তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার মৃত্যুতে আটকাবে না নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত। মঙ্গলবার প্রাথমিক মামলায় এমনই জানাল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, অন্যতম অভিযুক্তের মৃত্যু হলেও সিবিআই দুর্নীতির তদন্ত চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। উল্লেখ্য, প্রাথমিক নিয়োগ মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত হিসাবে তাপসের নাম জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে টাকার বিনিময়ে সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাপসের বিরুদ্ধে। রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছে, তাতে তাপসেরও বড় ভূমিকা ছিল বলে অভিযোগ। তদন্তের স্বার্থে সিবিআই অতীতে বার কয়েক তাপসকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছিল। শুধু তা-ই নয়, তাঁর বাড়িতে তল্লাশি অভিযানও চালিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। তবে দিন কয়েক আগেই তাপসের মৃত্যু হয়। তার পরে অনেক মহলেই প্রশ্ন ওঠে, তাঁর মৃত্যুর কারণে কি তদন্ত বন্ধ হয়ে যাবে? মঙ্গলবার হাই কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিল, অভিযুক্তের মৃত্যুতে দুর্নীতি তদন্ত থমকাবে না। সিবিআই তদন্ত আগের মতোই চালিয়ে যেতে পারবে। এই দুর্নীতিতে আরও কেউ জড়িত থাকতে পারেন। তা খুঁজে বার করার প্রয়োজন।
অন্য দিকে, এই মামলার তদন্তে রাজ্যের দুর্নীতি দমন শাখার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে সিবিআই। আদালতে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল (এসসজি) অশোককুমার চক্রবর্তী দাবি করেন, সিবিআইকে সব তথ্য, নথি দেওয়া হয়নি। প্রথমে যেহেতু এই মামলার তদন্তভার রাজ্যের দুর্নীতি দমন শাখার উপর ছিল, তাই তাদের থেকে তথ্য এবং নথি না পাওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে। সিবিআইয়ের অভিযোগ, রাজ্যের তদন্তকারী অফিসার সব তথ্য, নথি দিয়ে তদন্তে সহযোগিতা করছেন না। দুর্নীতি দমন শাখার অফিসার অনুপম দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
আরও পড়ুন:
সিবিআইয়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজ্যের উদ্দেশে বিচারপতি চক্রবর্তীর প্রশ্ন, অন্য সংস্থা তদন্ত করলেও রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থার তথ্য সরবরাহ করতে সমস্যা কোথায়? একজন তদন্তকারী অফিসার কি বলতে পারেন সিবিআইকে তথ্য দেব না, আমিই তদন্ত করব? শুনানি শেষে হাই কোর্ট নির্দেশ দেয়, এই মামলার কেস ডায়েরি-সহ যাবতীয় তথ্য সিবিআইকে দিতে হবে। রাজ্যও সেই নির্দেশ মানবে বলে জানায়। রাজ্যের তরফে আদালতে জানানো হয়, তিন-চার দিন সময় লাগবে। তার মধ্যে সব তথ্য সিবিআইকে দেওয়া হবে।