Advertisement
E-Paper

চুনোপুঁটিরা ধরা পড়লেও যায় আসে না চাঁইদের

প্রাথমিক তদন্তে গোয়েন্দাদের সন্দেহ অন্তত শতাধিক ‘ক্যারিয়র’কে কাজে লাগিয়ে রোজই মায়ানমার সীমান্ত দিয়ে উত্তর পূর্ব ভারত হয়ে ট্রেনে চোরাই সোনা পৌঁছচ্ছে দেশের নানা প্রান্তে।

কিশোর সাহা

শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:০৪
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

পুলিশ ও গোয়েন্দাদের বিভ্রান্ত করতে সোনা পাচারের আদব-কায়দাই পাল্টে ফেলছে চোরাকারবারিরা। সম্প্রতি নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে ধৃত উত্তরপ্রদেশের দুই সন্দেহভাজন সোনা পাচারকারীকে গ্রেফতারের পরে ওই ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছেন কেন্দ্রীয় রাজস্ব বিভাগের গোয়েন্দারা। ধৃতরা কবুল করেছে, অতীতে হাতে গোনা কয়েকজন পাচারের কাজ করলেও ইদানীং ‘ক্যারিয়ার’ বা বহনকারী হিসেবে অনেকেই ওই অন্ধকার দুনিয়ায় ঢুকছেন।

প্রাথমিক তদন্তে গোয়েন্দাদের সন্দেহ অন্তত শতাধিক ‘ক্যারিয়র’কে কাজে লাগিয়ে রোজই মায়ানমার সীমান্ত দিয়ে উত্তর পূর্ব ভারত হয়ে ট্রেনে চোরাই সোনা পৌঁছচ্ছে দেশের নানা প্রান্তে। বিপুল সংখ্যক ক্যারিয়রের মধ্যে ২-৪ জন দু-চার কেজি সোনা সহ ধরা পড়লেও তা তেমন গায়ে লাগছে না মূল চাঁইয়ের। কারণ, ততক্ষণে বাকি ৮০-৯০ জন বিপুল পরিমাণ সোনা নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে পারছে।

এমন যে ঘটছে, তা একান্তে মানছেন কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা বিভাগের অফিসার-কর্মীদের একাংশও। তাঁরা জানান, উত্তরবঙ্গে শিলিগুড়িতে তাঁদের দফতরে সাকুল্যে একটি গাড়ি রয়েছে। একাধিক গাড়ির প্রয়োজন পড়লে ভাড়া নিতে হয়। ৬ জন অফিসার ছাড়া কর্মীর সংখ্যা ১৪ জন। মালদহে শাখা থাকলেও মাত্র ৩ জন অফিসার-কর্মী রয়েছেন সেখানে। ফলে, একদিকে অভিযান চালাতে গেলে আরেক দিক অরক্ষিত হয়ে পড়ে। সেই সুযোগটা কাজে লাগাতেই আইজল, শিলং, গুয়াহাটি, নাগাল্যান্ড থেকে ট্রেনে, বাসে দেদার সোনা পাচার হচ্ছে বলে মানছেন গোয়েন্দারা। তাই মাঝেমধ্যে ২-৪ কেজি সোনা ধরা পড়লেও তাতে এতটুকুও স্বস্তিতে নেই তাঁরা। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বিভাগের এক শীর্ষ অফিসার জানান, গত ৫ বছরে যে পরিমাণ চোরাই সোনা উত্তরবঙ্গে ধরা পড়েছে, তার বহু গুণ পাচার হয়ে গিয়েছে। ওই অফিসার জানান, তাঁরা যতটা ধরেন, তা ‘হিমশৈলের চূড়া’ বললেও কম বলা হয়।

তিনি এটাও জানান, ভারতের বাজারে সোনার যা দাম, দুবাই-সহ নানা এলাকা থেকে মায়ানমার হয়ে যে সোনা ঢোকে, তা তুলনায় কেজিতে ৪-৫ লক্ষ টাকা কম। ফলে, বছরে ১০০০ কেজির কারবারে ২০-২৫ কেজি ধরা পড়লেও কারবারিদের পুষিয়ে যায় বলেও ওই অফিসারের দাবি। আরও সমস্যা রয়েছে গোয়েন্দাদের। তা হল, গোয়েন্দারা সোনা পাচার চক্রের মূল চাঁইকে বা দলে শীর্ষে কারা রয়েছেন, তাঁরা কোথায় বসে ‘অপারেশন’ চালান তা আজও স্পষ্ট ভাবে বার করতে পারেননি। একটা অস্পষ্ট ধারণা গোয়েন্দাদের রয়েছে, দুবাইয়ের এক মাফিয়া ডনের দিকে। কিন্তু, গোয়েন্দাদের আরেক অংশের মতে দাউদ ইব্রাহিমের দলবল অতীতে সোনা পাচার করলেও ইদানীং সেই কারবার থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে। সেই কারণেই ‘ক্যারিয়র’দের ধরলেও অস্বস্তি যাচ্ছে না কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দাদের।

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের নথি অনুযায়ী, গত ৫ বছরে শিলিগুড়ি ও লাগোয়া এলাকায় সোনা পাচারে যুক্ত সন্দেহে অন্তত ৬০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রতি ক্ষেত্রেই ধৃতরা কে বরাত দিয়েছিল তা স্পষ্ট করে জানায়নি।

gold smuggling smuggler smuggle gold শিলিগুড়ি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy