দুই ঘটনার মধ্যে কাকতালীয় মিল দেখেই তদন্তকারীরা মনে করছেন, এই ডাকাতির পিছনে হয়তো কোনও বিশেষ গ্যাং রয়েছে।
হুগলির ব্যান্ডেলের বিক্রমনগরে গত সপ্তাহে যে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছিল, তার সঙ্গে কিছুটা মিল রয়েছে বৃহস্পতিবার হাওড়ার সাঁকরাইলে ঘটে যাওয়া ডাকাতির ঘটনার। ব্যান্ডেলে যে ভাবে ভিখারি সেজে বাড়িতে ঢুকে ডাকাতি চালানো হয়েছিল, সাঁকরাইলের ঘটনাতেও দুষ্কৃতীরা ভিখারি সেজে জল খেতে চেয়ে ঘরে ঢুকে ডাকাতি চালায়। দুই ঘটনার মধ্যে কাকতালীয় মিল দেখেই তদন্তকারীরা মনে করছেন, এই ডাকাতির পিছনে হয়তো কোনও বিশেষ গ্যাং রয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ চুনাভাটি এলাকার বাসিন্দা সৌরভ নস্করের বাড়িতে ভিখারি সেজে ঢোকে দুষ্কৃতীরা। সৌরভ পেশায় কেবল-টিভি ব্যবসায়ী। পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, সৌরভের বাড়িতে দু’জন এসেছিলেন। তাঁদের এক জন মধ্যবয়সি ও আর এক জন তরুণ। ভিক্ষা চাওয়ার নাম করে তাঁরা বাড়িতে ঢুকে সৌরভের স্ত্রী-র কাছে জল চান। সৌরভের স্ত্রী ওই সময় বাড়িতে একাই ছিলেন। তিনি জল আনতে ভিতরে গেলেই ওই সময় ঘরে ঢুকে বধূর গলায় ছুরি ঠেকিয়ে লুঠপাট চালান দুই দুষ্কৃতী। এর পর রড দিয়েও তাঁর পেটে আঘাত করা হয়। আলমারি থেকে পাঁচ লক্ষ টাকার গয়না, নগদ ৫০ হাজার টাকা, ল্যাপটপ এবং কিছু মূল্যবান সামগ্রী লুঠ করে চম্পট দেন দুষ্কৃতীরা।
সাঁকরাইলের ঘটনা দিনেদুপুরে ঘটলেও ব্যান্ডেলের ঘটনাটি রাতের দিকে ঘটেছিল। রাত ৮টা নাগাদ কলিং বেল শুনে দরজা খুলেছিলেন বিক্রমনগরের বাসিন্দা দেবনারায়ণ দত্ত। দরজা খুলতেই তিনি দেখেন, বাইরে চার জন। তাঁরা জানান, তাঁর ঘর ভাড়া খুঁজছেন। বিজ্ঞাপণ দেখেই এসেছেন। এর পরই ওই চার জনকে ঘরে ডেকে নেন দেবনারায়ণ। চার জনের মধ্যে এক জন জল খেতে চান। জল আনার জন্য গৃহকর্তা ঘুরতেই তাঁর মুখ চেপে ধরে আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকায়। তাঁর স্ত্রী অঞ্জলি দত্তকেও ডেকে নিয়ে এসে হাত-মুখ বেঁধে ফেলে দুষ্কৃতীরা। তার পরই দুষ্কৃতীরা অবাধে লুঠপাট চালায়। আলমারির লকার খুলে নগদ ও সোনার গয়না নিয়ে গিয়েছে বলে জানান অঞ্জলি।
এই দুই ঘটনার মধ্যে আশ্চর্য মিলের কারণেই একটি নির্দিষ্ট গ্যাংয়ের তত্ত্ব বেশি করে ভাবাচ্ছে সাঁকরাইল থানার পুলিশকে। কিন্তু বাড়ির আশপাশে কোনও সিসিটিভি না থাকায় তদন্তে বেশি দূর এগোনো যায়নি বলেই জানা যাচ্ছে। তবে পুলিশ সূত্রে খবর, আশপাশের এলাকায় কোথায় সিসিটিভি রয়েছে, তা দেখা হচ্ছে। সেই ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে চাইছে, ডাকাতির পর কোন রাস্তা দিয়ে চম্পট দিয়েছে দুষ্কৃতীরা।
বৃহস্পতিবারের ডাকাতির ঘটনায় আতঙ্কিত চুনাভাটি এলাকার বাসিন্দারা। সৌরভের দিদা অপর্ণা নস্কর বলেন, ‘‘আমরা ভয়ে ঘরেই থাকতে পারছি না। কী অবস্থায় আছি বোঝাতে পারব না। যা চুরি গিয়েছে, তা নিয়ে আর কী বলব! কিন্তু মেয়েটার উপর অত্যাচার করেছে ওঁরা। আমরা শুধু চাই, দোষীদের সাজা হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy