সামনে বার্ষিক পরীক্ষা তার আগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মোবাইল নিয়ে বসে থাকায় মা বকাবকি করেছিলেন। বিকেলে মা ঘুমিয়ে পড়তেই তাঁর ঘরের দরজায় বাইরে থেকে হুড়কো টেনে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া কৌশানী মুখোপাধ্যায়। সোমবার রাত পর্যন্ত ওই নাবালিকাকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে চন্দননগর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে পরিবার। যে হেতু ওই ছাত্রী নাবালিকা, তাই একটি অপহরণের মামলাও রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, চন্দননগর শহরের ছবিঘরের বাসিন্দা কনক ও ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের মেয়ে কৌশানী। তারা দুই ভাই-বোন। চন্দননগর সেন্ট জোসেফ কনভেন্টের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী কৌশানী। সোমবার স্কুলে না যাওয়ায় বাড়িতেই ছিল সে। ইন্দ্রাণীর অভিযোগ, স্কুলে না গিয়ে তাঁর মেয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মোবাইল ঘাঁটছিল। তা দেখে তিনি বকাবকি করেন। সামনে পরীক্ষা পড়াশোনা না করে মোবাইল ঘাঁটছে দেখে তার হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নেন মা। এর পরে মা ঘুমিয়ে পড়লে বিকেলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় ওই ছাত্রী। যাওয়ার আগে মা যে ঘরে শুয়ে ছিলেন সেই ঘর বাইরে থেকে আটকে দিয়ে যায়। চন্দননগর শহরে সর্বত্র খোঁজ খবর করেও রাত পর্যন্ত কৌশানীর সন্ধান মেলেনি। এর পর কনক তাঁর ছেলেকে নিয়ে গিয়ে চন্দননগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। যে হেতু ওই ছাত্রী নাবালিকা, তাই পুলিশ একটি অপহরণের মামলাও রুজু করেছে।
আরও পড়ুন:
তদন্ত নেমে পুলিশ শহরের বিভিন্ন জায়গার সিসিটিভি ক্যামেরা খতিয়ে দেখছে। পাশাপাশি, ছাত্রীর দাদাকে নিয়ে চন্দননগরের অলিগলি খুঁজে দেখা হয়েছে। ট্রেনে করে কোথাও চলে যেতে পারে কি না তা অনুমান করে জিআরপিকে নিখোঁজের খবর জানানো হয়েছে। ছাত্রীর কাছে যে হেতু মোবাইল নেই তাই তার অবস্থান বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে পুলিশের। কৌশানীর বন্ধুদের সঙ্গেও যোগাযোগ করে তার খবর জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
ইন্দ্রাণী বলেন, “সামনে ফাইনাল পরীক্ষা। বাড়িতে শুধু মোবাইল নিয়ে বসে থাকে মেয়ে। পড়াশোনায় অমনোযোগী হয়ে যায়। তা নিয়ে একটু বকেছিলাম। মোবাইল কেড়ে নিয়েছিলাম। তার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল। কোথায় গেল বুঝে উঠতে পারছি না। ওর বন্ধুদের জিজ্ঞাসা করেছি কেউ বলতে পারছে না। আমার স্বামী আর ছেলে গোটা চন্দননগর খুঁজে কোথাও পায়নি। তাই থানায় অভিযোগ করেছে।”
কনক বলেন, “এক সপ্তাহ পর পরীক্ষা। স্কুলে না গিয়ে মোবাইল দেখছিল তাই আমিও বলেছিলাম বই সব ফেলে দেব। তার পর দুপুরে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া হল। আমি বিকেলে বেরিয়েছিলাম কেনাকাটা করতে। দোতলায় ছেলে ছিল। সে নীচে নেমে দেখে দরজা খোলা।”