E-Paper

সুরক্ষা ছাড়াই ট্যাঙ্কার সাফাই, বিষাক্ত গ্যাসে মৃত্যু খালাসির

ট্যাঙ্কারের চেম্বার পরিষ্কার করার দিন দুয়েক আগে সেটির চারটি ভাল্‌ভে জমে থাকা বিষাক্ত গ্যাস বার করে দিতে হয়। কিন্তু অভিযোগ, সেই নিয়ম মানেননি ট্যাঙ্কারের মালিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৩ ০৬:৪৬
A Photograph representing a dead body

কটি তেলের ট্যাঙ্কার পরিষ্কার করতে নেমে বিষাক্ত গ্যাসে এ ভাবেই মৃত্যুহল এক তরুণের। প্রতীকী ছবি।

মালিকের নির্দেশ মতো ট্যাঙ্কার পরিষ্কার করতে নেমেছিলেন তাঁরা। কিন্তু ছিল না ন্যূনতম সুরক্ষা-ব্যবস্থা। আর তারই মাসুল দিতেহল এক জনের প্রাণের বিনিময়ে। রবিবার সকালে হাওড়ার আন্দুলের মৌড়িগ্রামে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন (আইওসি)-এর একটি তেলের ট্যাঙ্কার পরিষ্কার করতে নেমে বিষাক্ত গ্যাসে এ ভাবেই মৃত্যুহল এক তরুণের। তাঁর নাম সুমিত সাউ (১৮)। বাড়ি আন্দুলের পঞ্চাননতলায়। তিনি ছিলেন ওই ট্যাঙ্কারের খালাসি। গ্যাসের তীব্র গন্ধে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন ট্যাঙ্কারটির চালক বুবাই সাউ। তিনি সঙ্কটজনক অবস্থায় এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

নিয়ম অনুযায়ী, ট্যাঙ্কারের চেম্বার পরিষ্কার করার দিন দুয়েক আগে সেটির চারটি ভাল্‌ভে জমে থাকা বিষাক্ত গ্যাস বার করে দিতে হয়। কিন্তু অভিযোগ, সেই নিয়ম মানেননি ট্যাঙ্কারের মালিক। উপরন্তু গ্যাস-মুখোশ বা অক্সিজেনের ব্যবস্থা না করেই তিনি ওই দুই শ্রমিককে ট্যাঙ্কারের ভিতরে নামিয়েছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনারপর থেকে পলাতক ট্যাঙ্কারের মালিক। তাঁর খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে মালিকের নির্দেশে ট্যাঙ্কার পরিষ্কার করতে সেটির ভিতরে ঢুকেছিলেন বুবাই ও সুমিত। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে ছিল না গ্যাস-মুখোশ, অক্সিজেনের ব্যবস্থাও। ট্যাঙ্কারের ভিতরে ঢোকার কিছু ক্ষণের মধ্যেই বিষাক্ত গ্যাসে দমবন্ধ হয়ে মারা যান সুমিত। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় বুবাইকে উদ্ধার করে এসএসকেএমে পাঠানো হয়।

হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক জানান, ট্যাঙ্কারের ভিতরে পেট্রল বা ডিজ়েল যাতে ঠিক থাকে, তার জন্য সেটির ভাল্‌ভের মধ্যে এক ধরনের বিষাক্ত গ্যাস রাখতে হয়। ট্যাঙ্কার পরিষ্কার করার আগে ভাল্‌ভ থেকে ওই বিষাক্ত গ্যাস বার করে দেওয়াই নিয়ম। কিন্তু অভিযোগ, ট্যাঙ্কারের মালিক সেই সব নিয়মের কোনওটিই মানেননি। এর উপরে তিনি চালক ও খালাসিকে কোনও সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই ট্যাঙ্কার পরিষ্কার করার নির্দেশ দেন।

এ দিনের ঘটনার পরে মৃত যুবকের এক বন্ধু সৈকত নস্কর বলেন, ‘‘প্রথমে ট্যাঙ্কের ভিতরে পরিষ্কার করতে নেমেছিলেন বুবাই। কিন্তু তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন দেখে তাঁকে উদ্ধার করতে সুমিত ভিতরে ঢোকেন। এর পরে তিনিও অসুস্থ হয়ে পড়েন। বুবাই কোনও রকমে বাইরে বেরিয়ে আসতে পারলেও বিষাক্ত গ্যাসে সুমিতের দম আটকে যায়। ও আর বেরোতে পারেনি।’’

এই ঘটনা প্রসঙ্গে হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘গাফিলতি নিয়ে কেউঅভিযোগ দায়ের করলে তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।ট্যাঙ্কারের মালিককেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Death Tank Man Howrah

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy