E-Paper

উচ্চ পদে নিয়োগ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ স্বাস্থ্যে

জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের বায়োকেমিস্ট্রির অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর অভিজিৎ সাহাকে বারাসত মেডিক্যালের এমএসভিপি করা হয়েছে।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪ ০৮:২৫
স্বাস্থ্য ভবন।

স্বাস্থ্য ভবন। —ফাইল চিত্র।

যোগ্যরা বঞ্চিত এবং কম যোগ্যতাসম্পন্নদের পদপ্রাপ্তি! গত কয়েক দিন ধরে এই অভিযোগে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর তোলপাড়।

মেডিক্যাল কলেজের ক্ষেত্রে নীতি নির্ধারক সংস্থা ‘জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন’-এর নিয়ম ভেঙে রাজ্যের একাধিক মেডিক্যাল কলেজের মেডিক্যাল সুপারিন্টেন্ডেন্ট তথা সহ অধ্যক্ষ (এমএসভিপি) পদে নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ‘প্রফেসর’ পদে রয়েছেন, এমন শিক্ষক-চিকিৎসকদের পদ জোটেনি। আর যাঁরা এখনও প্রফেসর হতেই পারেননি, অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর পদে রয়েছেন, তাঁরা প্রফেসরদের টপকে এমএসভিপি-র পদ পেয়ে গিয়েছেন!

এই নিয়োগের ক্ষেত্রে যে নিয়ম ভাঙা হয়েছে, তা পক্ষান্তরে স্বীকারও করেছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব ও রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা। কিন্তু কেন তাঁরা জেনেশুনে ‘বেআইনি’ পথে হেঁটেছেন, তার যথাযথ ব্যাখ্যা মেলেনি। তবে স্বাস্থ্যভবনের অন্দরের খবর, ভিতর থেকে কলকাঠি নেড়েছে সরকারি চিকিৎসকদের অতি ক্ষমতাসম্পন্ন উত্তরবঙ্গ লবি।

স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, ‘‘যে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসরদের এমএসভিপি করা হয়েছে তাঁদের কিছুদিনের মধ্যে পদোন্নতি করে প্রফেসর করা হবে। এর আগেও একটি ক্ষেত্রে এ রকম হয়েছে।’’ কিন্তু শুধু পদোন্নতি দিলেই তো হল না। আইনে রয়েছে, এমএসভিপি হতে গেলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে ন্যূনতম পাঁচ বছর প্রফেসর হিসেবে কাজ করতে হবে। সেই নিয়মের কী হবে? উত্তর মেলেনি।

জাতীয় মেডিক্যাল কমিশনের ২০২২ সালের গেজেট নোটিফিকেশনের ৩.৭ নম্বর পয়েন্টে স্পষ্ট বলা রয়েছে, এক জন শিক্ষক-চিকিৎসক ‘অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর’ ও ‘প্রফেসর’ পদ মিলিয়ে ন্যূনতম ১০ বছর কাজ করার পর এবং তার মধ্যে অন্তত ৫ বছর প্রফেসর থাকার পর তবেই এমএসভিপি পদে নিযুক্ত হতে পারেন। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতর গত ২৮ জুন একটি নির্দেশিকা জারি করে বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে যে এমএসভিপি-দের নিয়োগ করেছে, তাঁদের মধ্যে তিন জন অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর রয়েছেন।

জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের বায়োকেমিস্ট্রির অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর অভিজিৎ সাহাকে বারাসত মেডিক্যালের এমএসভিপি করা হয়েছে। জলপাইগুড়িরই অ্যানাস্থেশিয়োলজির অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর অনুরূপ পাখিরাকে করা হয়েছে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজের এমএসভিপি। আবার ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যালের কমিউনিটি মেডিসিনের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর অগ্নিহোত্রী ভট্টাচার্য হয়েছেন হাওড়ার উলুবেড়িয়ার শরৎচন্দ্র মেডিক্যাল কলেজের এমএসভিপি।

বামপন্থী ও বিজেপিপন্থী চিকিৎসক সংগঠন এবং স্বাস্থ্যভবনেরই একাংশ প্রশ্ন তুলেছে, রাজ্য কী করে জাতীয় মেডিক্যাল কমিশনকে টপকে নিজেদের মতো করে আইন গড়ে নিতে পারে?

প্রফেসর না হওয়া সত্ত্বেও এই পদ তাঁরা পেলেন কী ভাবে, জানতে চাওয়া হলে অভিজিৎ সাহা ও অগ্নিমিত্রা বলেন, ‘‘ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসা করুন।’’ অনুরূপের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। আর রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা কৌস্তভ নায়েককে প্রশ্ন করা হলে তিনি উত্তর দেন, ‘‘এমনিতে আমাদের অসুবিধা নেই, কিন্তু জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন নিয়ম নিয়ে সমস্যা করতে পারে। দেখি কী করা যায়।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

West Bengal health department West Bengal

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy