হাসিন জাহানের প্রাক্তন স্বামী সইফুদ্দিন ওরফে বাবু। —নিজস্ব চিত্র।
সংসার ভেঙেছে সেই কবে। দু’জনের জীবনই বয়ে গিয়েছে নতুন খাতে। তবু ‘প্রাক্তনের’ জীবনে ঝড়ের সব খবরই পেয়েছেন বীরভূমের সিউড়ি শহরের ব্যবসায়ী শেখ সইফুদ্দিন ওরফে বাবু। ভারতীয় পেসার মহম্মদ সামির সঙ্গে বিয়ের আগে দশ বছর তাঁর সঙ্গেই ঘর করেছিলেন হাসিন জাহান।
আজ পুরনো কথা মনে পড়ছে সইফুদ্দিনের। হাসিনেরই পক্ষ নিয়ে তিনি বলছেন, ‘‘যে সব অভিযোগ ও তুলেছে, সেগুলো যদি সত্যি হয়, তা হলে শামির শাস্তি অনিবার্য।’’
আর পুলিশি অভিযোগের পাহাড় মাথায় নিয়ে হাসিনের বর্তমান স্বামী শনিবার বলেছেন, ‘‘ভালবাসা থাকলে ঝগড়া হবেই। আমি পরিবারে ফিরতে চাই।’’ শনিবার এবিপি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হাসিনের সব অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দেন শামি।
শুক্রবার যাদবপুরের বাড়িতে গিয়ে শামির বিভিন্ন মেসেজের স্ক্রিনশট এবং অডিও ক্লিপিংস নেন গোয়েন্দারা। শামি দাবি করেছেন, ‘‘ওই অডিও ক্লিপিংসের ফরেন্সিক পরীক্ষা হোক।’’ শনিবার লালবাজারে যান হাসিন। তখন তাঁর বয়ান নেওয়া হয়। গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, আপাতত প্রমাণ জোগাড়ে জোর দিচ্ছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: শোধরালে ভাবব, ‘মিথ্যেবাদী’ শামিকে বার্তা হাসিনের
সব দেখে খারাপই লাগছে সইফুদ্দিনের। পাড়ার মেয়ে হাসিনের সঙ্গে তাঁর আলাপ ২০০০ সালে। পরিবারের অমতে পালিয়ে বিয়ে ২০০২ সালে। পরে দু’বাড়িই মেনে নেয়। ২০০৩-এ বড় মেয়ের জন্ম। তার তিন বছর পরে ছোট মেয়ে হওয়ার পরেই মনোমালিন্য শুরু। কিন্তু কেন?
লালবাজার থেকে ফেরার পথে হাসিন। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
বছর সাঁইত্রিশের সইফুদ্দিনের কথায়, ‘‘হাসিন আরও পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেয়েছিল। মধ্যবিত্ত পরিবার। বাড়ির বৌ বাইরে গিয়ে পড়াশোনা-চাকরি করবে— এটাতে আমার পরিবারের অমত ছিল।’’ অশান্তি ২০১০-এ গড়ায় বিবাহ-বিচ্ছেদে। আদালতের নির্দেশে মেয়েরা চলে যায় মায়ের কাছে।
কলকাতায় চলে আসেন হাসিন। শুরু করেন মডেলিং। এক সময়ে ‘চিয়ারলিডার’-এর কাজ পান। তখনই শামির সঙ্গে পরিচয়। সইফুদ্দিন জানাচ্ছেন, সময়টা ২০১২ সালের শেষ। নতুন সম্পর্কের কথা জেনে তিনি মেয়েদের নিজের কাছে রাখতে চান। সইফুদ্দিনের কথায়, ‘‘সেই প্রস্তাবে হাসিন রাজি হয়েছিল। এর জন্য ওর প্রতি কৃতজ্ঞ।’’ বড় মেয়ে এ বার দশম শ্রেণিতে উঠেছে। ছোট মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে। গত জানুয়ারিতে হাসিনের ইচ্ছেয় ছোট মেয়েকে মায়ের কাছে পাঠান সইফুদ্দিন। সে হাসিনের কাছেই রয়েছে। মেয়েরা কী বলছে? সইফুদ্দিন বললেন, ‘‘বড় জন কিছু বলেনি। ছোটটা এখনও ছোট।’’
সিউড়িতে চালু মনোহারি দোকান সইফুদ্দিনের। বছর ছয়েক আগে আবার বিয়ে করেন। দ্বিতীয় পক্ষে এক ছেলে রয়েছে তাঁর। সন্তান-সূত্রেই হাসিনের সঙ্গে যোগাযোগ একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়নি। রয়েছে সহানুভূতিও। সইফুদ্দিনের কথায়, ‘‘অনেক লড়াই করে এতটা পথ পেরিয়েছে হাসিন। ভাবতে খারাপ লাগছে, আবার একটা লড়াই ওর সামনে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy