Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Balagarh

Balagarh School: তথ্য গোপন করেছেন কেন? বলাগড়ের সেই স্কুল নিয়ে পঞ্চায়েত প্রধানকে তোপ হাই কোর্টের বিচারপতির

কলকাতা হাই কোর্টের নিযুক্ত দুই বিশেষ আধিকারিক গত শনিবার জিরাটের ওই বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন। তাঁরা আদালতে রিপোর্ট জমা দেন।

জিরাটের চর খয়রামারির সেই প্রাথমিক বিদ্যালয়।

জিরাটের চর খয়রামারির সেই প্রাথমিক বিদ্যালয়। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২২ ১৯:০৫
Share: Save:

নদী ভাঙনে তলিয়ে যাওয়ার মুখে হুগলির জিরাটের চরখয়রামারি অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়। মঙ্গলবার তা নিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানকে তোপ দাগলেন হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পাশাপাশি, হুগলি জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান বা তাঁর কোনও প্রতিনিধিকে বুধবার ওই স্কুল পরিদর্শনের জন্য নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।

কলকাতা হাই কোর্ট নিযুক্ত দুই বিশেষ আধিকারিক সুদীপ্ত দাশগুপ্ত এবং বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায় গত শনিবার জিরাটের ওই বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেন। মঙ্গলবার তাঁরা আদালতে রিপোর্ট জমা দেন। আদালত সূত্রে খবর, রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে স্কুলটির অবস্থা খারাপ। স্কুলটি নদীর গ্রাসে চলে যাচ্ছে। জলস্তর বাড়লে বিপদের আশঙ্কা রয়েছে, এমন কথাও রয়েছে রিপোর্টে। পাশাপাশি আরও বলা হয়েছে, স্কুলে একটি খেলার মাঠ এবং রাস্তা ছিল। তা এখন নদীগর্ভে চলে গিয়েছে। ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ওই স্কুলে পঠনপাঠন চালানো ঠিক হবে না বলেও উল্লেখ করা হয়েছে ওই রিপোর্টে।

মঙ্গলবার জিরাটের পঞ্চায়েত প্রধান সুচন্দ্রা রায় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। ওই রিপোর্ট দেখার পর সুচন্দ্রাকে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘‘এর আগে যখন জানতে চাওয়া হয়েছিল তখন তথ্য লুকিয়েছিলেন কেন? স্কুলের মাঠ, রাস্তা নদীগর্ভে চলে গিয়েছে, এটা জানাননি কেন? অনেক তথ্য গোপন করার চেষ্টা করেছেন। দয়া করে এটা করবেন না। আদালত মনে করলে, আপনারা কোনও তথ্য গোপন করতে পারবেন না।’’

এর পর আদালত নির্দেশ দেয়, বুধবার স্কুল ছুটি থাকবে। মিড ডে মিল নিয়ে পড়ুয়ারা বাড়ি চলে যাবেন। কারণ, বুধবার সকাল ৭টার মধ্যে ওই স্কুল পরিদর্শন করবেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান বা তাঁর কোনও প্রতিনিধি। তাঁরা পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন। আপাতত স্কুলটির পঠনপাঠন অন্য জায়গায় হবে বলেও জানিয়েছে আদালত।

জিরাটের ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আরও একটি ঘটনা মঙ্গলবার উঠে আসে আদালতে। উচ্চ আদালত ওই বিদ্যালয়টি পরিদর্শনের জন্য যে বিশেষ আধিকারিক নিয়োগ করেছিলেন, তাঁরা লক্ষ করেন, এক জন ছাত্র ‘বিরল চর্মরোগে’ আক্রান্ত। তাঁরা জানতে চান, শিশুটির অবস্থা এমন কেন? চিকিৎসা করানো হচ্ছে না কেন? তাঁদের দাবি, সেই সময় ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘এটা পুরনো অসুখ। কিছু হবে না।’’ ওই পড়ুয়ার সহপাঠীরা জানান, যে ওই ছাত্রকে স্পর্শ না করতে। এমনটাই দাবি বিশেষ আধিকারিকদের।

আদালত মনে করছে, এতে ছাত্রটির মনের উপর খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। আদালতে উপস্থিত গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে বিচারপতি জানতে চান, ‘‘ওই ছাত্রটির মা লক্ষ্মীর ভান্ডার পান?’’

প্রধান উত্তর দেন, ‘‘জানা নেই।’’

এর পর বিারপতি ভর্ৎসনার সুরে বলেন, ‘‘আপনারা গ্রামে থাকেন কী করতে? শুধু ভোটের সময় প্রচার করার জন্য যান? লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা পান কি না সেটাও জানেন না? আপনি তো প্রধান। ভোটের সময় ঘুরে বেড়ান। পক্ষে বা বিপক্ষে ভোট পেয়েছেন। আপনারা শুধু ভোটের আগেই যান?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আপনাদের মতো ব্যক্তিদের জন্যই সমাজকল্যাণমূলক প্রকল্প ব্যর্থ হয়। যদি এক জন উপকৃতই না হন, তবে কিসের এত প্রচার? কিসের এত ঢক্কানিনাদ? ভোটের আগে এক বার দয়া করে যাবেন। আর আদালতে এসে জানাবেন।’’

হুগলি জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানকে বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন, ছাত্রটির চিকিৎসার সব ব্যবস্থা করার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Balagarh Primary School High Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE