গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
হাই কোর্টের তত্ত্বাবধানে নতুন করে তদন্তের জন্য ইতিমধ্যেই তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। এখন অপেক্ষা, দেশের সর্বোচ্চ আদালত সেই অনুমতি দেবে কি? তবে অনুমতি মেলার পরেও যদি সিবিআইয়ের তদন্তের গতিপ্রকৃতি সন্তোষজনক না হয়, তা হলে অন্য পদক্ষেপ করার কথাও ভাবছে তরুণী চিকিৎসক পড়ুয়ার পরিবার। বৃহস্পতিবার নির্যাতিতার বাবা বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছি। তার পরে কী রকম তদন্ত হচ্ছে, দিন পনেরো দেখব। ঠিকমতো না হলে, আবারও হাই কোর্টের কাছে পুনরায় তদন্তের আবেদন জানাব।”
মৃতার বাবা জানাচ্ছেন, তাঁদের মেয়ের খুন ও ধর্ষণের ঘটনার তদন্তে অসংখ্য অসঙ্গতি রয়েছে। সেগুলির ঠিকমতো তদন্ত না হলে আদালতের কাছে আবেদন করা হবে, ওই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার উপরে কাউকে রেখে নতুন করে নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করা হোক। কিন্তু দেশের সর্বোচ্চ তদন্তকারী সংস্থা তো সিবিআই। তার উপরে আর কোন সংস্থা তদন্ত করবে? নির্যাতিতার বাবার কথায়, “সেটা হাই কোর্ট ঠিক করবে। তবে আমরা আবেদন করব।”
বিষয়টি স্পষ্ট না করলেও জানা যাচ্ছে, প্রয়োজনে এ রাজ্য এবং ভিন্ রাজ্যের দক্ষ পুলিশ আধিকারিকদের নিয়ে ‘সিট’ গঠনের জন্যও আবেদন করতে পারে নির্যাতিতার পরিবার। তাঁদের আইনি লড়াইয়ে সহযোগিতা করা ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টরস’-এর তরফে তমোনাশ চৌধুরী বলেন, “যা দেখা গেল, তাতে এক জনকে অপরাধী বলে চিহ্নিত করে নিয়ে বিচার হল। কিন্তু আমরা চাই, অপরাধের বিচার। তাতে এক নয়, একাধিক অভিযুক্ত বার হবে বলেই আশা করছি। সংগঠিত ওই অপরাধে যুক্ত প্রত্যেকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।”
গত সোমবার শিয়ালদহ আদালত আর জি কর মামলার যে রায় দিয়েছে, তাতে তদন্তে বিভিন্ন অসঙ্গতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। একই সঙ্গে রায়ে এটাও জানানো হয়েছে, পরবর্তী সময়ে আরও তদন্তের জন্য সিবিআই ইতিমধ্যেই ওই নিম্ন আদালতের অনুমতি নিয়ে রেখেছে। সূত্রের খবর, দিন কয়েক আগে আর জি করের বক্ষ রোগ বিভাগের চার জুনিয়র চিকিৎসককে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারীরা। কিন্তু আর জি করের মামলায় যে সমস্ত প্রশ্ন নির্যাতিতার পরিবার ও আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা দীর্ঘ দিন ধরে তুলছেন, প্রায় ছ’মাসেও তার উত্তর কেন খুঁজে পেল না সিবিআই?
নির্যাতিতার বাবা বলেন, “সেটাই তো আমাদেরও প্রশ্ন। তাই, কাকে আর ভরসা করব, বুঝতে পারছি না। তাও লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।” সেই কারণেই নির্যাতিতার পরিজনরা চাইছেন, পরবর্তী তদন্তের গতিপ্রকৃতি হাই কোর্টের নজরে থাকুক। পনেরো দিন অন্তর আদালত সেটি পর্যবেক্ষণ করুক। তাতে তদন্তের গতিপ্রকৃতি সবার কাছে স্পষ্ট হবে। কোথাও কোনও অসঙ্গতি থাকলে, সেটা আদালতকে জানানো যাবে।
এই লক্ষ্যে নিম্ন আদালতে রায়দানের আগেই হাই কোর্টের কাছে ৫৪টি প্রশ্ন-সহ একটি মামলা দায়ের করেছে তরুণী চিকিৎসকের পরিবার। আবেদন করা হয়েছে, সিবিআই ওই প্রশ্নগুলি তদন্তের আওতায় এনে সব কিছু খতিয়ে দেখুক। কিন্তু তাতে ফের গাফিলতি দেখা দিলে পরবর্তী নয়, নতুন করে তদন্তের আবেদন নিয়েই আইনের দরজায় তাঁরা দাঁড়াবেন বলে জানাচ্ছেন নির্যাতিতার বাবা। বললেন, “রাস্তা আর আদালত, এই দু’টি ছাড়া এখন আর কারও কাছে যাওয়ার নেই। আদালতে আইনি লড়াই, আর সেই লড়াইকে জোরদার করতে রাস্তায় আন্দোলন জারি রাখতেই হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy