স্থায়ী নিয়োগের বদলে কখনও অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মী কখনও বা নিতান্তই স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বল্পমেয়াদী সময়ের জন্য নিয়োগের সুপারিশ করেছিল সরকার। পদের নাম— গ্রন্থাগারিক (চিফ লাইব্রেরিয়ান), বেতন ১০ হাজার টাকা। কিন্তু গত আড়াই বছরে সেই আবেদনে একটিও সাড়া না মেলায় এ বার ‘মাস এডুকেশন’ বা জনশিক্ষা বিভাগের বিভিন্ন ব্লকের এক্সটেনশন অফিসারদের উপরে নির্দেশ বর্তাল সরকার পোষিত বিভিন্ন গ্রান্থাগারের দায় সামাল দেওয়ার। সম্প্রতি এক নির্দেশিকায় তাঁদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সপ্তাহে অন্তত দু’দিন যেন নিজের এলাকার গ্রন্থাগারে গিয়ে তার দেখভাল করেন তাঁরা। যার তত্ত্বাবধান করবেন বিডিও-রা।
ফলে নিয়োগের প্রশ্নটি এড়িয়ে যাওয়ার পাশাপাশি অন্য দফতরের কর্মীদের বাড়তি পারিশ্রমিক ছাড়াই দায়ভার বাড়ল বলে মনে করছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। রাজ্য সরকারের এই নয়া ফরমানের সমালোচনা করেছেন খোদ তৃণমূল প্রভাবিত জনসাধারণের গ্রন্থাগার ও কর্মী কল্যাণ সমিতির প্রধান উপদেষ্টা মনোজ চক্রবর্তী। তাঁর অভিযোগ, ‘‘কোষাগারের হাঁড়ির হাল। কিন্তু খেলা-মেলা-উৎসব চালিয়ে জনসাধারণের মন তো পেতে হবে। তাই হাজার হাজার শূন্য পদে লাইব্রেরি সায়েন্স পাশ করা প্রার্থীদের ব্রাত্য করে সরকারি কর্মীদের একাংশের উপরেই কাজের বোঝা বাড়ানো হল।’’
নতুন নিয়োগের প্রশ্নে আড়াই বছর আগেই অনুমোদন দিয়েছিল অর্থ দফতর। শূন্য পদে নিয়োগের প্রশ্নে রাজ্যপালের ছাড়পত্রও পাওয়া গিয়েছে গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফেও প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ৭৩৮টি গ্রন্থাগারিকের শূন্য পদ-সহ প্রায় চার হাজার পদে স্থায়ী নিয়োগে এমন গড়িমসি কেন?
এ ব্যাপারে রাজ্যের গ্রন্থাগার দফতরের এক শীর্ষ কর্তার সংক্ষিপ্ত জবাব, ‘‘স্থায়ী নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।’’ কিছু দিন আগে সরকারি নির্দেশিকায় জানানো হয়েছিল, এই নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ করতে হবে জুলাই মাসের মধ্যে। তবে, ওই দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে সেই সার্চ কমিটি’ই গঠন করতে পারেনি গ্রন্থাগার বিভাগ।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)