উচ্চমাধ্যমিকে ফল প্রকাশের পরেও সরকারি কলেজগুলিতে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে পারেনি রাজ্য সরকার। সোমবার রাজভবনে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের কাছে অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর সঙ্গী হয়েছিলেন বিজেপি পরিষদীয় দলের ১৫ জন সতীর্থ। প্রায় আধ ঘন্টার বেশি সময় ধরে বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে কলেজে ভর্তি সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে কথা বলেন রাজ্যপাল। পরে তাদের আশ্বাস দেন বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকার তথা শিক্ষা দফতরের সঙ্গে কথা বলবেন।
রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে শুভেন্দু বলেন, ‘‘রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতর যা করছে, তা স্বাধীনতার পর এ রাজ্যে কখনও হয়নি। ভারতবর্ষের মতো দেশে কোনও রাজ্যে এই ধরনের শিক্ষা বিপর্যয় ঘটেছে বলে আমার জানা নেই।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘তিন মাস আগে পশ্চিমবঙ্গে উচ্চমাধ্যমিকের ফল প্রকাশিত হয়েছে। শিক্ষাকে একেবারে তুলে দেওয়া মমতা ব্যানার্জির সরকার সরকারি কলেজগুলিতে ভর্তি প্রক্রিয়া চালু করেনি। দ্বিতীয়ত জয়েন্ট এন্ট্রান্সের রেজাল্টও প্রকাশিত হয়নি। অন্য রাজ্যে উচ্চশিক্ষায় যাবতীয় ভর্তি প্রক্রিয়া এখন সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। এ রাজ্যে বেসরকারি কলেজগুলির মালিকদের এ ভাবে এক হাজার কোটি টাকার বেশি আয়ের সুযোগ করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।’’ পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, ওবিসি জটিলতা তৈরি করে একটি বিশেষ সম্প্রদায়কে সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দিতে রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুভেন্দুর দাবি, রাজ্যপাল বিষয়টি খতিয়ে দেখে তাদের বিস্তারিত জানাবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। এর পাশাপাশি শুভেন্দু একটি প্রতিবাদ কর্মসূচির ঘোষণা করেছেন। আগামী সপ্তাহে বিকাশ ভবনের সামনে এক দিনব্যাপী বিজেপি বিধায়ক ও কর্মী সমর্থকদের নিয়ে কলেজে ভর্তি বন্ধ থাকার প্রতিবাদে ধরনায় বসবেন তিনি।
আরও পড়ুন:
বিরোধী দলনেতা জানিয়েছেন, সাক্ষাৎ পর্বে রাজ্যপাল বোস তাঁর হাতে দুটি রিপোর্ট তুলে দিয়েছেন। একটি রিপোর্টে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়েছে। বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়ার জন্য এই রিপোর্টটি তৈরি হয়েছে। অন্যটিতে হরিয়ানা রাজ্যে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে একটি রিপোর্ট নন্দীগ্রাম বিধায়কের হাতে দিয়েছেন রাজ্যপাল বোস। শুভেন্দু জানিয়েছেন, ওই রিপোর্টে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, হরিয়ানা পুলিশ বাংলাভাষী মোট ১০০০ জন পরিযায়ী শ্রমিককে আটক করেছিল। যার মধ্যে ৯১৫ জন বাংলাদেশি নাগরিক। সেখানে বাংলা থেকে মাত্র ৮৫ জন পরিযায়ী শ্রমিক কাজ করছিলেন।