Advertisement
১১ মে ২০২৪
Cyclone Amphan

আমপানে বাংলাকে আরও ২৭০০ কোটি দেবে কেন্দ্র, তৃণমূল বলছে ‘নগণ্য’

রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার সমস্ত ক্ষয়ক্ষতির হিসেব করে কেন্দ্রের কাছে ১ লক্ষ ২ হাজার কোটি টাকা চেয়েছিল।

ঘূর্ণিঝড় আমফানের তাণ্ডবের পর এটাই ছিল পরিচিত দৃশ্য।

ঘূর্ণিঝড় আমফানের তাণ্ডবের পর এটাই ছিল পরিচিত দৃশ্য।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২০ ১৩:৩৬
Share: Save:

আমপানের পরে রাজ্যে পরিদর্শনে এসে ১ হাজার কোটি টাকা সাহায্যের ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু এত বড় বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ে ত্রাণ ও পুনর্গঠনের জন্য কেন্দ্রের এই অনুদান পর্যাপ্ত নয় বলে বার বার অভিযোগ তুলেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার ভোটের মুখে কিছুটা স্বস্তি দিয়ে রাজ্যকে আমপানের জন্য আরও ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা সাহায্যের ঘোষণা করল কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নেতৃত্বে গঠিত একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি শুক্রবার এ রাজ্যের সঙ্গে আরও পাঁচটি রাজ্যকে ঘূর্ণিঝড়, বন্যা ও ধসের মোকাবিলার জন্য প্রায় ৪ হাজার ৩৮১ কোটি টাকা বরাদ্দের অনুমোদন দিয়েছে।

দ্বিতীয় দফার এই অর্থসাহায্যের জন্য কেন্দ্রকে ধন্য়বাদ দিয়েও রাজ্যের শাসক দলের বক্তব্য, আমপানের ক্ষয়ক্ষতি, ভয়াবহতার কাছে এই টাকা নগন্য। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার সমস্ত ক্ষয়ক্ষতির হিসেব করে কেন্দ্রের কাছে ১ লক্ষ ২ হাজার কোটি টাকা দাবি করেছিল। কিন্তু দু’দফায় মিলিয়ে মোট ৩ হাজার ৭০৭ কোটি টাকা দিল। এটা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত কম।’’

এ বছরের ২০ মে সুন্দরবনের সাগর দ্বীপের কাছে উপকূলে আছড়ে পড়েছিল অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আমপান। প্রায় ১৮৫ কিলোমিটার গতিবেগের ওই ঝড়ে কার্যত লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা-সহ রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা। তার পর ২৩ মে রাজ্যে ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে এসে রাজ্যকে ১ হাজার কোটির আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই টাকা সঙ্গে সঙ্গেই রাজ্যকে দিয়ে দিয়েছিল কেন্দ্র। তার সঙ্গে শুক্রবার জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল থেকে বরাদ্দ হল আরও ২ হাজার ৭০৭.৭৭ কোটি টাকার অনুদান।

পরিসংখ্যান দিয়ে সুখেন্দু এ দিন বলেন, ‘‘আমপানে ২৮ লক্ষ ৬ হাজার বাড়ি ধুলিসাৎ হয়ে গিয়েছিল। নষ্ট হয়েছিল ১৭ লক্ষ হেক্টর জমির ফসল। এ ছাড়া বহু রাস্তা, সেতু, পানীয় জল সরবরাহের প্রকল্প, বিদ্যুত সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছিল। সেই সব হিসেব করেই রাজ্য সরকার ওই টাকা দাবি করেছিল। রাজ্য সরকার প্রাথমিক ভাবেই ৬৩৫০ কোটি টাকা খরচ করেছে ত্রাণ ও পুনর্গঠনে। তার পরেও আরও অনেক টাকা খরচ হয়েছে। সেগুলি সবই রাজ্য সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে। অথচ কেন্দ্র তার অর্ধেকও দিল না।’’ তবে যা দিয়েছে তার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে সুখেন্দুর বক্তব্য, ‘‘তবু বলছি কেন্দ্রকে ধন্যবাদ। তবে আমাদের দাবি থাকবে, কেন্দ্র যেন রাজ্যকে বঞ্চিত না করে। আমাদের দাবির অন্তত ৭৫ শতাংশ টাকা দেয়।’’

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে শীর্ষ আমলারা বহুবার কেন্দ্রের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

রাজ্যে বিধানসভা ভোটের বাকি আর ৫-৬ মাস। সেই কথা মাথায় রেখে অমিত শাহ এই অনুদান মঞ্জুর করেছেন বলে ওয়াকিবহাল শিবিরের একাংশের মত। যদিও অন্য অংশের যুক্তি, বাকি আরও পাঁচটি রাজ্যে অনুদান দেওয়া হচ্ছে। সেগুলির কোথাও ভোট নেই। তাই এটা রাজনৈতিক ভাবে দেখা উচিত নয় বলেও মত অন্য অংশের।

আরও পড়ুন: এনসিবি-র দফতরে অর্জুন রামপাল, মাদক তদন্তে জেরা চলছে, গ্রেফতার অভিনেতার বন্ধু

আরও পড়ুন: রাহুল ‘নার্ভাস’, স্মৃতিচারণা ওবামার, প্রশংসা মনমোহনের, নেই মোদী

আমপানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল ওড়িশাতেও। ওই সময় ওড়িশাকেও ৫০০ কোটি টাকা সাহায্যের ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই ওড়িশাকে ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় আরও ১২৩.২৩ কোটি টাকা এ দিন মঞ্জুর করেছে কেন্দ্র। এর পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় নিসর্গের মোকাবিলায় মহারাষ্ট্রকে দেওয়া হচ্ছে ২৬৮.৫৯ কোটি টাকা। বর্ষা ও বন্যার ক্ষতি মোকাবিলায় কর্নাটকের জন্য বরাদ্দ ৫৭৭.৮৪ কোটি এবং মধ্যপ্রদেশের জন্য ৬১১.৬১ কোটি। ৮৭.৮৪ কোটি টাকা সিকিম পাবে ধসের মোকাবিলায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE