অভিজ্ঞতার কথা শোনাচ্ছেন রূপা (লাল পোশাক)। ছবি: তাপস ঘোষ।
তীব্র গরমে তিষ্ঠনোর উপায় নেই। এই পরিস্থিতিতে বাড়ির বৌকে টানা ১২ দিন ধরে তিনতলার চিলেকোঠায় আটকে রাখার অভিযোগ উঠল স্বামী-শাশুড়ির বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে হুগলির ব্যান্ডেলের দক্ষিণ বলাগড়ে। পাকাপাকি ভাবে বাপের বাড়িতে চলে যাবেন, এই মর্মে মুচলেকা দেওয়ার পরে বন্দিদশা থেকে মুক্তি মিলেছে বলে অভিযোগ রূপা চট্টোপাধ্যায় নামে বছর পঁয়ত্রিশের ওই মহিলার। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের আধিকারিকেরা জানান, রূপার বাপের বাড়ির তরফে চুঁচুড়া থানায় লিখিত অভিযোগ হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। পেশায় গৃহশিক্ষক, স্বামী সৌভিক চট্টোপাধ্যায়কে আটক করেছে পুলিশ। তিনি বা তাঁর মা অবশ্য অভিযোগ মানেননি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর পনেরো আগে সিঙ্গুরের বেড়াবেড়ির বাসিন্দা রূপার সঙ্গে সৌভিকের বিয়ে হয়। তাঁদের বছর দশেকের ছেলে আছে। বিয়ের বছর চারেক পরে সৌভিকের বাবা মারা যান। অভিযোগ, এরপর থেকেই স্বামী এবং শাশুড়ি গৌরী মানসিক অত্যাচার শুরু করেন। নানা অছিলায় ঘরে আটকে রাখাহত রূপাকে। সম্প্রতি অত্যাচারআরও বাড়ে।
রূপার দাবি, সংসার ভেঙে যাওয়ার ভয়ে তিনি বাপের বাড়িতে কিছু বলতেন না। তাঁর অভিযোগ, পাকাপাকি ভাবে বাপের বাড়িতে চলে যেতে হবে, এই চাপ দিয়ে তাঁকে বাড়ির তিন তলায় চিলেকোঠার ঘরে আটকে রাখা হয়েছিল। ১২ দিন পরে, মঙ্গলবার সকালে তিনি স্বামী-শাশুড়ির কথায় রাজি হন। তারপরেই ওই ঘর থেকে তাঁকে বেরোতে দেওয়া হয়। তিনি পাড়া-পড়শিদের বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে তাঁর বাপের বাড়ির লোকেরা চলে আসেন। আসে পুলিশ।
এ দিন দীর্ঘক্ষণ ডাকাডাকির পরে দরজা খুলে বেরিয়ে আসেন অভিযুক্ত মা-ছেলে। পুলিশ দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলে সৌভিককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। রূপা বলেন, ‘‘বছরের পর বছর মুখ বুজেছিলাম। আর সহ্য করতে পারছি না।’’ রূপার বাবা তপন বলেন, ‘‘মেয়েকে বাড়ি নিয়ে যাব। এই পরিস্থিতিতে আর থাকতে হবে না।’’ স্থানীয় বাসিন্দারা রূপার স্বামী-শাশুড়ির কঠোর শাস্তিরদাবি তুলেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy