Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Suicide

ফেসবুকে সুইসাইড নোট লিখে আত্মঘাতী ধূপগুড়ির বধূ

সুইসাইড নোটে অনিতার অভিযোগ, তাঁদের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি পার্থর বাড়ির লোকজন।

—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২১ ১৭:৪৪
Share: Save:

প্রেমের সম্পর্ক থেকে বিয়ে। তবে সে সম্পর্ক মেনে নিয়ে পারেননি শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পণের দাবিতে চলত মারধর। ফেসবুকে একটি সুইসাইড নোটে ননদ, শাশুড়ি ও দিদিশাশুড়ির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনে আত্মহত্যা করলেন ধূপগুড়ির এক বধূ। এই ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে খবর, মাস ছয়েক আগে জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ির ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অনিতা হালদারের সঙ্গে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মৃন্ময় হালদার ওরফে পার্থর বিয়ে হয়। সুইসাইড নোটে অনিতার অভিযোগ, তাঁদের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি পার্থর বাড়ির লোকজন। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন পণের দাবি জানাতেন বলেও সুইসাইড নোটে অভিযোগ করেছেন অনিতা। এমনকি পার্থর ফের বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা শুরু করেছেন বলেও জানাতেন অনিতার শাশুড়ি। পাশাপাশি, গত ১ মাস ধরে অসুস্থ হলেও তাঁর চিকিৎসার বন্দোবস্ত করা হয়নি বলেও অভিযোগ অনিতার।

শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগও করেছেন অনিতা। সুইসাইড নোটে তিনি লিখেছেন, ‘আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী শাশুড়ি, ননদ ও দিদিশাশুড়ি’। সুইসাইড নোটটি নেটমাধ্যমে পোস্ট করার পর আত্মঘাতী হন তিনি। তবে স্ত্রী কেন আত্মঘাতী হলেন, তা নিয়ে অন্ধকারে বলে দাবি করেছেন পার্থ। তিনি বলেন, “ঘটনার সময় অনিতা বাপের বাড়িতে ছিল। কী কারণে আত্মহত্যা করল, তার কিছুই আমাদের জানা নেই। সুইসাইড নোটে কেন এ রকম মন্তব্য করল, তা-ও জানি না। সামনেই আমার বোনের বিয়ে। ওর নামেও অভিযোগ করেছে। দু’দিন আগেই অনিতা নিজের হাত কেটে, তার ভিডিয়ো করে আমাকে পাঠিয়ে বলেছিল, আত্মহত্যা করব। তবে আমাদের মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে আমাদের ঝগড়াঝাঁটিও হয়নি।”

যদিও মৃত অনিতা দাদা কৃষ্ণ দাসের অভিযোগ, “বোনের ওপর অত্যাচার চালাত শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এ নিয়ে মুখে কিছু না বললেও মাঝেমধ্যেই বোন আমাকে মেসেজ করে জানাত। বোন অসুস্থ হয়ে পড়লে ডাক্তার পর্যন্ত দেখায়নি ওর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। এমনকি ঠিকঠাক খেতেও দিত না। তাই বাধ্য হয়ে ও আত্মহত্যা করেছে।”

স্থানীয়দের দাবি, এই ঘটনার পর থেকে ভয় পেয়ে গা ঢাকা দেন অনিতার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তবে অনিতার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সময় ফের বাড়িতে ফিরে আসেন তাঁরা।

গোটা ঘটনায় অনিতার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন কৃষ্ণ। তিনি বলেন, “বোনকে তো আর ফিরে পাব না। তবে যারা বোনের মৃত্যুর জন্য দায়ী, তাদের যেন এমন শাস্তি হয় যাতে কোনও বোনকেই যেন আত্মহত্যা না করতে হয়।"

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE