Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Coronavirus

Coronavirus in West Bengal: বিধিভঙ্গের সঙ্গে পরীক্ষা এড়ানোয় সিঁদুরে মেঘ

বুধবার ১৫,৪১৬ জনের পরীক্ষায় ‘পজ়িটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার এসেছে ১৮.৭৪ শতাংশ। মঙ্গলবারের (১৬.২৪ শতাংশ) থেকে যা বেশি।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২২ ০৫:১৭
Share: Save:

সর্বনাশা প্রতিযোগিতা!

চলতি পর্যায়ে পশ্চিমবঙ্গেও করোনার আগ্রাসনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমজনতার বড় অংশের বিধি ভাঙার প্রবণতাকে এ ভাবেই দেখছে স্বাস্থ্য শিবির। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, করোনা বিধি উপেক্ষা করা তো রয়েছেই, সেই সঙ্গে পরীক্ষা না-করানোর মানসিকতাও প্রবল হচ্ছে। দু’টিই বিপজ্জনক। স্বাস্থ্য দফতরের বৃহস্পতিবারের বুলেটিন অনুযায়ী, বঙ্গে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছে প্রায় তিন হাজারের কোঠার দুয়ারে। তা সত্ত্বেও শহর থেকে জেলার সর্বত্র এক শ্রেণির মানুষের উদাসীনতা এবং বেপরোয়া মনোভাব বড় বিপদকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে বলেই চিকিৎসকদের আশঙ্কা। একসঙ্গে এই জোড়া প্রবণতায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন তাঁরা। এই অবস্থায় তাঁদের পরামর্শ, মাস্ক-সহ অতিমারির যাবতীয় বিধি মেনে চলুন এবং পরীক্ষা করান।

চিকিৎসকদের কথায়, ‘‘মানুষ নিজেরাই চতুর্থ ঢেউকে বাড়াবাড়ির পর্যায়ে নিয়ে যাবে বলে মনে হচ্ছে। কারণ, করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে সবার আগে জরুরি সচেতন মানসিকতা আর সতর্কতা। যেগুলোর অভাব এ বার মারাত্মক বেশি।’’ এ দিনের বুলেটিন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় অর্থাৎ বুধবার রাজ্যে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ২৮৮৯ জন। গত মঙ্গলবার অর্থাৎ ৫ জুলাই (৬ জুলাইয়ের বুলেটিনে প্রকাশিত) রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৩৫২। স্বাস্থ্য শিবিরের পর্যবেক্ষণ, এক দিনের মধ্যে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁরা জানাচ্ছেন, সামান্য হলেও বৃদ্ধি পেয়েছে পরীক্ষার সংখ্যা। বুধবার ১৫,৪১৬ জনের পরীক্ষায় ‘পজ়িটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার এসেছে ১৮.৭৪ শতাংশ। মঙ্গলবারের (১৬.২৪ শতাংশ) থেকে যা বেশি।

চতুর্থ ঢেউয়ের গোড়া থেকেই সংক্রমিতের তালিকারশীর্ষে থাকছিল কলকাতা। কিন্তু বুধবার মহানগরকে পিছনে ফেলে প্রথম স্থানে উঠে এসেছে উত্তর ২৪ পরগনা। সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন ৮৩৪ জন। কলকাতায় ৮১৯ জন। তার পরেই রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা (২০০), হুগলি (১৭৫), পশ্চিম বর্ধমান (১১৫), হাওড়া (১১০), পূর্ব বর্ধমান (১০৭), পশ্চিম মেদিনীপুর (১০৩), নদিয়া (১০০)। ১৩টি জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা এক থেকে ৯৯-এর মধ্যে রয়েছে। সারা রাজ্যে একমাত্র কালিম্পংই আক্রান্ত-শূন্য। ওই দিন রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের।স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, করোনা আক্রান্তদের নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সের উপরেও জোর দেওয়া হচ্ছে। সেই পরীক্ষাতেই উত্তর ২৪ পরগনা এবং রাজ্যের অন্য দু’-একটি জেলায় ওমিক্রনের নতুন সাব-ভেরিয়েন্ট (বিএ.২.৭৩)-এর খোঁজ মিলেছে। ভাইরোলজিস্ট সিদ্ধার্থ জোয়ারদার বলেন, ‘‘ধারাবাহিক নজরদারির যথেষ্ট প্রয়োজন রয়েছে। তবে নতুন সাব-ভেরিয়েন্ট এই মুহূর্তে মৃত্যুহার বাড়ানোর বা চরম আঘাত হানার ক্ষমতা অর্জন করতে পারবে না বলেই মনে হচ্ছে। কিন্তু সাবধানতা সব থেকে জরুরি।’’ তিনি জানাচ্ছেন, লক্ষণীয় বিষয়, বিএ.২-র উপ-প্রজাতি তৈরি হচ্ছে, যেটা অন্য কোনও নতুন প্রজাতির মিউটেশন নয়।জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই বলেন, ‘‘দেখা যাচ্ছে, ওমিক্রনের এই নতুন সাব-ভেরিয়েন্ট সংক্রামক হলেও গুরুতর রোগ বাধাচ্ছে না। কিন্তু ওমিক্রন বা অন্য ভেরিয়েন্ট যেটাই হোক না কেন, যত বেশি সংক্রমণ করবে, তত বেশি মিউটেশনের সম্ভাবনা বাড়বে।’’ তাঁর বক্তব্য, এক সময় এমন মিউটেশন আসতে পারে, যেটা ডেল্টার মতো বা তার থেকেও ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়াতে পারে। সুতরাং এক জনের থেকে অন্য জনের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনাটাকে রুখতেই হবে।কিন্তু চিকিৎসক মহলের আক্ষেপ, সংক্রমণ ছড়ানো রুখতে যেটা সর্বাগ্রে দরকার, সেটা হল মাস্ক পরা, ভিড় এড়ানো। কিন্তু বিধির প্রতি আনুগত্য কোথায়? থেকেই যাচ্ছে প্রশ্ন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus COVID19 corona
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE