নিয়ম-ভঙ্গ: স্কাইওয়াকের নীচে এখনও বসছেন দখলদারেরা। সোমবার, দক্ষিণেশ্বরে। নিজস্ব চিত্র
দক্ষিণেশ্বরে স্কাইওয়াকের নীচে দখলদার হটাতে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। ফেব্রুয়ারিতে উচ্চ আদালতের ওই নির্দেশের পরে মার্চ মাস পড়ে গিয়েছে। কিন্তু দখলদার সরা তো দূর, উল্টে বেআইনি দখলদারের প্রভাবে ক্রমেই যানজট বাড়ছে দক্ষিণেশ্বরে রানি রাসমণি স্কাইওয়াক চত্বরে। যদিও পুলিশের পাল্টা দাবি, স্থানীয় পুর প্রশাসনের তরফে দখলদার হটাতে সাহায্য চাওয়া হয়নি।
দক্ষিণেশ্বর মন্দির কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মান্যতা পাচ্ছে না। মন্দিরের অছি ও সম্পাদক কুশল চৌধুরী বলেন, ‘‘স্কাইওয়াককে কেন্দ্র করে দখলদারি সরাতে পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি।’’ এমনকি স্থানীয় কামারহাটি পুরসভার তরফেও পুলিশের বিরুদ্ধে দখলদার হটাতে সক্রিয় না হওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। ক্ষোভ প্রকাশ করে কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা বলেন, ‘‘দখলদারদের সরিয়ে দিলেও ফের এসে বসছে। এলাকা নোংরা হচ্ছে। দখলদার সরানোর বিষয়টি পুলিশেরই দেখার কথা।’’
উল্লেখ্য, রানি রাসমণি রোডে যাঁদের দোকান ছিল তাঁদের স্কাইওয়াকের উপরেই পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে। কেএমডিএ, মন্দির কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় পুরসভার অভিযোগ, যানজট কমাতে স্কাইওয়াক তৈরি হলেও দখলদারদের কারণে ঘুরে ফিরে আসছে সেই জট-যন্ত্রণারই ছবি। ফুটপাত ছেড়ে দর্শনার্থীরা রাস্তায় নেমে আসায় গাড়ির গতি শ্লথ হচ্ছে।
ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সুনীল চৌধুরী বলেন, ‘‘স্থানীয় প্রশাসনের তরফে দখলদার সরাতে পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হলে অবশ্যই করা হবে।’’ যদিও পুর প্রশাসনের দাবি, দখলদার হটাতে আদালত পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে। পুর প্রশাসনকে নয়।
কুশলবাবু জানান, বালি ব্রিজ থেকে নামার রাস্তায় অসংখ্য গুমটি দোকান তৈরি হওয়ায় স্কাইওয়াকে কিছু জায়গায় ওঠানামার সমস্যা হচ্ছে। স্কাইওয়াকের সামনের রেলিংয়েই শুকোচ্ছে জামাকাপড়। নোংরা, প্লাস্টিক, ভাঙাচোরা কাঠামোর দোকানের কারণে স্কাইওয়াকের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে।
স্কাইওয়াককে কেন্দ্র করে রানি রাসমণি রোড দোকানদার সমিতি ও রাজ্য সরকারের মধ্যে একটি মামলাও বর্তমানে কলকাতা হাইকোর্টে চলছে। ফেব্রুয়ারিতে আদালতের কাছে এই দখলদারের বিষয়টি জানান কেএমডিএ, মন্দির কর্তৃপক্ষ ও কামারহাটি পুরসভা। তিন সংস্থারই অভিযোগ ছিল, তারা যৌথ ভাবে এলাকা পরিদর্শন করে দেখেছেন, স্কাইওয়াকের নীচের রাস্তা এবং আশেপাশের বেশ কিছু অংশ বেআইনি ভাবে দখল করে ব্যবসা চলছে। সেখানে মর্জিমতো গাড়ি পার্কিং হচ্ছে।
দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে যাতায়াতের প্রধান রাস্তা রানি রাসমণি রোডের যানজট কাটাতে স্কাইওয়াক তৈরি করা হয়েছে। প্রকল্পের পরিকল্পনা মতোই স্কাইওয়াকের উপরে দর্শনার্থীদের হাঁটাচলা এবং দোকানদারদের পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে। আর নীচে রানি রাসমণি রোড দিয়ে শুধু যানবাহন চলাচলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, স্কাইওয়াকের নীচের রাস্তায় ইতস্তত বিক্ষিপ্ত ভাবে পার্কিং গজিয়ে গিয়েছে। সাইকেলের স্ট্যান্ড থেকে শুরু করে রিকশা ও ট্যাক্সি— সবই দাঁড়াচ্ছে। আবার ভ্যান রিকশায় ছাতা লাগিয়ে তৈরি হয়েছে দোকানও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy