Advertisement
E-Paper

হাওড়ায় আবাস প্লাসের সমীক্ষায় বাদ ৩০ শতাংশ

জেলার ১৪ টি ব্লকের মধ্যে সবথেকে বেশি নাম বাদ পড়েছে সাঁকরাইলে। এই ব্লকের তালিকায় ছিল ২২ হাজার নাম। সমীক্ষার সময় নাম বাদ পড়েছে ৫০ শতাংশের। সব থেকে কম নাম বাদ পড়েছে বাগনান-২ ব্লকে।

নরুল আবসার

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২২ ০৯:৪৪
আবাস প্লাসে বাড়ি পাওয়ার যোগ্য বিবেচিত হয়েছেন ১ লক্ষ ২৮ হাজার ৮০০ জন। জেলার ১৪ টি ব্লকের মধ্যে সবথেকে বেশি নাম বাদ পড়েছে সাঁকরাইলে।

আবাস প্লাসে বাড়ি পাওয়ার যোগ্য বিবেচিত হয়েছেন ১ লক্ষ ২৮ হাজার ৮০০ জন। জেলার ১৪ টি ব্লকের মধ্যে সবথেকে বেশি নাম বাদ পড়েছে সাঁকরাইলে। —ফাইল ছবি

আবাস প্লাসের সমীক্ষার কাজ মোটামুটি শেষ হয়েছে হাওড়া জেলায়। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রাথমিক তালিকায় থাকা প্রায় ৩০ শতাংশ উপভোক্তার নাম বাদ গিয়েছে। ২০১৮ সালের তালিকায় নাম ছিল মোট ১ লক্ষ ৮৪ হাজার জনের। তার মধ্যে আবাস প্লাসে বাড়ি পাওয়ার যোগ্য বিবেচিত হয়েছেন ১ লক্ষ ২৮ হাজার ৮০০ জন। জেলার ১৪ টি ব্লকের মধ্যে সবথেকে বেশি নাম বাদ পড়েছে সাঁকরাইলে। এই ব্লকের তালিকায় ছিল ২২ হাজার নাম। সমীক্ষার সময় নাম বাদ পড়েছে ৫০ শতাংশের। সব থেকে কম নাম বাদ পড়েছে বাগনান-২ ব্লকে। এখানে তালিকায় নাম ছিল প্রায় তিন হাজার জনের। বাদ পড়েছে ১৩ শতাংশের নাম।

জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা জানান, চূড়ান্ত তালিকা তৈরিতে যেমন দুর্নীতি করা হয়নি তেমনই দেখে নেওয়া হয়েছে যাঁর সত্যিই বাড়ি দরকার তিনি যেন কোনও তুচ্ছ কারণে বঞ্চিত না হন। যাঁদের নাম বাদ পড়েছে তাদের তরফ থেকে কোনওরকম বাধা আসেনি বলেও তাঁর দাবি।

প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, সমীক্ষার ভিত্তিতে নাম চূড়ান্ত করার সময়ে বেশ কয়েকটি শর্ত আরোপ করার কথা বলা হলেও বাস্তবে মূলত দুটি বিষয়ের উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। কারও পাকা বাড়ি থাকলেও সেই বাড়িটি যদি আবাস প্লাসে যেমন বাড়ির কথা বলা হয়েছে তার থেকে নিম্নমানের হয়, তাহলে তালিকা থেকে সেই উপভোক্তার নাম বাদ দেওয়া হয়নি। এছাড়াও দেখে নেওয়া হয়েছে উপভোক্তাদের জব কার্ড আছে কি না এবং সেই জব কার্ডের সাথে আধার যোগ আছে কি না।

ডোমজুড়ে আবার দেখা গিয়েছে অন্য রকমের সমস্যা। সেখানে ২০১৮ সালে যাঁদের নাম তালিকায় উঠেছিল তার ভিত্তিতে অনেকে ধার করে নির্মাণ সামগ্রী কিনে বাড়ি করে ফেলেছেন। এখনসমীক্ষকরা যখন তালিকা ধরে তাঁদের বাড়িতে যান, দেখা যায় বাড়ি হয়ে গিয়েছে। তার ফলে ওই উপভোক্তাদের নাম বাদ হয়েযায়। তাঁরা সমীক্ষকদের কাছে জানান, নাম বাদ পড়লে বিপাকে পড়বেন। ধারে কেনা ইমারতি দ্রব্যেরদাম মেটাতে পারবেন না। তাঁরা বিধায়কের দ্বারস্থও হয়েছিলেন।

এ প্রসঙ্গে ডোমজুড়ের বিধায়ক কল্যাণ ঘোষ বলেন, ‘‘২০১৮ সালের তালিকায় নাম দেখেই বাড়ি করে ফেলেছেন, এমন অনেকে আমার কাছে এসেছিলেন। সমীক্ষায় তাঁদের নাম বিবেচিত হয়নি। আমি তাঁদের জানিয়ে দিয়েছি, এ ভাবে আগেভাগে বাড়ি করে ফেলা তাঁদের উচিত হয়নি। আমরা এ ব্যাপারে কোনও হস্তক্ষেপ করতে পারব না।’’

এই সমীক্ষার ফল জানার পরই শাসকদলের দুর্নীতি নিয়ে ফের সরব হয়েছেন বিরোধীরা। সিপিএম নেতা দিলীপ ঘোষের ক্ষোভ, ‘‘শাসক দলের নেতাদের ইশারা ছাড়া সমীক্ষা করার ক্ষমতা আছে আশাকর্মীদের? প্রকৃত গরিবদের নাম বাদ পড়েছে।’’ ফরওয়ার্ড ব্লকেরও অভিযোগ, সমীক্ষায় বড় দুর্নীতি চলছে। সমীক্ষায় তৃণমূল হস্তক্ষেপ করেছে বলেও তাঁদের অভিযোগ। বিজেপি নেতা অরুণউদয় পালচৌধুরীর কটাক্ষ, ‘‘সমীক্ষার নামে প্রহসন হয়েছে। যাঁদের বাড়ি নেই তাঁদের বাদ দিয়ে শাসক দলের অনুগতদের নাম ঢোকানো হয়েছে।’’

অভিযোগ অবশ্য মানতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব। হাওড়া গ্রামীণ জেলা তৃণমূলের সভাপতি অরুণাভ সেন বলেন, ‘‘মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক খুইয়ে বিরোধীরা কাগুজে বাঘ হয়ে রাজ্য সরকারের মিথ্যা সমালোচনায় মেতেছেন। মুখ্যমন্ত্রী বারবার নির্দেশ দিয়েছেন, সমীক্ষার সময়ে প্রশাসনই যা করার করবে। আমাদের দল এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবে না। আমরা নেই নির্দেশ মেনে এ ব্যাপারে দূরেই ছিলাম। এই সমীক্ষা দুর্নীতিমুক্ত।’’

Pradhan Mantri Aawas Yojna survey PMAY
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy