E-Paper

একশো ছুঁইছুঁই বৃদ্ধের বুকে বসল পেসমেকার

বৃদ্ধের বাড়ির লোকেরা জানান, মঙ্গলবার বাড়িতে জ্ঞান হারান বাসুদেব। বৈদ্যবাটীতে পারিবারিক চিকিৎসক দেবত্র বসুর কাছে আনা হলে তিনি হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দেখাতে বলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:২৬
বাসুদেব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে চিকিৎসক ও নার্সরা।

বাসুদেব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে চিকিৎসক ও নার্সরা। —নিজস্ব চিত্র।

কয়েক মাস পরেই ১০০ বছরে পা দেবেন পুরশুড়ার ডিহিবাতপুর গ্রামের বাসুদেব চট্টোপাধ্যায়। গত শনিবার শ্রীরামপুরের একটি নার্সিংহোমে তাঁর বুকে বসল পেসমেকার। সুস্থ হয়ে সোমবার বাড়ি ফিরলেন। এই বয়সের মানুষের এ হেন সফল অস্ত্রোপচার করে চিকিৎসক থেকে শুরু করে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ সকলেই খুশি। বাসুদেবের আত্মীয়েরা সাধুবাদ দিচ্ছেন চিকিৎসকদের।

বৃদ্ধের বাড়ির লোকেরা জানান, মঙ্গলবার বাড়িতে জ্ঞান হারান বাসুদেব। বৈদ্যবাটীতে পারিবারিক চিকিৎসক দেবত্র বসুর কাছে আনা হলে তিনি হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দেখাতে বলেন। তাঁর পরামর্শেই বাসুদেবকে শ্রীরামপুরের বেল্টিং বাজারের কাছে জিটি রোডের ধারের ওই নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষা করে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায় জানান, হৃদস্পন্দন অনেক কম। দ্রুত অস্থায়ী পেসমেকার বসাতে হবে। বয়সের কারণে পরিবারের লোকেরা রাজি না হলেও চিকিৎসক বোঝানোয় সম্মতি দেন। অস্থায়ী পেসমেকার বসানোর পরে কিছুটা স্থিতিশীল হন বৃদ্ধ। শনিবার স্থায়ী পেসমেকার বসানো হয়।

চিকিৎসক শুভেন্দু বলেন, ‘‘কলকাতায় আধুনিক হাসপাতালে প্রায় দেড়শো রোগীর শরীরে পেসমেকার বসিয়েছি। কিন্তু, এই পরিকাঠামোয় এত বয়সের ব্যক্তির এই প্রথম। পেসমেকার বসানো সব সময়েই ঝুঁকিপূর্ণ। হৃদযন্ত্র কী রকম আচরণ করবে, আমরা জানি না। বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতাও ছিল। আমরা সাধারণত আধুনিক হাসপাতালে ক্যাথল্যাবে পেসমেকার বসাই। রোগী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সুস্থ হয়ে শয্যায় বসেছেন, নাম-ঠিকানা, বয়স বলছেন, এটাই বিরাট পাওনা।’’ এই নার্সিংহোমে ক্যাথল্যাব নেই।

বৃদ্ধের আত্মীয়া এষা চট্টোপাধ্যায় জানান, বাসুদেব রেলকর্মী ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘অস্ত্রোপচারের কথায় প্রথমে ভয় পেয়েছিলাম। চিকিৎসকরা ভরসা দেন। নার্সিংহোমের সকলকে ধন্যবাদ।’’

দেবত্রও এই নার্সিংহোমের সঙ্গে যুক্ত। চিকিৎসক দলে তিনিও ছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘এই বয়সের এক জনকে অস্ত্রোপচারের পরে সুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফিরতে দেখে খুব ভাল লাগছে। এটা দলগত সাফল্য।’’ নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের তরফে অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অর্থের সম্বল থাকলেও বহু রোগীর আত্মীয় অস্থায়ী পেসমেকার বসানোর পরে, বয়সের কারণে স্থায়ী পেসমেকার বসাতে চান না অজ্ঞতার কারণে। এ ক্ষেত্রে রোগীর পরিজনকে বোঝাতে আমরা সক্ষম হয়েছি এবং চিকিৎসকেরা সঠিক ভাবে কাজটা করতে পেরেছেন।’’

হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে একশো ছুঁইছুঁই মানুষটি বললেন, ‘‘খুব ভাল লাগছে। বাড়ি ফিরব।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Serampore Pacemaker

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy