বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনায় অভিযুক্তদের দ্রুত বিচারের দাবিতে রাস্তায় নেমে পড়ল সিপিএম।—নিজস্ব চিত্র।
ধর্মস্থান নিয়ে বিভাজনের রাজনীতি বন্ধ করা এবং বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনায় অভিযুক্তদের দ্রুত বিচারের দাবিতে অযোধ্যা-রায়ের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই রাস্তায় নেমে পড়ল সিপিএম। তাদের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের প্রেক্ষিতে ট্রাস্ট গড়ে অযোধ্যায় মন্দির ও মসজিদ গড়ার দায়িত্ব নিতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে। কিন্তু মন্দির-মসজিদ গড়াই শুধু সরকারের কাজ হতে পারে না। অর্থনীতির বেহাল দশা, অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি বা কর্মসংস্থানের অভাবের দিকে নজর দিতে হবে।
শান্তি-সম্প্রীতি রক্ষা এবং বিভাজনের রাজনীতি বন্ধ করার দাবিতে সোমবার সন্ধ্যায় ধর্মতলার লেনিন মূর্তি থেকে মহাজাতি সদন পর্যন্ত মিছিল হয়েছে কলকাতা জেলা সিপিএমের উদ্যোগে। ধর্মতলা থেকে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ ধরে মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী, কলকাতার জেলা সম্পাদক কল্লোল মজুমদার প্রমুখ। লিবেরহান কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করা এবং বাবরি ধ্বংসের মামলার দ্রুত বিচারের দাবি তুলে স্লোগান ওঠে মিছিল থেকে। মিছিল শেষে মহাজাতি সদনের পাশে সংক্ষিপ্ত সভাও হয় মানুষের রুটি-রুজির সমস্যার দিকে নজর দেওয়ার দাবিতে।
মিছিল শুরুর আগে সেলিম মনে করিয়ে দেন, অযোধ্যায় বিবদমান দুই পক্ষ আপস মীমাংসায় পৌঁছতে না পারায় সর্বোচ্চ আদালতের উপরেই ভরসা করতে হয়েছিল। কিন্তু আদালতের রায় এসেছে, ‘ন্যায়’ হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘রেললাইন করা, রাস্তা নির্মাণ, শিক্ষার জন্য স্কুল-কলেজ তৈরি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি— এগুলো সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কিন্তু কেন্দ্রের সরকার রেল, বিমান থেকে শুরু করে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা সবই বেসরকারি হাতে তুলে দিচ্ছে! এখন আদালত রায় দিলেও মন্দির-মসজিদ গড়া সরকারের কাজ বলে বামপন্থীরা মনে করে না।’’ মিছিলের পরে সুজনবাবুরও বক্তব্য, ‘‘রায় তো হয়ে গিয়েছে। এ বার উন্মাদনা বন্ধ করে মানুষের প্রকৃত সমস্যার দিকে নজর দেওয়া হোক।’’
সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে ‘কার্যত ন্যায়বিচারের চরম প্রহসন’ বলে এ দিন মন্তব্য করেছে এসইউসি-ও। দলের সাধারণ সম্পাদক প্রভাস ঘোষ বিবৃতিতে বলেছেন, ‘গণতান্ত্রিক আইনশাস্ত্রের ইতিহাসে কোথাও কখনও ধর্মীয় বিশ্বাসকে ঐতিহাসিক সাক্ষ্যপ্রমাণ ও আইনের ঊর্ধ্বে স্থান দেওয়া হয়নি। গণতন্ত্রপ্রিয়, ধর্মনিরপেক্ষ ও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের মধ্যে এই রায় অত্যন্ত উদ্বেগ ও আশঙ্কা এবং ভারতীয় বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতা সম্পর্কে গভীর সংশয় সৃষ্টি করেছে’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy