কলকাতা পুলিশের তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ শুনে বিরক্ত কলকাতা হাই কোর্ট। তদন্তে ত্রুটি দেখে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ মন্তব্য করেন, ওই পুলিশকর্মীদের কলকাতা পুলিশে থাকার যোগ্যতা নেই! তাঁদের জেলায় পাঠিয়ে দেওয়া উচিত বলে মনে করছেন বিচারপতি।
গল্ফ গ্রিনের একটি ঘটনায় পুলিশি তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। ওই এলাকার এক তরুণ নিজের বাড়ির সামনেই পোষ্যকে নিয়ে ঘুরছিলেন। অভিযোগ, সেই সময়েই স্থানীয় কয়েক জন বাসিন্দার সঙ্গে তাঁর মারামারি হয়। ঝামেলা থামাতে গিয়ে তরুণের মা-ও আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ। পরে আহত অবস্থায় তরুণকে প্রথমে একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ার কারণে অন্যত্র স্থানান্তর করা হয় তাঁকে। দ্বিতীয় হাসপাতাল থেকে পরিবারকে জানানো হয়, ওই তরুণ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে গিয়েছেন। তাঁর পক্ষে আর স্বাভাবিক কাজকর্ম করা সম্ভব নয়।
ওই ঘটনায় পুলিশ কয়েক জন অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করে। তবে পরে নিম্ন আদালত থেকে তাঁরা জামিন পেয়ে যান। তরুণের পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ ঠিক ভাবে তদন্ত না-করার কারণেই অভিযুক্তেরা জামিন পেয়ে গিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ দ্বিতীয় হাসপাতালের কোনও নথিই সংগ্রহ করেনি। দ্বিতীয় হাসপাতালের নথি নিম্ন আদালতে জমা না-পড়ার কারণে অভিযুক্তদের জামিন পেতে সুবিধা হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। এই মামলায় বুধবার পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিচারপতি ঘোষ। দ্বিতীয় হাসপাতালের মেডিক্যাল রিপোর্ট কেন নিম্ন আদালতে জানানো হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। বিচারপতি প্রশ্ন করেন, “পুলিশ কি জেনেবুঝেই এমন কাজ করেছে?”
আরও পড়ুন:
হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, দ্বিতীয় হাসপাতালের মেডিক্যাল রিপোর্ট সম্পর্কে পুলিশ অজ্ঞাত থাকলে বলতে হবে, তদন্ত ঠিকমতো হয়নি। বিচারপতি ঘোষের মন্তব্য, “মামলায় তদন্ত করার ধরন দেখে মনে হচ্ছে ওই পুলিশকর্মীদের কলকাতা পুলিশে থাকার যোগ্যতা নেই। তাঁদের জেলায় পাঠানো উচিত।”
আগামী শুক্রবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। ওই দিনে গল্ফ গ্রিনের ঘটনার তদন্তকারী অফিসারকে কেস ডায়েরি নিয়ে আদালতে হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। নিম্ন আদালতে কোন পুলিশকর্মী চিকিৎসা সংক্রান্ত নথি জমা দিয়েছেন, তা-ও পুলিশকে জানাতে বলা হয়েছে। অন্যথায় তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হবে বলেও সতর্ক করেছেন বিচারপতি ঘোষ।