Advertisement
E-Paper

চিকিৎসকদের কারচুপি দেখে অবাক কাউন্সিল

বজ্র আঁটুনির গেরো যে এই ভাবে চিকিৎসকদের একাংশ আলগা করে দেবেন, কল্পনাও করতে পারেননি ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল কাউন্সিলের (এমসিআই) কর্তারা।অভিযোগ গিয়েছিল চিকিৎসকদের কাছ থেকেই। আর সেই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে হতবাক এমসিআই।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:৩৭

বজ্র আঁটুনির গেরো যে এই ভাবে চিকিৎসকদের একাংশ আলগা করে দেবেন, কল্পনাও করতে পারেননি ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল কাউন্সিলের (এমসিআই) কর্তারা।

অভিযোগ গিয়েছিল চিকিৎসকদের কাছ থেকেই। আর সেই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে হতবাক এমসিআই।

এমসিআই পরিদর্শনের সময়ে এক মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক অন্য কলেজে গিয়ে খেপ খাটেন, এটা জানা কথা। এই খেপ খাটা এবং হাসপাতালের ডিউটিতে ঢিলে দেওয়া বন্ধ করতে চিকিৎসকদের হাজিরায় বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু করেছিল এমসিআই। ধরা পড়ছে, চিকিৎসকের জায়গায় কোথাও বায়োমেট্রিকে বুড়ো আঙুলের ছাপ দিয়েছেন সাফাই কর্মী বা পিওন। প্রথম থেকেই সংশ্লিষ্ট সাফাই কর্মী বা পিওনের বুড়ো আঙুলের ছাপ রেকর্ড করা হয়েছে।

যদিও এমসিআই সূত্রে বলা হয়েছে, যে সব ক্ষেত্রে তারা নিজে বায়োমেট্রিক চালু করেছে সেখানে চিকিৎসকদের আধার কার্ড ভিত্তিক আঙুলের ছাপ রেকর্ড করা আছে। তা হলে এমন ঘটনা কী ভাবে ঘটল? এমসিআই গ্রিভ্যান্স সেলের চেয়ারম্যান অজয় কুমারের কথায়, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে আমাদের প্রযুক্তি ব্যবহার হয়নি। সব মেডিক্যাল কলেজে এ বার সেটা বাধ্যতামূলক

হবে।’’ কী ধরনের অভিযোগ পেয়েছে এমসিআই? দুর্গাপুরের এক বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের খাতায় নথিভুক্ত পাঁচ-ছ’জন শিক্ষক-চিকিৎসক সপ্তাহে দুই দিন কলেজে আসছেন, কিন্তু বায়োমেট্রিক যন্ত্রের হিসেব দেখাচ্ছে তাঁরা রোজ উপস্থিত। কারণ চিকিৎসকের জায়গায় আঙুলের ছাপের রেকর্ড রয়েছে সাফাইকর্মী, করণিক, মালি বা অন্য কারও। কলেজ-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগসাজশ ছাড়া এমনটা হতে পারে না বলে দাবি এমসিআই-য়ের। মেডিক্যাল কলেজের এক শীর্ষ কর্তার যদিও জবাব, ‘‘আপনারাই দেখছি এ রাজ্যে মেডিক্যাল কলেজ হতে দেবেন না।’’

‘প্রক্সি’ দেওয়ার লোক অনুপস্থিত থাকলে কী হয়? এমসিআইয়ের তদন্তকারীর মন্তব্য, ‘‘সে ক্ষেত্রে হাজিরা মার গিয়েছে। যেদিন যেদিন ‘ডামি’ আসবেন না, সেদিন অনুপস্থিত থাকেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকও।’’

অনেক বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ এখনও বায়োমেট্রিক যন্ত্র বসায়নি। হলদিয়ার এক বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ নিয়ে এমসিআই-য়ের কর্তা জানাচ্ছেন, ওরা খাতায় সই করেই চালাচ্ছে এবং অভিযোগ, শিক্ষক-চিকিৎসকেরা দু’দিন এসেই ছ’দিনের সই করছেন। শিক্ষাটাই যদি গোঁজামিল দিয়ে হয়, তা হলে হবু ডাক্তাররা শিখবেন কী? অজয়বাবুর আশ্বাস, ‘‘আরও কড়া হচ্ছি।’’

এমসিআই ঠিক করেছে— ক্লাসরুমে আর বায়োমেট্রিক মেশিলের জায়গায় ঠিক উপরে ক্যামেরা লাগাতে হবে। ফলে কে কে মেশিনে হাতের ছাপ দিচ্ছেন আর কে কে পড়াতে ঢুকছেন, সেটা ধরা থাকবে। ক্যামেরা খারাপ হলেও ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সারানো না-হলে কলেজের অনুমোদন বাতিল হতে পারে। বায়োমেট্রিক মেশিন খারাপ হলে দিল্লিতে এমসিআইয়ের সদরে সিগন্যাল পৌঁছে যাবে।

রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় এই খবরদারিতে ক্ষুব্ধ। তাঁর মন্তব্য, ‘‘এমসিআই যা পারছে তাই করছে। ওদের বিরুদ্ধেও বিস্তর অভিযোগ আছে।’’

Council Doctors
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy