ফাইল চিত্র।
করোনা রোগীদের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় রেমডেসিভিয়ার ওষুধের জোগান খুবই কম। টসিলিজুম্যাব রাজ্যে পাওয়াই যাচ্ছে না। এই অভাব মেটাতে কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্য প্রয়োজন বলে আজ রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে জানাল। একইসঙ্গে রাজ্যের বক্তব্য, কেন্দ্র পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অক্সিজেন উৎপাদন কেন্দ্র থেকে ২০০ মেট্রিক টন অক্সিজেন অন্য রাজ্যে সরবরাহ করছে। কিন্তু যে হারে পশ্চিমবঙ্গে কোভিডের সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে আগামী দিনে অক্সিজেনের প্রয়োজন আরও বাড়বে। কেন্দ্র যদি এখনকার মতোই পশ্চিমবঙ্গ থেকে অন্যত্র অক্সিজেন নিয়ে যেতে থাকে, তা হলে রাজ্যের কোভিড রোগীদের চিকিৎসায় সমস্যা দেখা দেবে।
কোভিড সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় বাকি দেশের মতো রাজ্যেও হাসপাতালের বেড , অক্সিজেনের অভাব দেখা দিয়েছে। রেমডেসিভিয়ারের মতো অ্যান্টি-ভাইরাল ড্রাগের অভাব দেখা দেওয়ায় কালোবাজারি শুরু হয়েছে। কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি রাজ্যগুলির কাছেও বিশদ তথ্য জানতে চেয়েছিল।
সরকারি সূত্রের খবর, রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছেন, রাজ্যে অক্সিজেন উৎপাদন ক্ষমতা ৪৯০ মেট্রিক টন। এখন প্রায় ৩৬২ মেট্রিক টন অক্সিজেন উৎপাদন হচ্ছে। আপাতত অক্সিজেনের চাহিদা ২৫০ মেট্রিক টন। কিন্তু রাজ্যে যেভাবে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে ১০ মে-র মধ্যে অক্সিজেনের চাহিদা বেড়ে ৩০০ মেট্রিক টনে পৌঁছে যাবে। রাজ্য প্রতিদিন ৩০৮ মেট্রিক টন অক্সিজেন পাবে বলে কেন্দ্র প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সমস্যা হল, ৩০ জুনের মধ্যে অক্সিজেনের চাহিদা বেড়ে ৬০০ মেট্রিক টনে পৌঁছে যেতে পারে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র যদিন এখনকার মতোই ২০০ মেট্রিক টন অক্সিজেন অন্যত্র দিতে থাকে, তা হলে রাজ্যের কোভিড রোগীদের সমস্যা দেখা হতে পারে। মুখ্যসচিব আগেই এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিবকে চিঠি লিখেছিলেন। এ বার সুপ্রিম কোর্টের কাছেও সেই সমস্যা তুলে ধরেছে রাজ্য সরকার।
আগামী দিনে অক্সিজেনের বর্ধিত চাহিদা মেটাতে রাজ্য সরকার কলকাতা-সহ গোটা রাজ্যের ৯২টি হাসপাতালকে চিহ্নিত করেছে, যেখানে অক্সিজেন উৎপাদন ব্যবস্থা বা প্লান্ট বসানো যেতে পারে। আগেই কেন্দ্রীয় সরকারকে এই ৯২টি হাসপাতালে অক্সিজেন জেনারেটন জোগানের জন্য অনুরোধ জানিয়েছিল রাজ্য। অক্সিজেন ট্যাঙ্কার যাতায়াতে যাতে কোনও বাধা না আসে, তার জন্যও কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের তরফে নির্দেশিকা জারি হয়েছে। কেন্দ্রের কাছে অক্সিজেনের সিলিন্ডারও
চাওয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের বক্তব্য, অক্সিজেন, ওষুধ, প্রতিষেধকের অভাব রয়েছে বলেই যে কেন্দ্রীয় সরকার এ সব নিয়ন্ত্রিত ভাবে বিলি করছে, তা স্পষ্ট। কিন্তু সেই বিলিবণ্টনেও স্বচ্ছতা ও পরিস্থিতি অনুযায়ী রদবদল দরকার। রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। রাজ্যের মতে, অক্সিজেনের সমস্যা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্তরে যে ক্ষমতাসম্পন্ন গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে, তাতে রাজ্যের প্রতিনিধিদের রাখা হোক। কেন্দ্রের তরফে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিবদের সঙ্গে দিনে দু’বার করে কথা বলা হোক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy