Advertisement
১৭ মে ২০২৪
West Bengal Ration Distribution Case

মন্ত্রী বালুর প্রশ্রয়ে রাজ্য সরকারের ৪৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বাকিবুর! চার্জশিটে বলল ইডি

দুর্নীতিতে যে পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে, অর্থাৎ যে পরিমাণ টাকা সরকারের লোকসান হয়েছে, তার পরিমাণ প্রায় ৪৫০ কোটি টাকা ছুঁতে পারে বলে মনে করছে ইডি।

ED Claimed State govt faced loses due to corruption of Bakibur Rahaman with the help of Jyotipriya Mallick

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবং বাকিবুর রহমান (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৫:০৩
Share: Save:

ধান কেনাবেচা সংক্রান্ত দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমান। আর এই দুর্নীতির জন্য রাজ্য সরকারের বহু কোটি টাকার লোকসান হয়েছে বলে মনে করছেন এনফোর্সমেন্ট ডিরক্টরেটের (ইডি) তদন্তকারীরা। তদন্তকারীদের একাংশ মনে করছেন, প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় (যিনি রাজনৈতিক মহলে বালু নামে সমধিক পরিচিত)-র প্রশ্রয় ছাড়া এই কাজ করতে পারতেন না বাকিবুর। সেই সূত্রেই ফের চর্চা শুরু হয়েছে জ্যোতিপ্রিয়-বাকিবুর জুটি নিয়ে। দুর্নীতিতে যে পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে, অর্থাৎ যে পরিমাণ টাকা সরকারের লোকসান হয়েছে, তার পরিমাণ প্রায় ৪৫০ কোটি টাকা ছুঁতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রথম চার্জশিটে এমনটাই দাবি করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি।

ইডি সূত্রের খবর, জ্যোতিপ্রিয় হাত ধরেই সরকারি কোষাগার থেকে ৪৫০ কোটির টাকা যায় বাকিবুরের সাজানো ভুয়ো কৃষকদের অ্যাকাউন্টে। বাকিবুরের সংস্থার অডিটরই এই বয়ান দিয়েছেন ইডির কাছে। চার্জশিটে তাঁর বয়ান উল্লেখ করে ইডির দাবি, বাকিবুর তাঁর সংস্থার ৫০ কর্মী নামে ভুয়ো কৃষক হিসেবে অ্যাকাউন্ট খোলে। সেই অ্যাকাউন্ট গুলিতে ধান কেনার নামে ৪৫০.৩১ কোটি টাকার ফান্ড রিলিজ করা হয় ওয়েস্ট বেঙ্গল এসেনসিয়াল কমোডিটি সাপ্লাই কর্পোরেশন লিমিটেডের তরফে। চার্জশিটে ইডি জানিয়েছে, এই সংস্থারই মাথায় রয়েছেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়। তিনি চেয়ারম্যান থাকাকালীন সেই সরকারি টাকা রিলিজ করা হয়।

চার্জশিটে ইডি এ-ও জানিয়েছে যে, তাদেরকে দেওয়া বয়ানে বাকিবুর স্বীকার করেছেন, তাঁর কোনো কর্মীর থেকে ধান কেনা হয়নি। শুধু খাতায় কলমে তাঁর কর্মীদের কৃষক দেখানো হয়েছিল। সহায়ক মূল্যের টাকা হাতাতেই ওই ব্যবস্থা করা হয়।

এই দুর্নীতির প্রমাণ হিসাবে খাদ্য দফতরেই কর্মরত এক আমলাকে সাক্ষী হিসাবে দেখানো হয়েছে। এমনকি ওই আমলার বয়ানও নথিবদ্ধ করেছে ইডি। ইডি সূত্রের খবর, খাদ্য দফতরের তৎকালীন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়ের মদতেই দুর্নীতির এই কাজ করে গিয়েছেন বাকিবুর।

ইডি সূত্রে আগেই জানা গিয়েছিল, রেশনের খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করার সময় তা নিয়ে নয়ছয় করতেন বাকিবুর এবং তাঁর সহযোগীরা। এই চক্রে অনেকে যুক্ত আছেন। এমনকি, রেশন ডিস্ট্রিবিউটরেরাও কেউ কেউ দুর্নীতিতে জড়িত। তাঁদের কাছ থেকে যত বস্তা গম চাওয়া হত, তার চেয়ে ৩০-৪০ শতাংশ কম সরবরাহ করতেন তাঁরা। ওই পরিমাণ গম নিজেরা আত্মসাৎ করতেন। রেশন ডিলার এবং ডিস্ট্রিবিউটরেরাও এ ভাবে লাভবান হতেন। বেশ কয়েক জন আধিকারিকও এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার কলকাতার নগর দায়রা আদালতে ১৬২ পাতার চার্জশিট পেশ করেছে ইডি। ইডি সূত্রে খবর, চার্জশিটে রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়, মিল ব্যবসায়ী বাকিবুর ছাড়াও রয়েছে তাঁদের নামে থাকা ১০টি ভুয়ো সংস্থার নাম। এই সংস্থাগুলির মাধ্যমে দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করা হয়েছে বলে তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jyotipriya Mallick Bakibur Rahaman ED
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE