ভোটার তালিকায় নাম নথিভুক্তির ক্ষেত্রে অনিয়মের জেরে নিলম্বিত (সাসপেন্ড) হলেন চার আধিকারিক। রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়ে সে কথা জানানো হল জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় নিযুক্ত এই চার আধিকারিকের বিরুদ্ধে ‘অপরাধমূলক কার্যকলাপের’ অভিযোগে এফআইআর করার নির্দেশও দিয়েছে কমিশন।
দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বারুইপুর পূর্ব এবং পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটার তালিকার কাজ যাঁদের তত্ত্বাবধানে চলছিল, সেই দুই ইআরও (নির্বাচনী নিবন্ধন আধিকারিক) এবং দুই এইআরও-কে (সহকারী নির্বাচনী নিবন্ধন আধিকারিক) নিলম্বিত করেছে কমিশন। অবিলম্বে এই নিলম্বন এবং শৃঙ্খলাভঙ্গ সংক্রান্ত পদক্ষেপ তাঁদের বিরুদ্ধে কার্যকর হচ্ছে বলে কমিশনের চিঠিতে লেখা হয়েছে। বারুইপুর পূর্বের ইআরও এবং এইআরও হিসেবে কাজ করছিলেন দেবোত্তম দত্ত চৌধুরী এবং তথাগত মণ্ডল। ময়না বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য ওই দুই দায়িত্বে ছিলেন বিপ্লব সরকার ও সুদীপ্ত দাস। তাঁদের পাশাপাশি সুরজিৎ হালদার নামে এক ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের নামেও এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:
কমিশনের চিঠিতে ১৯৫০ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ধারা উল্লেখ করে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের পাশাপাশি জেলা নির্বাচন আধিকারিক, নির্বাচন নিবন্ধন আধিকারিক, সহকারী নির্বাচন নিবন্ধন আধিকারিক-সহ যাঁরা ভোটার তালিকার সংশোধন বা সমীক্ষা সংক্রান্ত কাজে যুক্ত থাকেন, তাঁরা ডেপুটেশনে নির্বাচন কমিশনের কর্মী হিসেবে কাজ করছেন বলে গণ্য হয়। তাই তাঁরা কমিশনের তত্ত্বাবধানে, নির্দেশে এবং নিয়ম মেনে কাজ করতে বাধ্য। যদি তাঁরা কর্তব্যে গাফিলতি করেন বা কমিশনের কথামতো কাজ না করেন, তা হলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার বিধান রয়েছে বলে চিঠিতে লেখা হয়েছে। অপরাধ প্রমাণ হলে তিন মাস থেকে দু’বছর পর্যন্ত কারাবাসের বিধানও রয়েছে বলে চিঠিতে লেখা হয়েছে।
ময়না এবং বারুইপুর পূর্বের যে চার আধিকারিককে কমিশন নিলম্বিত করেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ, ভোটার তালিকায় ‘বেঠিক অন্তর্ভুক্তি’র। তার পাশাপাশি নির্বাচন নিবন্ধন সংক্রান্ত যে তথ্যসম্ভার (ইআরও নেট) কমিশনের রয়েছে, তার গোপনীয়তা বজায় রাখতেও এই আধিকারিকেরা ব্যর্থ হয়েছেন বলে কমিশন জানিয়েছে। ইআরও নেটের লগ-ইন আইডি এবং পাসওয়ার্ড তাঁরা অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যক্তিবর্গের হাতে তুলে দিয়েছিলেন বলে চিঠিতে জানানো হয়েছে।
চিঠির শেষে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে দেশের নির্বাচন কমিশনের বার্তা — এই চিঠিতে দেওয়া যাবতীয় নির্দেশাবলি পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে কার্যকর করতে হবে এবং শীঘ্র সে বিষয়ে কমিশনে রিপোর্টও পাঠাতে হবে।