁস করার হুমকি দিলেন। অনুগামীদের দাবি, সব ঠিক থাকলে আজ, সোমবার বা কাল দার্জিলিঙের চকবাজারে, নয়তো মোটরস্ট্যান্ডে সভা করবেন বিনয়।
এ দিন দুপুরে হঠাৎই সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে বিনয় চলে আসেন চকবাজারে। পরে সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, নিউইয়র্ক-সহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় বিমল গুরুঙ্গের নামে কত জমি-বাড়ি রয়েছে, সব তথ্য তিনি ফাঁস করবেন। বিনয় আরও বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখুন আজ নবান্নে কে ফোন করেছিল? মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কে কথা বলতে চেয়েছিল?’’ সরকারি সূত্রের খবর, রবিবার ছুটির দিন হওয়ায় নবান্নে বড়কর্তারা ছিলেন না। ফলে, ফোনের সত্যতা নিয়ে কোনও তথ্য মেলেনি।
আরও পড়ুন: মোর্চার রাশ নিতে যুদ্ধ বিমল, বিনয়ের
মোর্চা সূত্রে খবর, বিনয় একসময়ে গুরুঙ্গের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ফলে তিনি সরব হওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়ায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন গুরুঙ্গ-ঘনিষ্ঠেরা।
প্রশ্ন রয়েছে উল্টো দিকেও। তিন দিন চুপ থাকার পরে রবিবার হঠাৎ বাড়ি থেকে কেন বেরোলেন বিনয়? বিনয়-ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, নবান্নের প্রথম দফার বৈঠকের পরে বিনয়ের উপরে খাপ্পা গুরুঙ্গ তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে ক্ষমতার রাশ নিজের হাতে রাখতে চান। ১২ সেপ্টেম্বরের বৈঠকে বিনয়কে আর যেতে দিতে রাজি নন গুরুঙ্গ। পরিবর্তে তিনি নিজের অনুগামীদেরই পাঠাতে চান।
কেন বৈঠকে প্রতিনিধি পাঠাতে চান গুরুঙ্গ? প্রথমত, ১২ তারিখ যদি গোর্খাল্যান্ডের দাবি নিয়ে আলোচনাই না হয়, তবে তাঁর প্রতিনিধিরা ওয়াকআউট করবেন। এতে বোঝানো যাবে, তাঁরা গোর্খাল্যান্ডের দাবি নিয়ে কতটা আন্তরিক। দ্বিতীয়ত, যদি গোর্খাল্যান্ড নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকার সিদ্ধান্ত হয়, তবে বন্ধ তোলার কথা ঘোষণা করে গুরুঙ্গ বোঝাতে পারবেন, পাহাড়ে আন্দোলনের রাশ তাঁর হাতেই। মোর্চা যে আসলে তিনিই, বিনয় নন, সেটাও স্পষ্ট হবে।
এই অবস্থায় প্রকাশ্যে না এলে তাঁর নেতৃত্ব প্রশ্নের মুখে পড়বে, বুঝেছিলেন বিনয়ও। তাই এই কাজ। সাত বছর আগে জনসভা থেকে এমন ভাবে গোপন তথ্য ফাঁসের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন গোর্খা লিগ নেতা মদন তামাঙ্গ। সভার দিন সকালে দার্জিলিঙের ক্লাবসাইড রোডে খুন হন তিনি। এ বারে যাতে এমন কিছু না ঘটে, সে জন্য তৈরি হচ্ছে পুলিশ-প্রশাসন। পাশাপাশি বিনয়ের দাবি, তাঁকে মারতে নেপাল থেকে বন্দুকবাজ আনা হয়েছে। যদিও তাতে তিনি ভয় পাচ্ছেন না। উল্টে এ দিন গুরুঙ্গকে প্রকাশ্যে আসার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন বিনয়। বলেছেন, ‘‘আর কয়েক দিন দেখব। তার পরে আমাদের ছেলেরা রাস্তায় নেমে দোকান খুলিয়ে দেবে।’’ একই সঙ্গে গুরুঙ্গের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠককে পাত্তা না দিয়ে মোর্চার চিফ কো-অর্ডিনেটর হিসেবেই দিল্লি যাওয়ার পরিকল্পনাও করছেন তিনি।
পাহাড়ের লোকজন বলছেন, এই সভাতেই বোঝা যাবে, শক্তি কত বাড়াতে পেরেছেন বিনয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy