চোরবাগানের পুজো প্রাঙ্গনেই এক অনুষ্ঠানে লটারির মাধ্যমে বেছে নেওয়া হল ১০টি পুজো কমিটিকে। নিজস্ব চিত্র।
পুজোর আগেই পুজোর পুরস্কার! শুনতে আজব মনে হলেও শারদোৎসবের আগেই ১৬টি পুজো কমিটিকে পুরস্কৃত করেছে কলকাতারই এক নামজাদা পুজো কমিটি। করোনা সংক্রমণের কারণে গত বছর থেকেই হিন্দু বাঙালির মহাপার্বণেও আর্থিক মন্দার আঁচ পড়েছে। তাই পুজোর বহু আগেই উত্তর কলকাতার চোরবাগান সর্বজনীন দুর্গোৎসব সমিতি ঘোষণা করেছিল, এবারের শারোদৎসবে ১০টি পুজো কমিটিকে প্রতিমা বানিয়ে দেওয়া হবে। প্রায় ১০০-রও বেশি আবেদন জমা পড়েছিল পুজো উদ্যোক্তাদের কাছে। বাছাই করতে লটারির সাহায্য নিয়ে শনিবার ১০টি পুজো কমিটির নাম ঘোষণা করেছেন তাঁরা। পুজো প্রাঙ্গণেই বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে মৃৎশিল্পীরা লটারির মাধ্যমে ১০টি ক্লাব কমিটিকে বেছে নেন। এই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন রাসবিহারীর বিধায়ক দেবাশিস কুমার, জোড়াসাঁকোর প্রাক্তন বিধায়ক স্মিতা বক্সী, সমাজসেবী কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় ও সৌম্য বক্সী।
আবেদনের ভিত্তিতে কলকাতার ১০টি ক্লাব কমিটিকে প্রতিমা দেওয়ার পাশাপাশি, মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত আরও দু'টি ও মেদিনীপুরের একটি পুজো কমিটিকে প্রতিমা দেওয়া হবে। সঙ্গে আরও তিনটি ক্লাবকে পুজো উপলক্ষে ১০,০০১ টাকা দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। গত বছরের মতো এ বারও চোরবাগান সর্বজনীন দুর্গোৎসবের মঞ্চ সাজাচ্ছেন শিল্পী বিমল সামন্ত। তাঁর তত্ত্বাবধানেই চোরবাগার সর্বজনীনের পুজো প্রাঙ্গনে তৈরি হচ্ছে এই ১৩টি দেবী প্রতিমা। এই প্রতিমাগুলি নির্মাণের জন্য মোট ১২ জন মৃৎশিল্পীকে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আনা হয়েছে। তাঁরা দু’মাসের বেশি সময় চোরবাগান ক্লাবে থেকেই দেবী প্রতিমাগুলির রূপদান করছেন। নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর থেকে দু’জন, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ময়না থেকে ছ'জন, দক্ষিণ কলকাতার বেহালা থেকে তিনজন ও মেদিনীপুর থেকে একজন বর্ষীয়ান মৃৎশিল্পীকে আনা হয়েছে। পুজো কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক কাজল মান্না জানিয়েছেন, মহালয়ার দিন ১৩টি প্রতিমা দেওয়া তুলে দেওয়া হবে লাটারি মাধ্যমে বেছে নেওয়া পুজো কমিটিগুলির হাতে।
চোরবাগান তাদের এই উদ্যোগের নাম দিয়েছে ‘দশাঙ্গনে দশভূজা’। যে ১০টি পুজো কমিটি তাদের থেকে প্রতিমা পাবে, তারা হল ঢাকুরিয়ার ফ্রেন্ডস অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েশন, ভবানীপুরের সারথী, বেলেঘাটা নবালয় সংঘ, বেহালার আচার্য প্রফুল্ল সংঘ, মধ্য কলকাতার বিশ্বকল্যাণ সর্বজনীন, দমদমের মা আগমনী সংঘ, আদি কম্বুলিটোলা ও শ্যামবাজার স্ট্রিট সর্বজনীন দুর্গোৎসব, ভবানীপুর কিশোর সংঘ, বিধাননগরের বিএল ব্লক কমিটি এবং বেলেঘাটা সরকার বাজার বিবেকানন্দ সংঘ। এ ছাড়াও বিশেষ ভাবে নির্বাচিত পুজোর তালিকায় স্থান পেয়েছে দু'টি মহিলা পুজো কমিটিও। উত্তর কলকাতার নীলমণি মিত্র স্ট্রিটের দুর্বার মহিলা দুর্গোৎসব কমিটি ও নলিন সরকার স্ট্রিট ২৮-এর পল্লি মহিলাবৃন্দ। কলকাতা তথা শহরতলির বাইরের একটি পুজো কমিটিকেও প্রতিমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চোরবাগান। মেদিনীপুরের ক্লাব ভীমেশ্বরী যুব ছাত্র সংঘকেও এবার প্রতিমা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুজো কমিটির অন্যতম কর্তা জয়ন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রত্যেক পুজো কমিটিকে ১০১ টাকার বিনিময়ে দেওয়া হবে প্রতিমাগুলি।
এ ছাড়াও, সোদপুরের পানশিলা সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি, কেষ্টপুরের তালবাগান অধিবাসীবৃন্দ ও উত্তর কলকাতার পাইকপাড়া ২১ নম্বর কালচারাল অ্যসোসিয়েশনকে ১০,০০১ টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে চোরবাগান সর্বজনীন দুর্গোৎসব সমিতির পক্ষ থেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy