Advertisement
০২ মে ২০২৪
State News

খরচের হিসেব না-দিলে ভোটে দাঁড়ানো মুশকিল

২০১৫ সালে কলকাতা পুরসভার নির্বাচনে এক হাজারের বেশি প্রার্থী ছিলেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২০ ০৬:০৬
Share: Save:

পুরভোটে প্রার্থী হতে চান? হিসেব দিন। নইলে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হতে পারে বলেই জোর জল্পনা ও চর্চা চলছে রাজনৈতিক দল থেকে প্রশাসনের অন্দরমহলে।

প্রার্থীদের খরচের হিসেব নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং হাওড়া জেলা প্রশাসনকে বৃহস্পতিবার চিঠি দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। নিয়ম অনুযায়ী পুর বোর্ড গঠনের ছ’মাসের মধ্যে কমিশনের কাছে খরচের হিসেব দিতে হয় প্রার্থীদের। কোনও প্রার্থী সেই হিসেব না-দিলে তাঁর পুরপ্রতিনিধিত্ব (কাউন্সিলর-পদ) খারিজ হয়ে যাবে। এবং হিসেব না-দিলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থী তিন বছর পুরভোটে লড়তে পারবেন না। এ ক্ষেত্রে প্রথমে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে ‘শো-কজ়’ করা হয়। তার উত্তরে কমিশন সন্তুষ্ট হতে না-পারলে শাস্তির মুখে পড়তে হয় প্রার্থীকে।

২০১৫ সালে কলকাতা পুরসভার নির্বাচনে এক হাজারের বেশি প্রার্থী ছিলেন। ৬৫ শতাংশের বেশি প্রার্থী নির্বাচনী খরচের হিসেব দিয়েছেন কমিশনকে। ২০১৩-য় হাওড়ার পুরভোটে প্রার্থী-সংখ্যা ছিল প্রায় ৪০০। অর্ধেক প্রার্থী হিসেব পেশ করেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর। পরে বালি পুরসভাকে হাওড়ার সঙ্গে যুক্ত করা হয়। প্রার্থীদের হিসেব পেশের তালিকা জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে কমিশন।

ব্যয়-সীমা*

লোকসভা
• বড় রাজ্যে ৭০ লক্ষ।
• ছোট রাজ্যে ৫৪ লক্ষ।
বিধানসভা
• বড় রাজ্যে ২৮ লক্ষ।
• ছোট রাজ্যে ২০ লক্ষ।
পুরসভা (পশ্চিমবঙ্গ)
• ছ’হাজার ভোটারের ওয়ার্ডে ভোটার-পিছু পাঁচ টাকা।
• ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার বা তার বেশি ভোটারের ওয়ার্ডে ভোটার-পিছু ছ’টাকা।

*সব অঙ্ক টাকায়

হিসেব দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রার্থীদের গাফিলতির পাশাপাশি কমিশনের তৎপরতার ঘাটতি নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা। তাঁদের মতে, হিসেব পেশের ব্যাপারে অনেক আগেই তৎপর হওয়া উচিত ছিল কমিশনের। এই নিয়ে বর্তমান কমিশনের কর্তা কোনও মন্তব্য করতে চাননি। ২০১৫-১৬ সালে যে-সব কর্তা কমিশনের দায়িত্বে ছিলেনস তাঁরা এখন আর সেখানে নেই।

আরও পড়ুন: তিন কিমির মধ্যে করোনা বাঁধার দাওয়াই কেন্দ্রের

পুরসভার ক্ষেত্রে ছ’হাজার ভোটারের ওয়ার্ডে ভোটার-পিছু পাঁচ টাকা খরচ করতে পারেন প্রার্থীরা। ওয়ার্ডের ভোটার-সংখ্যা ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার বা তার বেশি হলে ভোটার-পিছু খরচ ছ’টাকা পর্যন্ত করা য়ায়। সাধারণত, পুরসভায়, নোটিফায়েড বা বিজ্ঞাপিত এলাকায় ওয়ার্ড-পিছু ভোটার-সংখ্যা অনেকটাই কম। কর্পোরেশন বা পুর নিগমে ওয়ার্ড-পিছু ভোটার অনেক বেশি হয়। কোনও প্রার্থী কমিশনের বেঁধে দেওয়া খরচের সীমা ছাপিয়ে গেলে কী হবে, সেই বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি জেলা প্রশাসনের কর্তারা।

জাতীয় নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী লোকসভা ভোটে পশ্চিমবঙ্গ-সহ বড় রাজ্যে ৭০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ করতে পারেন প্রার্থীরা। ছোট রাজ্যে তা ৫৪ লক্ষ টাকা। বড় রাজ্যে বিধানসভা কেন্দ্র-পিছু ২৮ লক্ষ এবং ছোট রাজ্যে ২০ লক্ষ টাকা খরচ করা যায়। সাধারণ ভাবে কমিশনের বেঁধে দেওয়া ব্যয়-সীমার মধ্যেই থাকেন প্রার্থীরা। তবে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পরে গুরুদাসপুর আসনের সাংসদ, অভিনেতা সানি দেওলের খরচ হিসেব কমিশনের নির্ধারিত সীমাকে ছাড়িয়ে যাওয়ায় প্রবল বিতর্ক শুরু হয়। খরচের হিসেব সীমা ছাড়ানোর ঘটনা প্রমাণিত হলে সাংসদপদও খারিজ হয়ে যেতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Municipal Election 2020
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE