Advertisement
E-Paper

সিঙ্গুরের নার্সিংহোমে রহস্যমৃত্যু: পরিবারের দাবি মেনেই কল্যাণী এমসে গেল নন্দীগ্রামের নার্সের দেহ! ময়নাতদন্ত হবে সেখানেই

দীপালির পরিবারের তরফে আগেই কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন কোনও হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করানোর দাবি জানানো হয়েছিল। সেই মতোই শনিবার সকালে ওই নার্সের দেহ কল্যাণী এমসে পৌঁছোয়।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০২৫ ১১:১৯
দীপালি জানা।

দীপালি জানা। —ফাইল চিত্র।

নন্দীগ্রামের নার্স দীপালি জানার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হল কল্যাণীর এমস হাসপাতালে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, শনিবার ওই হাসপাতালেই ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে ময়নাতদন্ত চলছে। দীপালির পরিবারের তরফে আগেই কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন কোনও হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করানোর দাবি জানানো হয়েছিল। সেই মতোই সিঙ্গুর থানার তরফে বিভিন্ন হাসপাতালের কাছে এই বিষয়ে আবেদন জানানো হয়। কল্যাণী এমসের তরফে সম্মতি মেলে। তার পরেই শনিবার সকালে ওই নার্সের দেহ কল্যাণী এমসে পৌঁছোয়। সেখানে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্ত চলছে। স্বচ্ছতার স্বার্থে গোটা প্রক্রিয়াটির ভিডিয়োগ্রাফি করা হচ্ছে।

সিঙ্গুরের নার্স দীপালির মৃত্যু হয় গত বুধবার। মৃতার বাবার অভিযোগ, ওই দিন রাত ১১টা নাগাদ নার্সিংহোম থেকে ফোন করে সেখানে যেতে বলা হয়। কেন যেতে বলা হচ্ছে, তার কারণ জানতে চাইলে জানানো হয়, দীপালি গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। এই খবর পেয়েই তাঁরা নার্সিহোমে পৌঁছোন। কিন্তু সেখানে দীপালিকে দেখতে পাননি। মৃতার বাবার আরও অভিযোগ, তাঁদের বলা হয় পুলিশ এসে দীপালির দেহ নিয়ে গিয়েছে। নার্সিংহোম আত্মহত্যার কথা বলছে ঠিকই, কিন্তু দীপালিকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলে তাঁর পরিবার। পুলিশ জানায়, এই ঘটনায় নার্সিংহোমের মালিক এবং মৃতার প্রেমিককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

দিন কয়েক আগে সিঙ্গুরের ওই নার্সিংহোমে নার্সের কাজে যোগ দিয়েছিলেন নন্দীগ্রামের বাসিন্দা দীপালি। তাঁর বাবা জানান, বেঙ্গালুরু থেকে নার্সিং পড়ে মেয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন দিন কয়েক আগে। এক বান্ধবীর সূত্র ধরে চাকরি পান সিঙ্গুরের বোড়াই তেমাথা এলাকায় ওই নার্সিংহোমে। বুধবার রাতে সেই নার্সিংহোমের একটি ঘর থেকেই পাওয়া যায় দীপালির ঝুলন্ত দেহ।

অস্বাভাবিক মৃত্যুর এই ঘটনায় গত তিন দিন ধরেই রাজনৈতিক শোরগোল শুরু হয়েছে। ময়নাতদন্ত নিয়ে প্রথম টানাপড়েন শুরু হয়। হুগলি জেলা পুলিশের তরফে ময়নাতদন্তের জন্য প্রথমে দেহ পাঠানো হয়েছিল শ্রীরামপুরের ওয়ালশ হাসপাতালে। কিন্তু ওই হাসপাতালের সুপার দেহ সেখানে ময়নাতদন্ত না-করিয়ে তা রেফার করে দেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ মর্গে। ময়নাতদন্তের জায়গা নিয়ে আপত্তি জানায় মৃতার পরিবার। জোর করে না-জানিয়েই কলকাতা পুলিশের মর্গে দেহ আনার অভিযোগ করে তারা। শুক্রবার দেহের ‘দখল’ নিয়ে সিপিএম-বিজেপি লড়াই তুঙ্গে ওঠে। কলকাতা পুলিশ মর্গের সামনে দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি পর্যন্ত হয়। এসএফআই ও সিপিএমের তরফে অভিযোগ করা হয়, বিজেপি তৃণমূলের পক্ষ থেকে এখানে এসেছে পরিবারকে ‘কিনতে’। বিজেপি পাল্টা দাবি করে যে, শুরু থেকে লড়াইটা তারাই করছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল দীপালির। কিন্তু বেশ কয়েক দিন ধরে দু’জনের মধ্যে সম্পর্কে টানাপড়েন চলছিল। পুলিশের অনুমান, নার্সের মৃত্যুর নেপথ্যে ওই যুবকের কোনও ভূমিকা থাকতে পারে। সেই কারণে তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ছাড়াও, তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে বাড়ি যাওয়ার সময় দীপালির সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছিলেন ওই নার্সিংহোমের মালিক। ফলে সেই বিষয়টি রয়েছে মৃত্যুরহস্যের তদন্তের আতশকাচের নীচে। আপাতত ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছেন তদন্তকারীরা।

Singur Kalyani AIIMS Nandigram unnatural death Postmortem
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy