Advertisement
E-Paper

কেউ ছিলেন ক্ষৌরকার, কারও মুদির দোকান, ঝাঁপ বন্ধ করে তারাই ‘ডাক্তার’

মঙ্গলবারই জেলায় ‘অ্যালোপ্যাথ’ পরিচয়ে চিকিৎসা চালানো সত্যবান মণ্ডলের ‘আয়ুর্বেদের ডাক্তার’ পরিচয় ফাঁস করে দিয়েছেন এক রোগী। তাই বুধবার প্রিয়লালের কাণ্ড দেখে প্রথমে অবাক, পরে সজাগ পূর্ব বধর্মানের কাটোয়ার সার্কাস ময়দান এলাকা। বছর দশেক ধরে সেখানে চেম্বার পূর্বস্থলীর উত্তর পলাশফুলির বাসিন্দা ‘ডাক্তার’ পি এল শীলের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৭ ০৩:৫৯
সাফ: কাটোয়ার মুছে দেওয়া সাইন বোর্ড। নিজস্ব চিত্র

সাফ: কাটোয়ার মুছে দেওয়া সাইন বোর্ড। নিজস্ব চিত্র

সাইনবোর্ডে দ্রুত পড়ছিল সাদা রঙের পোঁচ। উধাও হচ্ছিল ‘ডক্টর’, ‘গ্যাসট্রো-এন্টেরোলজি, রিউম্যাটোলজি ও ফিজিওথেরাপিতে বিশেষজ্ঞ’ শব্দগুলো। প্রিয়লাল শীলের হল কী? এলাকাবাসীর প্রশ্নে প্রৌঢ় মাথা চুলকে জবাব দেন, ‘‘ইয়ে, মানে ডিগ্রি লেখায় কিছু গোলমাল আছে। তাই বদলাব।’’

মঙ্গলবারই জেলায় ‘অ্যালোপ্যাথ’ পরিচয়ে চিকিৎসা চালানো সত্যবান মণ্ডলের ‘আয়ুর্বেদের ডাক্তার’ পরিচয় ফাঁস করে দিয়েছেন এক রোগী। তাই বুধবার প্রিয়লালের কাণ্ড দেখে প্রথমে অবাক, পরে সজাগ পূর্ব বধর্মানের কাটোয়ার সার্কাস ময়দান এলাকা। বছর দশেক ধরে সেখানে চেম্বার পূর্বস্থলীর উত্তর পলাশফুলির বাসিন্দা ‘ডাক্তার’ পি এল শীলের। সাইনবোর্ড মোছাতে দেখে প্রিয়লালকে চেপে ধরে জনতা। জেরার মুখে এলাকাবাসীর কাছে লোকটি মেনে নেন, তিনি ডাক্তার নন।

‘‘ওঁর তো সেলুন ছিল, নিজেও ক্ষৌরকার’’, বছর আটান্নর প্রিয়লালকে এ ভাবেই মনে রেখেছেন পলাশফুলির প্রবীণেরা। জানাচ্ছেন, বছর তিরিশ আগে গ্রামের সে সেলুন বন্ধ হয়। তবে পাড়ার কিছু লোক বলেছেন, ‘‘উনি ফিজিওথেরাপি করেন। কাটোয়া, কলকাতায় চেম্বার।’’

আরও পড়ুন: ইউনানি ডিগ্রি নিয়ে জরুরি বিভাগের ডাক্তারি

খবর রটতেই প্রশ্নের মুখে পড়েন কাটোয়ার আদর্শপল্লির গৌতম ঘোষও (কমল)। নামের পাশে বছর সাতেক ডাক্তার লিখছেন। তবে ঘিরে ধরতেই জনতার কাছে কবুল করেন, বাণিজ্যে স্নাতক তিনি। আগে মুদির দোকান ছিল। পরে ফিজিওথেরাপিতে ডিপ্লোমা করেছেন। কাটোয়া হাসপাতালে কাজও করেছেন। যদিও হাসপাতাল সে দাবি মানেনি।

ক্ষৌরকার আর মুদির দোকানদার ‘ডাক্তার’ হলেন কোন জাদুতে? প্রিয়লাল বলেন, ‘‘রোগীরা তো অভিযোগ করেননি।’’ তা হলে সাইনবোর্ড মোছার দরকার পড়ল কেন? জবাব আসে, ‘‘রাজ্যে যা হচ্ছে।’’ গৌতমও বলছেন, ‘‘চেম্বার চালাতে আর সাহস হচ্ছে না।’’

প্রিয়লাল এবং গৌতমের কাণ্ডের তদন্ত করবে স্বাস্থ্য দফতর। আজ, বৃহস্পতিবার সত্যবান মণ্ডলকেও দেখা করতে বলেছে তারা। এক স্বাস্থ্য-কর্তা জানাচ্ছেন, মেডিক্যাল কাউন্সিল যবে থেকে রাজ্যে জাল ডাক্তারদের অস্তিত্ব মেনেছে, তৎপর হয়ে উঠেছে জনতার একাংশ। মুখেমুখে ঘুরছে, ‘পূর্ব বর্ধমানেই ১৪ জন ‘ডাক্তার’কে নজরে রেখেছে সিআইডি’। খণ্ডঘোষ, বর্ধমান শহরের খোসবাগানে একাধিক ডাক্তার ‘ভুয়ো’ বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ হয়েছে, তার অনেকগুলো রোগীদের করা। ওই স্বাস্থ্য-কর্তার টিপ্পনী, ‘‘দেখা যাচ্ছে, রোগীরাই জাল ডাক্তারদের দাওয়াই দিচ্ছেন।’’

Fake Doctor Investigation West Bengal ডাক্তার
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy