Advertisement
০২ মে ২০২৪
Shahjahan Sheikh

মাছের ব্যবসায় শাহজাহান-রাজ চলত সন্দেশখালিতে! যখন তখন আসত ‘বাঘের’ হুঙ্কার, মানতে হত নির্দেশ

রেশন দুর্নীতির পাশাপাশি শাহজাহানের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমে মাছের ব্যবসা সংক্রান্ত দুর্নীতিরও সন্ধান পেয়েছেন ইডির গোয়েন্দারা। সম্প্রতি কয়েক বার সরেজমিনে তদন্ত করতে সন্দেশখালিতেও গিয়েছিল ইডি।

শাহজাহান শেখ।

শাহজাহান শেখ। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২৪ ১৪:২৪
Share: Save:

সন্দেশখালির মাছ ব্যবসায়ীরা তটস্থ হয়ে থাকতেন শাহজাহান শেখের ভয়ে। তবে ভয় পেলেও নির্দেশ অগ্রাহ্য করার সুযোগ ছিল না। মাছের ব্যবসা করলে তা কী ভাবে করতে হবে, তার স্পষ্ট নির্দেশ দিয়ে রেখেছিলেন শাহজাহান। সেই পদ্ধতি না মানলে ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকিও দিয়ে রেখেছিলেন তিনি! সম্প্রতি এমনই তথ্য জানতে পেরেছে ইডি।

রেশন দুর্নীতির পাশাপাশি শাহজাহানের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমে মাছের আমদানি-রফতানি ব্যবসা সংক্রান্ত দুর্নীতিরও সন্ধান পেয়েছেন ইডির গোয়েন্দারা। সম্প্রতি সেই দুর্নীতিরই সন্ধান করতে বেশ কয়েক বার সন্দেশখালিতে সরেজমিনে তদন্ত করতে গিয়েছিল ইডি। তদন্তে শাহজাহানের বিরুদ্ধে কিছু নতুন তথ্য হাতে এসেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির। ইডি সূত্রে খবর, মাছের ব্যবসায়ীদের শাহজাহান বলে দিয়েছিলেন, ব্যবসা করলে তা করতে হবে তাঁর সংস্থার মাধ্যমে। না হলে সন্দেশখালিতে ব্যবসাই করা যাবে না!

ইডি জানতে পেরেছে, সন্দেশখালির সরবেরিয়ার বাজারে একটি মিটিং ডেকেছিলেন শাহজাহান। পাঁচ বছর আগে ২০১৯ সালে সেই মিটিংয়ে শাহজাহান সোজাসাপটা ভাষায় মাছ ব্যবসায়ীদের বলে দিয়েছিলেন, এখানে ব্যবসা করতে হলে, তা করতে হবে তাঁর সংস্থা ‘মেজার্স শেখ সাবিনা ফিশ সাপ্লাই ওনলি’-র মাধ্যমে।

ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, এ ভাবেই ভয় দেখিয়ে স্থানীয় মাছ বিক্রেতা এবং মাছ চাষীদের থেকে ৫০ শতাংশ চিংড়ি জোগাড় করত শাহজাহানের ওই সংস্থা। ১০-১৫ শতাংশ চিংড়ি আসত তাঁর নিজের মাছের ভেড়ি থেকে আর বাকি ৩৫-৪০ শতাংশ চিংড়ি আসত গ্রামবাসীদের থেকে জোর করে দখল নেওয়া ভেড়ি থেকে।

সোমবারই ইডি আদালতকে জানিয়েছে, শাহজাহানের জমি এবং ভেড়ি দখলের কালো টাকা চিংড়ি ব্যবসার মাধ্যমে সাদা করা হয়েছে। ইডির আইনজীবী বলেন, জমি দখলের কালো টাকা চিংড়ি ব্যবসার লেনদেন হিসাবে দেখানো হত। সেই ব্যবসা শাহজাহানের মেয়ে শেখ সাবিনার নামে। ইডির দাবি, চিংড়ি বেচা-কেনা করে দুর্নীতির টাকা নয়ছয় করা হয়েছে। ৩১ কোটি টাকার বেশি লেনদেন করা হয়েছে বলেও আদালতে দাবি করেছিল ইডি।

এ বার জানা গেল, কোন প্রক্রিয়ায় মাছের ব্যবসায়ীদের তাঁর সংস্থার মাধ্যমে চিংড়ি কেনা-বেচা করতে বাধ্য করে কালো টাকার লেনদেনে সাদা পর্দা ঢাকা দিয়েছিলেন শাহজাহান। সন্দেশখালির নেতার প্রতিপত্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সাহস হয়নি কারও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Shahjahan Sheikh ED
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE