এসআইআর চলাকালীন কোনও বিএলও-র মৃত্যু হলে বা তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে কি মিলবে ক্ষতিপূরণ— বিভিন্ন মহলে ওঠা এই প্রশ্নের মুখে কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, ক্ষতিপূরণের প্রশ্নে কিছু প্রশাসনিক পদ্ধতি রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম জেলা প্রশাসনের রিপোর্ট। অথচ এমন ঘটনাগুলিতে কমিশন রিপোর্ট চাইলেও এখনও তা জমা পড়েনি। ফলে আটকে রয়েছে কাজ। তবে নবান্ন সূত্রের খবর, মৃত এবং আহত বিএলও-দের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেবে রাজ্য সরকার।
এসআইআরের কাজ নিয়ে উষ্মা বাড়ছে বিএলও-দের একাংশের মধ্যে। কাজ চলাকালীন কয়েক জন বিএলও-র মৃত্যু এবং অসুস্থ হওয়ার খবরও মিলছে। এ নিয়ে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। নবান্ন সূত্রের খবর, মৃত দুই বিএলও-র পরিবারকে দু’লক্ষ এবং সেরিব্রাল আক্রান্ত বিএলও-কে এক লক্ষ টাকার আর্থিক সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বুধবারই হুগলির কোন্নগরে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তপতী বিশ্বাস নামে এক বিএলও। মুখ্যমন্ত্রী শুক্রবার তাঁর পরিবারের লোকের সঙ্গে ফোনে কথা বলে তপতীর খবর নেন। চিকিৎসার ব্যাপারে আশ্বাস দেন। মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে এক লক্ষ টাকা সাহায্যও করা হয় ওই পরিবারকে। তপতীর স্বামী প্রবীরের হাতে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে এক লক্ষ টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়।
এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে, কমিশনের দেওয়া যে প্রবল চাপ ঘাড়ে নিয়ে কাজ করছেন বিএলও-রা, তাতে এই সব ক্ষেত্রে কি কমিশনের কোনও দায়িত্ব থাকে না! কমিশন সূত্রের বক্তব্য, এমন ধরনের পরিস্থিতিতে মৃত বা অসুস্থ বিএলও-দের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রস্তাব করতে হলে জেলা প্রশাসনের তরফে সংশ্লিষ্ট ঘটনার তথ্য রিপোর্ট আকারে পাওয়া জরুরি। তাতে জেলা পুলিশের মতামতও থাকতে হয়। অতীতে বিএলও-র মৃত্যু বা অসুস্থ হওয়ার খবর পাওয়া মাত্রই সেই সব জেলা প্রশাসনের থেকে রিপোর্ট চাইত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর। এখনও সেটা করা হয়। রিপোর্ট হাতে এলে তা পাঠানোর কথা দিল্লির নির্বাচন সদনে। পরিস্থিতি বুঝে দরকারে ক্ষতিপূরণের প্রস্তাবও করা যেতে পারে। তবে সব খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেবে কমিশনই। কিন্তু জেলাগুলি এখনও কোনও রিপোর্ট না জমা করার কারণে এই পদক্ষেপও করা যাচ্ছে না বলে কমিশন সূত্রে বলা হয়েছে।।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে চিঠি পাঠিয়ে এসআইআর আপাতত স্থগিত করার আর্জি জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠিতে বিএলও-মৃত্যুর উল্লেখও করা হয়েছিল। কমিশন সূত্রের বক্তব্য, তার পরেও এখনও প্রশাসনিক রিপোর্ট এখনও জমা না পড়া বিস্ময়ের।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)