ভারত-পাকিস্তানের উত্তেজনার মাঝে পিছিয়ে যেতে পারে শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা ভারতব্যাপী সাধারণ ধর্মঘট। আগামী ২০ মে দেশ জুড়ে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ভারতের ১০টি কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠন। কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদীর সরকারের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ এনে এই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে, পহেলগাঁও পরবর্তী পরিস্থিতি এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন:
শুক্রবার নয়াদিল্লিতে ধর্মঘট সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। সেখানেই ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে চলা যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। আপাতত ঠিক হয়েছে, আগামী ১৫ মে আবারও বৈঠকে বসবে শ্রমিক সংগঠনগুলি। সেই বৈঠকেই নির্ধারিত হবে ধর্মঘটের ভবিষ্যৎ।
আইএনটিটইউসি, এআইটিইউসি, এইচএমএস, সিটু, এআইইউটিইউসি, টিইউসিসি, এসইডব্লিউএ, এআইসিসিটিইউ, এলপিএফ এবং ইউটিউসি-র সমন্বয়ে গঠিত যৌথ মঞ্চ এই ধর্মঘটের ঘোষণা করেছে। তাদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার শ্রমিকস্বার্থ বিরোধী পদক্ষেপ করছে। এখনও সরকারি ভাবে কার্যকর না হওয়া চারটি শ্রম কোডের কিছু ধারা বেছে বেছে বাস্তবায়িত করা হচ্ছে, যা বর্তমান শ্রম আইনগুলিকে লঙ্ঘন করছে। এই অবস্থায় শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ বেড়েছে এবং তাঁদের অধিকার রক্ষায় ধর্মঘটই একমাত্র পথ বলে সংগঠনগুলি মনে করছে। ধর্মঘটের প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই দেশ জুড়ে জোরকদমে চলছে। শ্রমিক সংগঠনগুলির দাবি, সরকার যেন অবিলম্বে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসে এবং গণতান্ত্রিক ভাবে নীতি প্রণয়ন করে। পাশাপাশি তারা শ্রমিকদের প্রতি ঐক্যবদ্ধ ভাবে আন্দোলনে শামিল হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছে। সরকারের শ্রমনীতির পাশাপাশি বেসরকারিকরণ, মূল্যবৃদ্ধি ও বেকারত্বও ধর্মঘটের অন্যতম ইস্যু বলে জানানো হয়েছিল।
গত এক মাস যাবৎ শ্রমিক সংগঠনগুলি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ধর্মঘট সংক্রান্ত জোরালো প্রচার চালিয়েছে। কিন্তু সীমান্ত উত্তেজনার পরিস্থিতিতে ধর্মঘট নিয়ে নতুন করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে বলেই মনে করছেন শ্রমিক নেতারা। আইএনটিটিইউসির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা পশ্চিমবঙ্গ সংগঠনের সভাপতি কামরুজ্জামান কামার বলেছেন, ‘‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ধর্মঘট করা সম্ভব কি না এই বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা করতে আবারও নয়াদিল্লিতে বৈঠকে বসবেন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। আগামী ১৫ মে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ এক বামপন্থী শ্রমিক সংগঠনের নেতার কথায়, ‘‘আগামী সপ্তাহে যদি ভারত পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়ে যুদ্ধের পরিস্থিতি আরও গুরুতর আকার নেয়, তবে ধর্মঘট পিছিয়ে দেওয়া হতে পারে।’’