বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য-সহ অন্য আইনজীবীদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানোর ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করল কলকাতা হাই কোর্ট। তিন বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হবে। এই বেঞ্চের সদস্যেরা হলেন বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ। তবে মঙ্গলবার এই বেঞ্চ বসবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান আইনজীবীরা। কারণ মঙ্গলবারই এই নতুন বেঞ্চ গঠনের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে।
কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের চেম্বারের বাইরে গত শুক্রবার বিক্ষোভ দেখান উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। হাই কোর্টের সামনে চত্বরে ১৪৪ ধারা থাকে। তাই বিক্ষোভকারীদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয় পুলিশ। তার পরেই তারা সিটি সিভিল আদালতের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন। সেখানে বিকাশের দুই জুনিয়র ফিরদৌস শামিম এবং সুদীপ্ত দাশগুপ্তের চেম্বার রয়েছে। তার নীচে অবস্থান শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। অভিযোগ, আইনজীবীদের জুতো দেখান তাঁরা।
শুক্রবার রাতে বিক্ষোভস্থলে পৌঁছোন বিকাশ। তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁর দিকে প্লাস্টিকের জলের বোতল, চায়ের ভাঁড় ধেয়ে আসে। বোতল ছুড়লে বিক্ষোভরত চাকরিপ্রার্থীদের দিকে তেড়ে যান আইনজীবী শামিম। তাঁর সঙ্গে বচসা হয় বিক্ষোভকারীদের। পুলিশ এসে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়। তার পরে নিজের সহকারীদের দফতর থেকে বার করে নিয়ে যান বিকাশ। তিনি বলেন, ‘‘আইনজীবীরা লড়াই করছেন, আইন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির পক্ষে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের লেলিয়ে দিচ্ছে শাসকদল। আমি বাড়ি চলে গিয়েছিলাম। শুনলাম জুনিয়রেরা বার হতে পারছেন না চেম্বার থেকে। ফিরে এলাম। মুক্ত করে নিয়ে যাচ্ছি। পরে আইনি পদক্ষেপ করব।
বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য এবং স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় আদালত অবমাননার মামলা করতে চেয়ে সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন বার অ্যাসোসিয়েশনের কয়েক জন আইনজীবী। সোমবারই প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ এই ঘটনায় ক্ষোভপ্রকাশ করে।
প্রধান বিচারপতি এবং বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করার অনুমতি দেয়। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘প্রথমত আদালত এবং বিচারপতির বিরুদ্ধে এমন কোনও আচরণ করা যায় না। রায় পছন্দ না হলে উচ্চতর আদালতে আবেদন করুন। এ ভাবে বিক্ষোভ দেখাবেন কেন? স্পষ্ট ভাষায় বলছি, এই কাজ করা যায় না। এঁদের সকলকে চিহ্নিত করতে হবে।’’