Advertisement
E-Paper

জলাতঙ্ক নিয়ে সচেতনতা কম ডাক্তারদেরও

জলাতঙ্ক-চিকিৎসার পরিকাঠামো নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠছে, তেমনই প্রশ্ন উঠছে প্রতিষেধকের মান নিয়েও। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের খবর, প্রতিষেধক নিয়েও জলাতঙ্ক ঠেকাতে না পারার ঘটনা ঘটছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তেই।

সোমা মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৫১
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সাত বছরের শিশুটির পায়ে আর পেটে কুকুর কামড়েছিল। প্রতিষেধক দিয়েও জলাতঙ্ক আটকানো যায়নি। সরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় শিশুটির।

এতে জলাতঙ্ক-চিকিৎসার পরিকাঠামো নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠছে, তেমনই প্রশ্ন উঠছে প্রতিষেধকের মান নিয়েও। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের খবর, প্রতিষেধক নিয়েও জলাতঙ্ক ঠেকাতে না পারার ঘটনা ঘটছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তেই।

বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দেশ জুড়ে একাধিক কমিটি গঠন করেছে। কমিটির সদস্যেরা বিভিন্ন রাজ্য ঘুরে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছেন। সেই তালিকায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের নামও। কেন্দ্রীয় মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু ২০১৬ সালেই পশ্চিমবঙ্গে জলাতঙ্কে মৃত্যু হয়েছে ৫২ জনের। অথচ এঁদের বড় অংশই সঠিক সময়ে প্রতিষেধক নিয়েছিলেন!

কেন এমন হচ্ছে? বিশেষজ্ঞদের মতে, জলাতঙ্কের প্রতিষেধক সম্পর্কে সচেতনতা এখনও কম। চিকিৎসকদেরও এ ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা নেই। মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘বহু ক্ষেত্রেই হাসপাতাল বা দোকানগুলিতে প্রতিষেধক টিকা সঠিক তাপমাত্রায় রাখা হয় না। এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় প্রতিষেধক বয়ে আনার ক্ষেত্রে যে সব নিয়ম মানা দরকার, অনেক সময়ে তা মানা হচ্ছে না। টিকা ঠিক কী ভাবে দেওয়া দরকার, সেটাও বহু চিকিৎসক জানেন না।’’

সম্প্রতি জলাতঙ্ক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে একটি সর্বভারতীয় দল রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে যায়। দলের অন্যতম সদস্য, অ্যাসোসিয়েশন অব প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল অব রেবিস ইন ইন্ডিয়া (এপিসিআরআই)-এর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক, চিকিৎসক সুমিত পোদ্দার বলেন, ‘‘প্রতিষেধকের কার্যকারিতা শুরু হতে দু’সপ্তাহের মতো সময় লাগে।’’

তত দিন পর্যন্ত রোগটা কী ভাবে ঠেকানো যাবে? সুমিতবাবু বলেন, ‘‘তৎক্ষণাৎ যাতে রোগ প্রতিরোধের কাজ শুরু হতে পারে, সেই জন্য গভীর ক্ষতের (ক্যাটেগরি থ্রি বাইট) ক্ষেত্রে প্রতিষেধকের পাশাপাশি ক্ষতস্থানে সেরাম দেওয়া উচিত। বহু চিকিৎসকই এ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন।’’

নিয়ম অনুযায়ী, কুকুরে কামড়ালে প্রথমে ১৫ মিনিট সাবান দিয়ে ক্ষতস্থানটি কলের জলে ধুতে হয়। কামড়ের মাত্রা বেশি হলে এবং রক্তপাত ঘটলে ক্ষতস্থানে সেরাম অর্থাৎ ইমিউনো গ্লোবিউলিন ইঞ্জেকশন দেওয়া উচিত। পাশাপাশি প্রতিষেধক নিতেই হয়। কখন শুধু প্রতিষেধকই যথেষ্ট এবং কখন সেরামও প্রয়োজন— তা নির্ভর করবে চিকিৎসকের বিবেচনার উপর।

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, গত বছর কলকাতার আই ডি হাসপাতালে যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ৩৫ জন কুকুরের কামড়ে। এঁদের মধ্যে মাত্র ১৫ জন প্রতিষেধক নেননি। বাকিরা সবাই কিন্তু নিয়েছিলেন। এপিসিআরআই-এর বক্তব্য, পরিসংখ্যানের দিক থেকে এই তথ্যগুলি যথেষ্ট আশঙ্কাজনক হওয়া সত্ত্বেও জলাতঙ্ক সম্পর্কে ন্যূনতম প্রচারেরও ব্যবস্থা নেই। সুমিতবাবুর কথায়, “কিছু হোর্ডিং অন্তত দেওয়াই যায়, যাতে মানুষ বুঝতে পারেন কী করা উচিত।”

Rabies Doctors
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy