বিতর্কে জড়ালেন সিপিএমের যুব নেতা শতরূপ ঘোষ। ফাইল চিত্র।
তৃণমূল কংগ্রেসের সৌগত রায় বা বিজেপির দিলীপ ঘোষের পথ ধরে এ বার ‘হুঙ্কার’ দিয়ে বিতর্কে জড়ালেন সিপিএমের যুব নেতা শতরূপ ঘোষ। সেই সূত্র ধরে আতস কাচের তলায় আসছে ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক মন্তব্যও। রাজনৈতিক শিবিরের প্রশ্ন, সৌগত বা দিলীপের ‘কুকথা’ নিয়ে যাঁরা সমালোচনা করেন, তাঁরা কী ভাবে একই পথের পথিক হন? যদিও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের মতে, ‘‘ক্রিকেটের পরিভাষায় বলতে গেলে, সব বল লাইন-লেংথ মেনে হয় না!’’
মুর্শিদাবাদের সালারে মঙ্গলবার এক জনসভায় সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য শতরূপ বলেছেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে চিন্তা করবেন না। তৃণমূল যদি বাইক বাহিনী নিয়ে আসে, আপনারা এমন ব্যবস্থা করুন, যাতে তাদের অ্যাম্বুল্যান্সে করে ফিরতে হয়!’’ গত কয়েক বছরে এমন হুঙ্কার দিয়ে ‘নাম’ কুড়িয়েছেন বিজেপি নেতা দিলীপ। শতরূপ এ দিন দলের কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে আরও বলেছেন, মামলার ভয় করার দরকার নেই। দলের তরফে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য-সহ আইনজীবীরা রয়েছেন, তাঁরা মামলার বিষয় দেখে নেবেন।
সিপিএম নেতার এমন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ পাল্টা বলেছেন, ‘‘এক দশকের বেশি সময় রাজনীতিতে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেলেও বাইক বাহিনীর ধারণা থেকে সিপিএম বেরোতে পারছে না! তৃণমূলের আমলে ভোট হয় স্থানীয় উন্নয়ন ও পরিবারকে সহায়তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর গৃহীত অসংখ্য সরকারি প্রকল্পের ভিত্তিতে। তার ফলে ধীরে ধীরে সিপিএম শূন্যে পরিণত হয়েছে!’’
বর্ধমানে সিপিএমের আইন অমান্য কর্মসূচি ঘিরে ধুন্ধুমারের পরে কিছু ছবি প্রকাশ্যে এসেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে দলের যুব নেত্রী পৃথা তা-কে চুলের মুঠি ধরে ভ্যানের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন নীতু সিংহ নামে এক পুলিশ আধিকারিক। ওই একই পুলিশ আধিকারিককে দেখা যাচ্ছে মেহুলি নামের আর এক তরুণীকেও একই ভাবে নিয়ে যেতে। এর প্রেক্ষিতে পশ্চিম বর্ধমানে ডিওয়াইএফআইয়ের কর্মসূচিতে গিয়ে মীনাক্ষী হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, পুলিশ যদি এই ভাবে দলের ছেলে-মেয়েদের গায়ে হাত দেয়, তা হলে ওই হাত গলায় ঝুলবে! সেই ব্যবস্থা দলের ছেলে-মেয়েরাই করবে। বীরভূমে যুব সংগঠনের সম্মেলনে গিয়ে সন্ত্রাসের প্রতিবাদ করলেই সরকারি প্রকল্প থেকে নাম বাদ দেওয়া হলে সেই হাতের একই পরিণতি হবে বলে ফের মন্তব্য করেছেন তিনি।
যুব নেতা-নেত্রীদের এমন ‘হুঙ্কারে’র প্রেক্ষিতে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সেলিমের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘ছাত্র বা যুব রাজনীতির নিজস্ব ধর্ম আছে। যদি ধর্মের বর্ম পরে যা খুশি করা যায়, শাসকেরা যদি যা খুশি করতে পারে, পুলিশ যদি আইন না মেনে শাসকের পথে চলে, তা হলে কখনও কখনও ধৈর্যচ্যুতি ঘটে। রাজ্যে কোথাও কোথাও এমন ঘটনা ঘটেছে। যুবদের কোনও কোনও কথায় তারই প্রতিফলন ধরা পড়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy