Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

মুখ্যমন্ত্রী এত ছোট ঘরে থাকেন কী করে? মমতার কালীপুজোয় গিয়ে পার্থকে প্রশ্ন রাজ্যপালের

রাজ্যে রাজ্যপালের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই একের পর এক ঘটনায় ধনখড়ের সঙ্গে সংঘাত বেধেছিল রাজ্য সরকারের। সেই আবহ থেকে বেরিয়ে উষ্ণতার বাতাবরণ তৈরির জন্য এ বার রাজ্যপালের তরফে ‘তৎপরতা’ দৃশ্যতই স্পষ্ট ছিল।

মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে রাজ্যপাল। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে রাজ্যপাল। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৯ ১১:৪৯
Share: Save:

প্রত্যাশিত ভাবেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে উষ্ণ অভ্যর্থনা পেলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।

কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কালীপুজোয় রবিবার সন্ধ্যায় সস্ত্রীক যোগ দিলেন রাজ্যপাল। দু’ঘণ্টারও বেশি সময় কাটালেন সেখানে। জানালেন, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির এই পুজোয় এসে তিনি অভিভূত।

রাজ্যে রাজ্যপালের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই একের পর এক ঘটনায় ধনখড়ের সঙ্গে সংঘাত বেধেছিল রাজ্য সরকারের। সেই আবহ থেকে বেরিয়ে উষ্ণতার বাতাবরণ তৈরির জন্য এ বার রাজ্যপালের তরফে ‘তৎপরতা’ দৃশ্যতই স্পষ্ট ছিল। ভাইফোঁটায় মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি যেতে চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলেন তিনি। ভাইফোঁটার দিন নিজস্ব ব্যস্ততা থাকায় মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালকে জানিয়েছিলেন, কালীপুজোয় তিনি এলে স্বাগত। সেইমতোই এ দিন সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ সস্ত্রীক রাজ্যপাল পৌঁছলে বাড়ির দরজা থেকে তাঁকে নিজের ঘরে নিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং।

আরও পড়ুন: দীপাবলির দূষণে রাশ কলকাতা ও মুম্বইয়ে, বাজির দাপটে ‘আঁধার’ নামল দিল্লিতে

মমতার যে ছোট ঘর দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী-সহ অনেকেই, সেই তালিকায় এ দিন যুক্ত হয়েছেন রাজ্যপাল ধনখড়ও। পরে পুজোমণ্ডপে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে রাজ্যপাল বলেন, এক জন মুখ্যমন্ত্রী কী ভাবে ও রকম ছোট ঘরে থাকেন?

রাজ্যপালের সঙ্গে সংঘাত-পর্বে পার্থবাবুর উপরে দায়িত্ব ছিল রাজ্য সরকারের তরফে তাঁকে জবাব দেওয়ার। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে এ দিন পার্থবাবুর সঙ্গেই বেশির ভাগ সময় গল্প করে কাটিয়েছেন রাজ্যপাল। তাঁকে জড়িয়ে ধরে বলেছেন, ‘‘আমরা খুব ভাল বন্ধু। এই বন্ধুত্ব যেন বজায় থাকে।’’ মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালকে বলেন, পার্থবাবুই রাজ্যপালের সঙ্গে সরকারের যোগাযোগের সেতু। রাজ্যপাল বলেন, ‘‘আমি তা জানি। উনি আমার বন্ধু। উনি আপনার এক জন দক্ষ এবং সম্ভাবনাময় সহকর্মী।’’ পার্থবাবুকে রাজভবনে যাওয়ার আমন্ত্রণও জানিয়েছেন রাজ্যপাল।

আরও পড়ুন:কুকুরের মতো মরেছে বাগদাদি, বেশ কয়েক ঘণ্টার জল্পনার পর ঘোষণা মার্কিন প্রেসিডেন্টের

কালীঘাটে গিয়ে প্রথমে মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে মিনিট দশেক কাটান রাজ্যপাল। তার পরে রাজ্যপালকে মমতা নিয়ে যান পুজোর মূল মণ্ডপে। সেখানে পার্থবাবু এবং মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশিই রাজ্যপাল সৌজন্য বিনিময় করেন একটি বৃদ্ধাবাসের বাসিন্দাদের সঙ্গে। ওই বৃদ্ধাবাসের আবাসিকেরা প্রতি বছরই মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কালীপুজোয় যান। পুজোমণ্ডপেই বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের ডিজি বীরেন্দ্র এবং অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের সঙ্গে কথা হয় রাজ্যপালের। মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের কন্যাকে নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন, প্রণামও সারেন।

আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে সস্ত্রীক রাজ্যপাল, উৎসবের সেতু বেয়ে ফিরল গণতান্ত্রিক সৌজন্য

কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মাকে ডেকে কথা বলেন রাজ্যপাল। হর্ষ নেওটিয়া, মায়াঙ্ক জালানদের মতো শিল্পপতিদের সঙ্গেও কথা হয় রাজ্যপালের। তত ক্ষণে পুজো শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রতিমার চক্ষুদানের আরতির পঞ্চপ্রদীপ নিয়ে আমন্ত্রিতদের সামনে ঘোরান মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যপাল সেই প্রদীপের ওম নেন। রাজ্যপাল, অভ্যাগতদের সঙ্গে কথা বলার ফাঁকেই ভোগ রান্নাও করেন মমতা। কিছুক্ষণ পরে নিজেই এসে রাজ্যপালকে চা পরিবেশন করেন। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে সন্ধ্যা থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর নিজের লেখা নানা গান বাজছিল। সেই গান শুনে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সিডি চেয়েছেন রাজ্যপাল। পরে তাঁর মন্তব্য, ‘‘এই পরিবেশে এসে আমি অভিভূত। আমার আর মুখ্যমন্ত্রীর মনোভাব সুন্দর মিলে গিয়েছে। সেটা একই পথে আছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jagdeep Dhankhar Mamata Banerjee Kali Puja 2019
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE