Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Covid Patient

রোগীর ঠাঁই হয়নি আইডি বা মেডিক্যালে

পা ভেঙে যাওয়ায় বারাসতের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বছর চৌষট্টির নিত্যানন্দ কুণ্ডু।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২১ ০৫:৩৩
Share: Save:

করোনার দাপট ফের এতটাই বাড়ছে যে, খাস কলকাতাতেই দু’-দু’টি বড় সরকারি হাসপাতালে ঠাঁই না-পেয়ে পাঁচ ঘণ্টারও বেশি নাজেহাল হতে হল এক ষাটোর্ধ্ব কোভিড রোগী এবং তাঁর আত্মীয়স্বজনদের। শেষ পর্যন্ত রবিবার রাতে আরজি কর হাসপাতালে শয্যা পান বারাসতের ওই রোগী।

পা ভেঙে যাওয়ায় বারাসতের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বছর চৌষট্টির নিত্যানন্দ কুণ্ডু। দু’দিন পরে হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, তাঁর করোনা হয়েছে। অভিযোগ, তার পর থেকে কলকাতার দু’টি বড় সরকারি হাসপাতালে ঘুরেও শয্যা পাননি ওই রোগী। এমনকি কোনও রকম সাহায্য করেনি স্বাস্থ্য ভবনও। ফলে অ্যাম্বুল্যান্সের সীমিত অক্সিজেন সরবরাহের ভরসাতেই বেশ কয়েক ঘণ্টা রোগীকে নিয়ে বসে থাকলেন পরিবারের লোকজন।

স্বরূপ পাল নামে ওই রোগীর এক আত্মীয় রবিবার রাত ৮টা নাগাদ হাসপাতাল-চত্বর থেকে জানান, ভাঙা পায়ে অস্ত্রোপচার করার জন্য শুক্রবার বারাসতের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন নিত্যানন্দবাবু। ভর্তির সময় করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসে। কিন্তু শনিবার রাতে হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, তিনি করোনা পজ়িটিভ। সেখানে করোনার চিকিৎসা হয় না। তাই হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষ ওই রোগীকে অন্যত্র নিয়ে যেতে বলেন। অভিযোগ, তার পরেই শুরু হয় হয়রানি। স্বাস্থসাথী কার্ডের মাধ্যমে চিকিৎসা চলছিল বলে তাঁকে কলকাতার সরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেয় রোগীর পরিবার। ছিলেন তাঁর ছেলে গোপাল কুণ্ডু ও মেয়ে মৌসুমি কুণ্ডু।
তাঁদের অভিযোগ, প্রথমে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ঘণ্টা তিনেক
এবং তার পরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দু’ঘণ্টা বসে থেকেও শয্যা পাওয়া যায়নি। হাসপাতাল সূত্রে তাঁদের বলা হয়, তাঁরা যেন স্বাস্থ্য ভবনের টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করেন। সেখান থেকে বলা হলে তবেই রোগী শয্যা পাবেন। রোগীর আত্মীয়স্বজনের অভিযোগ, ওই নম্বরে ফোন করলে সেখান থেকে রোগীকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে বলা হয়। কিন্তু করোনা রোগীর ভাঙা পায়ের চিকিৎসা করার জন্য কোনও চিকিৎসক কেউ বাড়িতে আসতে রাজি হবেন না, এই আতঙ্ক ঘিরে ধরে পরিবারের লোকেদের।

কিন্তু ওই রোগী শয্যা পেলেন না কেন? সরকারি হাসপাতালগুলিতে কি তা হলে করোনা আক্রান্তদের জন্য পর্যাপ্ত স‌ংখ্যায় শয্যা নেই?

স্বাস্থ্য ভবনের এক কর্তা বলেন, ‘‘এখন করোনার যে-পরিস্থিতি, তাতে রোজ আক্রান্তের সংখ্যা চার হাজার ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এত জনকে শয্যা দেওয়া প্রায় অসম্ভব। ফলে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য ভবনে ফোন করে তবেই ভর্তি হওয়া যাবে।’’ তিনি জানান, ওই নম্বরে ফোন করলে চিকিৎসকেরা পরিস্থিতি শুনে বলে দেবেন, কোন রোগীর তৎক্ষণাৎ শয্যা প্রয়োজন এবং কোন রোগীর ঠিক তখনই শয্যার দরকার নেই। কারও কোমর্বিডিটি থাকলে তিনি প্রাধান্য পাবেন। এই পরিস্থিতিতে সকলকে শয্যা দেওয়া সম্ভব হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE