সাগরমেলাকে জাতীয় মেলা ঘোষণা না করা, কুম্ভমেলার মতো কেন্দ্রীয় সাহায্য না পাওয়া নিয়ে বারবার উষ্মা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গঙ্গাসাগর মেলায় এসে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার প্রশ্ন তুললেন, গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে রাজ্য কোনও সহযোগিতার চিঠি কি কেন্দ্রকে দিয়েছে? তাঁর কথায়, ‘‘ওই চিঠির প্রতিলিপি যদি রাজ্য সরকার আমাকে দেয়, তা হলে আমি নিজে পশ্চিমবঙ্গের ও মন্ত্রিসভার প্রতিনিধি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করব। এই মেলাকে কী ভাবে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের যৌথ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মেলায় পরিণত করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করব।’’ রাজনীতি করার জন্যই বিজেপি সভাপতি এমন বলছেন বলে তাঁর বক্তব্যকে আমল দিতে চাননি রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
মকর সংক্রান্তিতে সাগর-স্নান ও কপিল মুনির আশ্রমে প্রার্থনা সারতে এসে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত এ দিন দাবি করেছেন, ‘‘আমরা ক্ষমতায় এলে (রাজ্যে) গঙ্গাসাগরকে জাতীয় মেলা করব রাজ্য ও কেন্দ্রের সহযোগিতায়।’’ প্রশাসন সূত্রের খবর, জাতীয় মেলার মাপকাঠি সংক্রান্ত নির্দিষ্ট কোনও নির্দেশিকা নেই। তবে মেলাটিকে অবশ্যই সরকারি অনুমতিপ্রাপ্ত হতে হবে। রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারের যে কোনও বিভাগের অনুমোদন থাকতে হবে। মেলায় বিভিন্ন ভাষার ও বিভিন্ন রাজ্যের শিল্পী বা পর্যটকদের মেলবন্ধন হতে হবে। পরিবেশ দূষণের নিয়ম-নীতি মেনে মেলা হতে হবে। অগ্নি নিরাপত্তা, শব্দদূষণ রোধের বন্দোবস্তও থাকতে হবে। পর্যটন, সংস্কৃতি বা কোনও বিশেষ জাতির ঐতিহ্যের মতো বিষয়কে তুলে ধরলে সেই মেলাকে পর্যটন, তথ্য সংস্কৃতি বা অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতর সরকারি ভাবে ‘মান্যতা’ দেয়। সেই ‘মান্যতা’ পেলেই সরকারি অর্থ মেলার বাজেটে যুক্ত হয়।
মেলা প্রাঙ্গণে এ দিন সন্ধ্যায় রাজ্যের ক্রীড়া ও যুব কল্যাণমন্ত্রী অরূপ বলেছেন, ‘‘জাতীয় মেলা করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী একাধিক চিঠি প্রধানমন্ত্রীকে পাঠিয়েছেন। কিন্তু তিনি মৌনব্রত পালন করে চলেছেন!’’ তাঁর কটাক্ষ, ‘‘সুকান্ত ছোট মন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত পৌঁছনোর ক্ষমতা ওঁর নেই! রাজ্য সরকার চিঠি দিয়েছে কি না, জানবেন কী করে। উনি দু-তিন ঘণ্টার জন্য গঙ্গাসাগরে এসে রাজনীতি করার জন্য ভুল কথা বলছেন!’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘রাজ্যে একশো বছরেও বিজেপি ক্ষমতায় আসবে না! আমরাই এই মেলাকে জাতীয় মেলা করব।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)